নিজস্ব সংবাদদাতা: মতামত যাই থাকুক না কেন ঝুঁকি নিতে রাজি নয় রাজ্য। কেউ বলছেন করোনার তৃতীয় ঢেউ আরও মারাত্মক প্রথম ও দ্বিতীয়টি থেকে। কেউ বলছেন না, দুর্বল হয়ে পড়েছে করোনা। কেউ বলছেন শিশুরাই তৃতীয় ঢেউয়ের সম্ভাব্য জোরালো আক্রমনের লক্ষ্য আবার কেউ বলছেন, তেমন কোনও প্রমান নেই। বিতর্ক যাই থাকুক না কেন এই বিতর্কের মধ্যে ঢুকে প্রস্তুতি হালকা করতে রাজি নয় রাজ্য বরং সবটাই চূড়ান্ত হবে ধরে নিয়েই তৈরি হচ্ছে রাজ্য। ইতিমধ্যেই রাজ্যের শহরে শহরে যেমন শিশুদের জন্য সেফহোম প্রস্তুত হচ্ছে তেমন ১২বছর কিংবা তাঁর নিচের বয়সী শিশুদের মায়েদের টিকা করনের প্রস্তুতিও জোরালো করা হচ্ছে। এবার রাজ্যের নয়া সংযোজন করোনা আক্রান্ত শিশুদের জন্য ভেন্টিলেটর যুক্ত আ্যম্বুলেন্স যাকে বলা হচ্ছে Paediatric Ambulance।
এই আ্যম্বুলেন্স হচ্ছে ভেন্টিলেটর ব্যবস্থা সহ যাকে এক কথায় বলা যেতে পারে চলমান ভেন্টিলেটর! করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের বিরুদ্ধে লড়াই করতে অ্যাম্বুল্যান্সের মধ্যেই প্রতিস্থাপন করা হচ্ছে ভেন্টিলেটর। শুধু তাই নয় সেই ভেন্টিলেটর মনিটরিং করতে পারেন এমন একজন নার্সও থাকবেন সেই আ্যম্বুলেন্সে। কোনও শিশু যদি করোনার সংক্রমনে তীব্র শ্বাসকষ্ট বা অন্যান্য উপসর্গ শুরু হলে বাড়ি থেকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই যদি ভেন্টিলেটর দরকার হয় তার প্রয়োজনে রাজ্য স্বাস্থ্যদপ্তর জরুরী ভিত্তিতে এই ধরনের আ্যম্বুলেন্স তৈরি করতে শুরু করেছে বলে খবর।
না, শুধু এই টুকুই নয়। কিছু কিছু আ্যম্বুলেন্স আরও বিশেষ সংযোজন থাকতে পারে। সঙ্কটজনক শিশুকে হাসপাতাল অবধি নিরাপদে পৌঁছানোর জন্য চিকিৎসার প্রাথমিক যন্ত্রানুষঙ্গ রাখার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। যেমন
ইনফিউসেন পাম্প, সাকশন মেশিন, হৃদযন্ত্র মনিটর, নেবুলাইজার, অক্সিজেন সিলিন্ডার, জাম্বো, অক্সিমিটার। সঙ্কটজনক শিশুর বাড়ি থেকে হাসপাতাল অবধি যাত্রাপথের যাবতীয় দৈহিক পরিস্থিতির রেকর্ড থাকবে নার্সের কাছে যাতে হাসপাতালে পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গেই ওই আ্যম্বুলেন্স থেকেই চিকিৎসার কাজ শুরু করতে পারেন চিকিৎসক। রাজ্যে এই প্রথম এই ধরনের আ্যম্বুলেন্স ব্যবহার হচ্ছে বলে জানা গেছে।
জানা গেছে এরকমই কয়েক’শ অ্যাম্বুল্যান্স তৈরি করেছে স্বাস্থ্য দপ্তর। কলকাতার পাশাপাশি এমন তেমনই ভেন্টিলেটর যুক্ত অ্যাম্বুল্যান্স পাঠানো হবে জেলা এবং রাজ্যের করোনা হাসপাতালগুলিতেও। বাচ্চার সঙ্গে যাতে তার মাও হাসপাতালে যেতে পারেন তার জন্য এই অ্যাম্বুল্যান্সের মধ্যে থাকবে মায়ের বসার ব্যবস্থা। রাজ্যে প্রথম এমন চলমান ভেন্টিলেটর অ্যাম্বুল্যান্স বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যকর্তারা। শুধু তাই নয় আক্রান্ত শিশুর বাড়িতে পৌঁছনোর পর ওই আ্যম্বুলেন্স থাকা নার্সই প্রাথমিকভাবে শিশুর অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে তাকে করোনা হাসপাতালে অথবা সেফহোমে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেবেন। যাতে একটুও সময় নষ্ট না হয় তাই এই এমন ব্যবস্থা।
শিশুর সঙ্গে তার মায়ের থাকার ব্যবস্থা তো থাকছেই তারই সঙ্গে সরকারের আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত হল আক্রান্ত শিশুদের সঙ্গে যদি বাবা-মাও অসুস্থ হয়ে থাকেন কিংবা শিশুর যদি বাবা-মা কিংবা হাসপাতালে দেখবার মত কেউ না থাকে তবে তাদের দেখভাল করার জন্য হাসপাতালে থাকবেন করোনা জয়ী বা কোভিড ওয়ারিয়ররা। এরজন্য নতুন করে কোভিড ওয়ারিয়র নিয়োগ করবে রাজ্য।