পলাশ খাঁ, গোয়ালতোড় :- বুড়িশোল থেকেই বুড়িসিনীর আবির্ভাব। তাই বুড়িশোল মৌজার অধিষ্ঠাত্রী দেবী হলেন বনদেবী মা বুড়িসিনী। এদিন সাড়ম্বরে গ্রামের অধিষ্ঠাত্রী দেবী বুড়িসিনীর পুজোয় মাতলো এলাকাবাসী। শালবনীর ভাদুতলা সংলগ্ন বুড়িশোলের জাগ্রতা দেবী হলেন বুড়িসিনী। প্রতিবছর ২রা মাঘ জাকজমক ভাবে মায়ের পুজো করা হয়।
পুজো উপলক্ষে আগত ভক্তদের জন্য আয়োজন করা হয় খিঁচুড়ি প্রসাদের। বসে কয়েক ঘন্টার জন্য মেলাও। এবারেও তার অন্যথায় হয়নি। শালবনীর ভাদুতলা পিড়াকাটা রাজ্য সড়কের পাশেই ভাদুতলা থেকে মাত্র পাঁচ কিলোমিটার দুরে এই জাগ্রতা বনদেবী মা বুড়িসিনীর অধিষ্ঠান। জঙ্গলের যেকোনো আপদ বিপদ থেকে মা গ্রামের মানুষ কে রক্ষা করেন এই ধারণা গ্রামবাসীদের।
বুড়িশোল গ্রাম টি ভুঁইয়া সম্প্রাদায়ের গ্রাম। গ্রামের মানুষ জঙ্গল থেকে কাঠ এনে সংসার যাপন করতো। জঙ্গলে বিভিন্ন রকম বিপদের আশঙ্কা ছিল। তাই গ্রামবাসীরা সকলেই ভয়ে ভয়ে থাকতে।শোনা যায় আজ থেকে বহু বছর আগে যখন গ্রামে হাতে গোনা কয়েকটি পরিবারের বসতি ছিল। একদিন দুপুরে গ্রামের বনমালী ভুঁইয়া একটি বট গাছের নীচে বসেছিল দুপুরে। সেই সময় এক বৃদ্ধা একটি কালো পাথর নিয়ে হাঁটতে হাঁটতে এসে হাজির হয় সেই বট গাছে নীচে। যেখানে বনমালী বসেছিল। তারপর সেই বৃদ্ধা গাছের নীচে সেই কালো পাথর টিকে রেখে পাথরের উপর হাত বোলাতে থাকে।
বনমালী বাবু তা দেখে জানতে চায় এটার কারন কি? বৃদ্ধা তখন তাকে বলেন ইনি হলেন এই গ্রামের বনদেবী। সমস্ত বিপদে আপদে রক্ষা করবে গ্রামের মানুষ কে৷ যদি পারিস মায়ের পূজো করবি ভক্তি ভরে৷ দিয়েই বৃদ্ধা অদৃশ্য হয়ে যায়। তারপর সেই পাথরই বনদেবী রূপে পূজিতা হয়ে আসছেন। গ্রামের মানুষের বিশ্বাস দেবী খুবই জাগ্রতা৷ তিনি আপদে বিপদে তাদের রক্ষা করেন৷।
মা বুড়িসিনীর বর্তমান সেবাইত গ্রামেরই মধুসুদন ভুঁইয়া বলেন, মা বুড়িসিনীর কোনো সাকার নেই। হাতি ঘোড়া দিয়ে পুজো হয়। প্রসাদ হিসেবে মদ, চিড়া, বাতাসা দেওয়া হয়। এই পুজো উপলক্ষে পুজোতে আগত ভক্তদের জন্য আয়োজন করা হয়েছিল সারাদিন অন্নভোগ সেবার। বসেছিল মেলা। কয়েক ঘন্টার এই মেলায় অসংখ্য ভক্ত সমাগম ঘটে। চলে পূজার্চনা।