উলুবেড়িয়ায় ট্রেন অবরোধ |
নিজস্ব সংবাদদাতা: অসম ত্রিপুরা মেঘালয়ের পর কার্যত হিংসা ছড়ালো পশ্চিমবঙ্গেও। নাগরিকত্ব আইন বিরোধি অন্দোলনে উত্তপ্ত হয়ে উঠল বাংলার বিভিন্ন প্রান্ত। কোথও কোথাও ছড়াল হিংসাও। এই রাজ্যে কার্যকর হতে দেওয়া হবে না বলে শুক্রবারই জানিয়ে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। একই সঙ্গে তিনি শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন। কিন্তু তারই মধ্যে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গা থেকে একের পর এক অশান্তির খবর আসছে।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
এদিন উলুবেড়িয়ার একদল মানুষ রেল অবরোধ করে। কিন্তু সেই অবরোধ কিছুটা পরেই হিংসাত্মক হয়ে ওঠে। অবরোধে দাঁড়িয়ে পড়া করমণ্ডল এক্সপ্রেসে লক্ষ্য করে ইট, পাথর ছোড়া শুরু হয়। রেলের অফিসের উপরও আক্রমণ হয়। কয়েকজন আহত হয়েছেন বলেও খবর মিলেছে। উলুবেড়িয়া স্টেশনে আটকে রয়েছে কাণ্ডারি এক্সপ্রেস। এছাড়াও বেশ কয়েকটি এক্সপ্রেস ও লোকল ট্রেন আটকে রয়েছে বিভিন্ন স্টেশনে। সব মিলিয়ে দক্ষিণ পূর্ব রেলের হাওড়া থেকে খড়্গপুর অংশে ট্রেন চলাচলা বিপর্যস্ত।
উলুবেড়িয়ায় জাতীয় সড়ক |
দক্ষিণ-পূর্ব রেলের জনসংযোগ আধিকারিক সঞ্জয় ঘোষ জানিয়েছেন, উলুবেড়িয়া স্টেশনে পৌঁছতেই পারছেন না রেলের আধিকারিকরা। রাজ্য সরকারের সাহায্য চাওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি। উলুবেড়িয়া স্টেশনে অবরোধের জন্য দাঁড়িয়ে পড়েছে করমণ্ডল এক্সপ্রেস, কাণ্ডারি এক্সপ্রেস। এছাড়াও ওই শাখার বিভিন্ন স্টেশনে দাঁড়িয়ে পড়েছে ইস্ট-কোস্ট এক্সপ্রেস, তাম্রলিপ্ত, হাওড়া-যশবন্তপুর দুরন্ত এক্সপ্রেস। আটকে রয়েছে বহু লোকাল ট্রেনও। সব মিলিয়ে হাওড়া-খড়্গপুর শাখায় ট্রেন চলাচল পুরোপুরি বন্ধ। সঞ্জয়বাবু জানিয়েছেন, ট্রেনে থাকা যাত্রীরা যাতে নিরাপদে থাকেন তার ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
জানা যাচ্ছে, উলুবেড়িয়া স্টেশনে রেল অবরোধ করেন প্রায় ২০০ থেকে ২৫০ জন বিক্ষোভকারী। দুপুর ৩টে ২২ মিনিট নাগাদ অবরোধ শুরু হয় বলে রেল সূত্রে খবর। এর জেরে বিভিন্ন স্টেশনে দাঁড়িয়ে একাধিক লোকাল ট্রেন। বিভিন্ন স্টেশনে থমকে একাধিক দূরপাল্লার ট্রেনও।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
দক্ষিণ-পূর্ব রেল সূত্রে খবর, এদিনের অবরোধের জেরে আটকে করমণ্ডল এক্সপ্রেস, হাওড়া-দিঘা কাণ্ডারী এক্সপ্রেস, শালিমার-এলটিটি কুরলা এক্সপ্রেস, হায়দরাবাদ-হাওড়া ইস্ট-কোস্ট এক্সপ্রেস, যশবন্তপুর-হাওড়া দুরন্ত এক্সপ্রেস, শালিমার-আদ্রা রাজ্য রানি এক্সপ্রেস, জব্বলপুর-সাঁতারাগাছি হামসফর এক্সপ্রেস। এছাড়াও ১১টি লোকাল ট্রেন বিভিন্ন স্টেশনে আটকে রয়েছে।শুধুই রেল নয়, এদিন উলুবেড়িয়ায় অবরোধ করা হয় ৬নম্বর হাওড়া-মুম্বাই জাতীয় সড়ক। রাস্তায় টায়ার ইত্যাদি ফেলে আগুন লাগানো হয়। ভয়ে থমকে গেছে দুপাশেরই যান চলাচল।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
অন্যদিকে মুর্শিদাবাদের বেলডাঙায় ক্রমশই উত্তাপ বাড়ছে বিক্ষোভে। আন্দোলন ক্রমেই হয়ে উঠছে হিংসাত্মক। এদিন পথ অবরোধ দিয়ে যে বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল তা ক্রমে মারমুখী হয়ে ওঠে। বেলডাঙা থানার উপরেও হামলা হয়েছে। বিক্ষোভ সামলাতে পুলিশ প্রথমে লাঠি চালায়। কিন্তু তাতে কাজ না হলে শূন্যে গুলি ছোড়ে পুলিশ। বেলডাঙায় বিক্ষোভের জেরে লালগোলা-কৃষ্ণনগর শাখাতেও ট্রেন চলাচল বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বিক্ষোভ শুরু হয়েছে মেদিনীপুরের একাধিক জায়গাতেও। তবে হাওড়া ও শিয়ালদহের মেন শাখায় ট্রেন চলাচল এখনও স্বাভাবিক রয়েছে বলে খবর।
মেদিনীপুরে অবরোধ জাতীয় সড়ক |
শুক্রবার দুপুরে ধর্মতলায় একাধিক সংখ্যালঘু সংগঠনের উদ্যোগে মিছিল হয়। সংখ্যালঘু সংগঠনগুলির নেতারা বলেন, কেন্দ্রের বিজেপি সরকার ভারতের মুসলমানদের নিশানা করেছে। এই আইন সরাসরি মুসলমানদের বিরুদ্ধে। সংবিধানের তোয়াক্কা না করেই এই আইন পাশ করানো হয়েছে বলে দাবি করেন তাঁরা। সংগঠনগুলির যৌথ লিফলেটে স্পষ্ট বলা হয়েছে, এই আইন নতুন করে দ্বিজাতি তত্ত্বের ধারণাকে সামনে নিয়ে আসছে। এটা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
আর সেই বিক্ষোভ মিটতে না মিটতেই পার্ক সার্কাসে শুরু হয়ে যায় অবরোধ বিক্ষোভ। রাস্তার মাঝে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় টায়ারে। শুধু কলকাতা নয়। অশান্তির খবর মিলেছে জেলা থেকেও। উলুবেড়িয়া, পশ্চিম মেদিনীপুর, মুর্শিদাবাদ-সহ একাধিক জায়গায় রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন সংখ্যালঘুরা। বেশ কয়েক জায়হায় বিক্ষোভ হিংসাত্মক আকার নিয়েছে বলেও খবর। বিক্ষোভ ছড়িয়েছে উত্তর ২৪পরগনাতে।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
রাজ্যের বিভিন্ন লেখক সাহিত্যিক রাজ্যের মানু্ষের কাছে শান্তি বজায় রাখার আবেদন জানিয়েছেন। কোনও ভাবেই যাতে আন্দোলনের নামে রক্তপাত ও প্রানহানি হয় সে ব্যপারের সনির্বন্ধ অনুরোধ জানিয়েছেন।