নিজস্ব সংবাদদাতা: ঘুঘু, পেঁচা, বুলবুলি, পায়রা, শালিক, বাবুই, চড়াই,ডাহুক, মাছরাঙা, কুটুম, ফিঙে পানকৌড়ি,বউ কথা কও, দোয়েল, কোকিল, কাঠঠোকরা, চিল, হরিয়াল…….এভাবেই বলে যায় সোয়েতা। প্রায় দম না নিয়েই যখন বলতে বলতে থামে তখন গুনে দেখা যায় মোট ১১১টি পাখির নাম বলে ফেলেছে সে। আর সময় নিয়েছে ২মিনিট ৩৪সেকেন্ড! আর এতেই ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ড(IBR)য়ে নিজের নাম তুলে নিয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোনা পৌরসভার ৮নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা জয়ন্তীপুরের বাসিন্দা সোয়েতা দত্ত।
১২ই জুলাই, সোমবার রথযাত্রার দিন সোয়েতার বাড়িতে যখন IBR য়ের স্বীকৃতি এসে পৌঁছায় তখন যেন নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছিলেন না সোয়েতার বাবা চন্দ্রকোনা মল্লেশ্বরপুর সারদা বিদ্যাপীঠ হাইস্কুলের গণিতের শিক্ষক অভিজিৎ দত্ত। ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডসের তরফে সোয়েতার জন্য বাড়িতে পৌঁছে যায় মেডেল,বই,শংসাপত্র সহ একাধিক পুরস্কার। সোয়েতার মা সুদেষ্ণা গৃহবধূ আর সোয়েতাকে পড়াশুনা সহ প্রায় নানা বিষয় নিয়ে নিমগ্নতাই তাঁর ধ্যান জ্ঞান। আর সে কারণেই মেয়ের সাফল্য দম্পত্তির জন্য যেন এনে দিয়েছে খুশির পাহাড়।
গত জুন মাসের ১০ তারিখ সোয়েতার যখন ৫ বছর ৪ মাস বয়স সেদিনই তার স্মৃতি শক্তির পরীক্ষা নিয়েছিল ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ড। নাম তুলে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোনা ২ ব্লকের চন্দ্রকোনা পৌরসভার ৮ নং ওয়ার্ড জয়ন্তীপুরের বাড়ি ছোট্ট সোয়েতা।সোমবার রথযাত্রার দিন রথের দিনে ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডসের তরফে পাঠানো পুরষ্কার পেয়ে খুশি সোয়েতা ও তার বাবা মা। সঙ্গে খুশি প্রতিবেশীরাও। পাড়া উজিয়ে তারা দেখতে আসছেন সোয়েতার সাফল্যের স্বীকৃতিকে দেখার জন্য।
চন্দ্রকোনা পৌরসভারই একটি নার্সারী স্কুলে সিনিয়র কেজির ছাত্রী সোয়েতার স্মৃতি শক্তির এই প্রখরতা বাবা-মার নজরে এসেছিল খুব ছোট বেলাতেই। জানা গেছে বাড়ির বারান্দায়, ছাদে এসে বসা নানা রকম পাখিদের নাম বাবা-মা একবার বললেই মনে রেখে দিত সে। তারপর কোনও একদিন হঠাৎ করেই একের পর এক পাখির নাম বলতে শুরু করে সে। দেখা যায় ছ’মাস একবছর আগে যে পাখির নাম বলেছিল তার মা কিংবা বাবা অনায়াসে মনে রেখেছে সে। এভাবেই সে একাধিক পশুপাখির নাম বলে যায় অনর্গল। হারমোনিয়াম রিডে আঙুল ছুঁইয়ে গলায় খেলিয়ে যায় সরগম। গান থেকে কবিতা আবৃত্তি পাঠেও নিজস্ব দক্ষতায় মুগ্ধ করেছে প্রতিবেশীদের।
মেয়ের এই দক্ষতা দেখেই একদিন ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডসে নাম লিখিয়েছিলেন বাবা। প্রাথমিক নিরক্ষনের পর চূড়ান্ত পর্যায়ের জন্য মনোনীত হয়ে যায় সোয়েতা। আর বাকিটা ইতিহাস। এখন আর বাবা মা কিংবা প্রতিবেশীরাই নন, গত ২৪ঘটনায় ছোট্ট এই পৌরশহরে সোয়েতার নাম ছড়িয়ে পড়ার পর জোর আলোচনা এখন তাকে ঘিরেই।