নিউজ ডেস্ক: না, স্থগিত বা পিছিয়ে দেওয়া নয়, সরাসরি বাতিলই করে দেওয়া হল সিবিএসইর দ্বাদশ শ্রেণীর বোর্ড পরীক্ষা। দ্বিতীয় স্ট্রেইনে রক্ষা নেই তার ওপর মহারাস্ট্রে আগমন ঘটেছে করোনার তৃতীয় স্ট্রেইনের।শিশুদের জন্য যা ঝুঁকিপূর্ণ বলে মত বিশেষজ্ঞদের।এরই মধ্যে কেন্দ্রীয় বোর্ডের তরফে জানানো হল, করোনাভাইরাস পরিস্থিতি ঘিরে অনিশ্চয়তা এবং সবপক্ষের আলোচনার ভিত্তিতে এবার দ্বাদশ শ্রেণির বোর্ড পরীক্ষা বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
দীর্ঘদিন ধরেই একটি অংশের তরফে বোর্ড পরীক্ষা বাতিলের দাবি তোলা হচ্ছিল। তবে প্রাথমিকভাবে দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষা নেওয়ার পক্ষেই ছিল কেন্দ্র। সূত্রের তরফে দাবি করা হয়েছিল, অধিকাংশ রাজ্যও পরীক্ষা বাতিলের পক্ষে ছিল না। বরং পশ্চিমবঙ্গের উচ্চ মাধ্যমিকের ধাঁচে ছোটোভাবে পরীক্ষা নেওয়ার পক্ষে ছিল অধিকাংশ রাজ্য।
সিবিএসই এবং দা ইন্ডিয়ান সার্টিফিকেট সেকেন্ডারি এডুকেশনের দ্বাদশ শ্রেণির বোর্ড পরীক্ষা নিয়ে মামলার শুনানিতে বিচারপতি এ এম খানউইলকরের নেতৃত্বাধীন সুপ্রিম কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের তরফে জানানো হয়েছিল, কেন্দ্র যদি বোর্ড পরীক্ষা আয়োজনের ক্ষেত্রে গতবারের নীতি থেকে সরে যায়, তাহলে অতি অবশ্যই ‘স্পষ্ট কারণ’ দর্শাতে হবে।
শীর্ষ আদালতের সেই নির্দেশের পর দ্বাদশ শ্রেণির বোর্ড পরীক্ষা নিয়ে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বৈঠকের পরই পরীক্ষা বাতিলের সিদ্ধান্তের ঘোষণা করে সিবিএসই। কিন্তু তাহলে কীভাবে নম্বর দেওয়া হবে? কেন্দ্রীয় বোর্ডের তরফে জানানো হয়েছে, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে উপযুক্ত পদ্ধতি মেনে পড়ুয়াদের নম্বর দেওয়া হবে। গত বছরের মতো এবারও যদি কোনও পড়ুয়া নিজেদের প্রাপ্ত নম্বরে সন্তুষ্ট না হয়, তাহলে পরীক্ষা দিতে পারবেন। পরিস্থিতি উপযুক্ত হলে সেই পরীক্ষা নেওয়া হবে।
এখন প্রশ্ন হল কোন পথে হাঁটবে বিভিন্ন রাজ্যগুলির উচ্চমাধ্যমিক সংসদ? এ ব্যাপারে এখুনি মন্তব্য করার মত জায়গায় নেই রাজ্যগুলি। যেমন পশ্চিমবঙ্গ উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ হোম সেন্টারেই স্বল্প নম্বরের ভিত্তিতে পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দিয়েছেন হোম সেন্টারে আবশ্যিক বিষয়ের ওপর দেড়ঘন্টার পরীক্ষা নেওয়া হবে এবং জুলাই মাসের শেষে হবে এই পরীক্ষা। সেই মত শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ভ্যাকসিন দেওয়ার কাজ অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে চলছে। কিন্তু প্রশ্ন হল শুধু শিক্ষক শিক্ষিকাদের ভ্যাকসিন নেওয়াই কী যথেষ্ট। যাঁরা পরীক্ষা দিতে আসবেন তাঁদের ভ্যাকসিন নেওয়ার দরকার নেই?
অ্যাডভান্সড সোসাইটি ফর হেডমাস্টার্স এন্ড হেডমিস্ট্রেস্ এর রাজ্য সাধারণ সম্পদক চন্দন কুমার মাইতি বলেছেন,
“জুলাই এর শেষে উচ্চ মাধ্যমিক ও অগাষ্টের দ্বিতীয় সপ্তাহে মাধ্যমিক পরীক্ষা নেওয়ার মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণা কে আমরা স্বাগত জানাই। সাথে সাথে সকল ছাত্র-ছাত্রীর জন্য ভ্যাকসিন দেওয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত অবিলম্বে। বাস-ট্রেনের বিশেষ ব্যবস্থা চালু রাখতে হবে বিদ্যালয়গুলোকে স্যানিটাইজ করা এবং পরীক্ষার্থীদের মাস্ক ও স্যানিটাইজার দেওয়ার বিশেষ ব্যবস্থা রাখতে হবে।” প্রশ্ন হচ্ছে যদি সরকার এই নীতি অনুসরণ করতে চায় তবে এত পড়ুয়াকে ভ্যাকসিন দেওয়া, তাঁদের পরীক্ষা কেন্দ্র যাতায়তের পথ নিরাপদ সম্ভব হবে কী? বিষয়টা নিয়ে এখুনি মুখ খোলার মত জায়গায় নেই কেউ তবে সিবিএসই বোর্ডের এই সিদ্ধান্ত নিশ্চিতভাবেই নতুন করে ভাবাবে উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদকে।