Homeএখন খবরবুলবুলের দাপটে রাজ্যে মৃত ৩, ভেঙে পড়েছে হাজার হাজার বাড়ি, বিদ্যুৎ বিছিন্ন...

বুলবুলের দাপটে রাজ্যে মৃত ৩, ভেঙে পড়েছে হাজার হাজার বাড়ি, বিদ্যুৎ বিছিন্ন বহু এলাকা, কাজ করছেনা মোবাইল, উপকূল ছারখার করে বাংলাদেশে চলল ঝড়

নিজস্ব সংবাদদাতা: রাজ্যে এ অবধি বুলবুলের তাণ্ডবে দুই মহিলা সমেত তিনজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। রাজ্যের উপকূলবর্তী এলাকায় হাজার হাজার বাড়ি ভেঙে পড়েছে। বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে পড়ায় দক্ষিন ২৪পরগনা ও পুর্ব মেদিনীপুরের বিস্তীর্ণ এলাকা বিদ্যুৎ বিহীন হয়ে রয়েছে। নেটওয়ার্ক না থাকায় বিকল হয়ে গেছে মোবাইল ফোন। আশার কথা একটাই যে রাজ্য ছেড়ে বুলবুল এখন বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। 

 শনিবার রাতেই কলকাতা শহরের বালিগঞ্জ সিসিএফসি ক্যান্টিনে কাজ করতে আসার পথেই ক্যান্টিনে ঢোকার একটু আগেই গাছ ভেঙে ওপরে পড়ে যাওয়ায় মৃত্যু হয়েছিল শেখ সোহেল নামে ২৮বছরের যুবকের।
                
পরের ঘটনা দুটি ওই দিন রাতেই । বুলবুল ঝড়ের প্রভাবে নন্দীগ্রাম থানার ভেকুটিয়া গ্রামের সুলতা দাস নামে এক ২৬বছরের গৃহবধূর মৃত্যু হয়। সুলতা এবং তাঁর  ক্ষেতমজুর স্বামী বিকাশ রঞ্জন দাস  শনিবার রাতে স্বামী-স্ত্রী এবং দুটো বাচ্চা নিয়ে যখন বিছানায় শুয়ে ছিল সেই সময় বাড়ির পেছনে একটা বড় খিরিশ গাছ তার মাটির বাড়ির উপর ভেঙ্গে পড়ে,

(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
আচমকা কিছু বুঝে ওঠার আগে হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে পুরো বাড়ি এবং সেখানেই চাপা পড়ে সুলতা দাস। প্রতিবেশিরা এসে স্বামী  বাচ্চাকে  বাঁচাতে পারলেও  স্ত্রীকে শেষ রক্ষা করতে পারেননি । স্বামী সেই মুহূর্তে স্থানীয়দের উদ্যোগে বাড়ি থেকে অন্যত্র সরানো হয় এবং তৎক্ষণাৎ হাসপাতালে আনা হলে তাকে মৃত বলে ঘোষণা করে। অন্যদিকে  বুলবুলের দাপটে গাছ ভেঙে পড়ে মৃত্যু হয়েছে বসিরহাটের সসিমা গ্রামে । সসিমা গ্রামে ৪৬বছরের গৃহবধূ রেবা বিশ্বাসও।

(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
শনিবার রাতে বুলবুলের তাণ্ডব ছারখার করে দিয়েছে রাজ্যের উপকূলবর্তী দুই জেলার বিস্তীর্ণ অংশ। রাত যত বেড়েছে তত বেড়েছে ঝড়ের তাণ্ডব। সঙ্গে দমকা হাওয়া সেই তাণ্ডবলীলা আরও কয়েক গুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। বাড়ির টিনের চাল থেকে বড় বড় গাছ সবই এই তাণ্ডবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। নিমেষে সুন্দরবনের বিভিন্ন জনপদ পরিণত হয়েছে ধ্বংসস্তূপে।

(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
বুলবুলের সর্তকতা জারি করেছিল আবহাওয়া দপ্তর। সেইমতো বিভিন্ন রকম প্রস্তুতি নিয়েছিল প্রশাসনের তরফ থেকে। তার সত্ত্বেও আটকানো যায়নি ক্ষয়ক্ষতি। বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে এই ঝড়ের প্রভাবে। গোসাবা ব্লকের কুমিরমারি, সাতজেলিয়া, লাহিরিপুর পাখিরালয়ে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। লাইন দিয়ে রাস্তার ধারে লাগানো সমস্ত  গাছই প্রায় ভেঙে গিয়েছে। সুন্দরবন সংলগ্ন বিভিন্ন দ্বীপ এলাকায় লন্ডভন্ড বহু মাটির বাড়ি। নদীতে থাকা বহু টুরিস্ট নৌকা, ভুটভুটি ও লঞ্চেও চলেছে  ঝড়ের তাণ্ডব।

(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
ভেঙে গিয়েছে সেই সব জলযানগুলি। রাস্তাজুড়ে প্রচুর পরিমাণে গাছ পড়ে থাকার কারণে মানুষের যাতায়াত প্রায় বন্ধ। প্রায় থমকে গিয়েছে সুন্দরবনের তীরবর্তী এলাকার জনজীবন। তার উপর নদীতে খেয়া-পারাপার না হওয়ায় সমস্যা বেড়েছে আরও কয়েকগুণ। শুধু তাই নয় ঝড়ের তাণ্ডব শুরু হতেই এলাকার বিদ্যুৎ পরিস্থিতি একেবারে স্তব্ধ। সুন্দরবনের ক্যানিং, গোসাবা ,বাসন্তী ও জীবনতলা এলাকাতেই প্রায় পাঁচ হাজারের উপর বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে পড়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে ইতিমধ্যে বিদ্যুৎ দপ্তরের বহু কর্মী নেমে পড়েছেন কাজে। তবে পরিষেবা স্বাভাবিক হতে সময় লাগবে বলে বিদুৎ দপ্তর সূত্রে খবর।

(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
গোসাবার বিধায়ক জয়ন্ত নস্কর বলেন, “বহু এলাকায় কয়েক হাজার মাটির বাড়ি পড়ে গিয়েছে। গাছপালা পড়ে পুরো এলাকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। যে সমস্ত মানুষের থাকার জায়গা নেই তাদের যাতে দ্রুত ত্রাণ পৌঁছানো যায় সেই ব্যবস্থা করা হচ্ছে।” ক্যানিং মহকুমার কন্ট্রোল রুম থেকে পরিস্থিতির উপর নজরদারি সারারাত বসে থাকে কাজের তদারকি করেছেন ক্যানিংয়ের বিধায়ক শ্যামল মণ্ডল। তিনি বলেন, “মাতলা নদীর পাড় সংলগ্ন বিভিন্ন এলাকার মানুষদের নিরাপদ আশ্রয়ে রাখা হয়েছে। যতক্ষণ পর্যন্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হয় ততক্ষণ তাঁদের ত্রাণ শিবিরে রাখা হবে।”

(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
অন্যদিকে পুর্ব মেদিনীপুরের দিঘা , রামনগর, কাঁথি, খেজুরি, নন্দীগ্রাম , হলদিয়া সহ জেলার উপকুল বরাবর ৫৮ কিলোমিটার এলাকাও ব্যাপকের তাণ্ডবের শিকার। প্রচুর কাঁচাবাড়ি ভেঙে পড়ে নিরাশ্রয় মানুষজন। গাছপালা আর বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে লন্ডভণ্ড এলাকা। কাজ করছেনা মোবাইল নেট ওয়ার্ক।জেলা ও স্থানীয় প্রশাসন উদ্ধার কার্য চালিয়ে যাচ্ছেন। 

RELATED ARTICLES

Most Popular