বিভূ কানুনগো: করোনা কালে দুই মহৎ উদ্যোগের স্বাক্ষী থাকল কাঁসাই পাড়ের দুই পড়শি মেদিনীপুর আর খড়গপুর। আর এই দুই উদ্যোগে সামিল হল তরুণ ও শিশু কিশোররা। রাজ্য তথা দেশজুড়ে যখন অতিমারির গ্রাসে বিপদজনক হয়ে উঠেছে মানুষের স্বাস্থ্য পরিষেবা তখন সমাজের তরুণতম অংশের এই উদ্যোগ নিশ্চিতভাবেই আশা জাগানোর মত ঘটনা।মঙ্গলবার মেদিনীপুর সদর ব্লকের মহাতাপনগর সংলগ্ন বেলিয়াডিহি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তাদের প্রথম রক্তদান শিবির সংগঠিত করে তাক লাগিয়ে দিয়েছে বেনাডাহি রানীপাটনা আল আমীন ইউথ ফাউন্ডেশন। প্রথম শিবিরেই রক্তদান করেছেন ৬৩ জন রক্তদাতা যার মধ্যে ছিলেন ৯জন তরুনীও।
এই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনটির সভাপতি সেক সহিদুল হক জানিয়েছেন, ” প্রথমবার রক্তদান শিবিরে আমাদের সবচেয়ে বড় পাওনা হল আমরা ২৬ জনকে পেয়েছি যাঁরা জীবনে প্রথম রক্তদান করলেন। যার অর্থ রক্তদান আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হলেন এমন ২৬জন তরুণ তরুণী যাঁরা ভবিষ্যতের জন্য রক্তসঙ্কট পূরণের আধার হয়ে রইলেন।” উদ্যোক্তারা অবশ্য পাশাপাশি আফসোস করেছেন এই কারনে যে তাঁরা ১৫০জনকে রক্তদানে উদ্বুদ্ধ করেছিলেন কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ের অভাবে ৯২জন রক্ত দিতে পারেননি। মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কের তরফে এই রক্ত সংগ্ৰহ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন উদ্যোক্তারা।
এই শিবিরের উদ্বোধক হিসাবে উপস্থিত ছিলেন খড়গপুর গ্রামীনের বিধায়ক তথা মেদিনীপুর খড়গপুর উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান দিনেন রায়। উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সমাজসেবী প্রসেনজিৎ ঘোষ, গনি ইসমাইল মল্লিক, ডঃ আলি বক্স, কৌশর আলি, মুকুল সামন্ত, আনোয়ার হুসেন পাশা সহ একঝাঁক ব্যক্তিত্ব। পুরোপুরি সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকায় সংগঠিত হওয়া এই রক্তদান শিবির প্রশংসা পেয়েছে অতিথি অভ্যাগতদের।
অন্যদিকে খড়গপুর শহরে এদিন করোনা সঙ্কটের যুদ্ধে সামিল হয়েছে একঝাঁক কচিকাঁচার দল। এরা সবাই মাস্টার মাইন্ড চেস একাদেমির ক্ষুদে সদস্য। দাবা খেলে আয় করা ১০হাজার টাকা এরা তুলে দিয়েছে খড়গপুর কোভিড ভলেন্টিয়ারের হাতে। গত ১মাস ধরে রাজ্যের প্রথম বেসরকারি সেফ হোম চালাচ্ছেন এই কোভিড ভলেন্টিয়াররা। অক্সিজেন, ওষুধ,পথ্য ইত্যাদি যাবতীয় পরিষেবা কোভিড আক্রান্তরা পেয়ে থাকেন এই সেফ-হোম থেকে। তাঁদের হাতে এই অর্থ তুলে দেওয়ার অর্থই হল খড়গপুর শহরে করোনা যুদ্ধকে শক্তিশালী করা।
কোভিড ভলেন্টিয়ার নেতৃত্ব সেন্ট জনস আ্যম্বুলেন্স ব্রিগেডের ব্রিগেডিয়ার অসীম নাথ ও ডাঃ শুভম চন্দ্র ও ডাঃ অভিষেক দাসের হাতে এই অর্থ তুলে দিয়েছে স্বস্তিক রায়, শ্রেয়াংশু দাস, প্রিয়াংশু দাস, সেক রাইহান নেহাল। উপস্থিত ছিলেন তাঁদের প্রশিক্ষক শুভম সাহা, তাপস মন্ডল। ছোটদের এই দায়িত্ব ও কর্তব্যবোধকে স্যালুট জানিয়েছেন কোভিড ভলেন্টিয়াররা।