Homeআবহাওয়াBengal Heavy Rain : ঘাটাল, চন্দ্রকোনা, দাসপুরে ২ ডজন সাঁকো জলের তলায়!...

Bengal Heavy Rain : ঘাটাল, চন্দ্রকোনা, দাসপুরে ২ ডজন সাঁকো জলের তলায়! বিপদসীমা অতিক্রম করল শিলাবতী, রূপনারায়ন, দ্বারকেশ্বর

নিজস্ব সংবাদদাতা: ১৮ঘন্টায় ঘাটাল মহকুমায় বৃষ্টি হয়েছে ১৫০মিলিমিটার আর তারই জেরে বিপর্যস্ত পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার এই মহকুমার অন্তর্গত তিনটি থানা এলাকার কয়েকশত গ্রাম। জলের তলায় চলে গিয়েছে ২ডজনের কাছাকাছি সাঁকো। বাঁশের কিংবা কাঠের তৈরি এই সাঁকো গুলি জলের তলায় চলে যাওয়ার ফলে বহু গ্রাম যেমন মহকুমা কিংবা নিকটবর্তী শহর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে তেমনই নিরুপায় হয়ে বহু মানুষকে জীবন হাতে করেই পারাপার করতে হচ্ছে। কোথাও কোথাও যোগাযোগের সবেধন নীলমণি এই সাঁকোগুলিকে বাঁচানোর চেষ্টায় গ্রামবাসীদেরই উদ্যোগ নিতে দেখা গিয়েছে। বিপর্যয় মোকাবিলায় বেশিরভাগ জায়গাতেই পঞ্চায়েত বা স্থানীয় প্রশাসনের অস্তিত্ব নজরে পড়েনি। যদিও কয়েকটি জায়গায় সচেষ্ট পঞ্চায়েত।

ঘাটাল মহকুমা সেচ বিভাগের সহকারী বাস্তুকার সমীর দাস জানিয়েছেন, ঘাটাল মহকুমার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া সমস্ত নদীর জলস্তর বাড়ছে, কোথাও কোথাও তা বিপদসীমা স্পর্শ করেছে ঠিকই কিন্তু নদী বাঁধ গুলি এখনও অবধি নিরাপদেই রয়েছে। সেচদপ্তর নজরে রাখছে পরিস্থিতির ওপর। বুধবার রাতভর যে বৃষ্টি হয়েছিল বৃহস্পতিবার তা খানিক বিরতির পর আবারও দুপুর থেকে বৃষ্টি শুরু হওয়ায় ক্রমশঃ ফুলতে শুরু করেছে এই এলাকার কাঁসাই, শিলাবতী, দ্বারকেশ্বর, রূপনারায়ন, ঝুমি, কেঠিয়া সহ বিভিন্ন শাখানদী এবং খালগুলি।

জলস্তর বিপদসীমার ওপর দিয়ে বইছে চন্দ্রকোনা ২ ব্লকের ভগবন্তপুর ১ নং গ্রাম পঞ্চায়েতের চৈতন্যপুর,ঘোষকিরা ও ধরমপোতা এলাকায় শিলাবতী নদীতে। অবস্থা এতটাই বিপজ্জনক যে এই এলাকার প্রায় ৪টি কাঠের সেতু হয়ে ভেসে গিয়েছে অথবা ভেসে যাওয়ার মুখে। যেমন ভগবন্তপুর ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে লক্ষাধিক টাকা ব্যায় করে চৈতন্যপুর ও ধরমপোতা এলাকায় শিলাবতী নদীর উপর নির্মিত দুটি কাঠের সেতু ভগবন্তপুর ১ ও ভগবান ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের শতাধিক গ্রামকে যুক্ত করেছে পাশ্ববর্তী হুগলি জেলার সাথে। এখানে শিলাবতী নদীর জল এতটাই বেড়েছে যে দুটি কাঠের সেতুর উপর দিয়েই বিপদজনক ভাবে জল বইছে।

বৃহস্পতিবার ওই সেতুর উপর দিয়েই ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করতে দেখা যায় সাইকেল, বাইক সহ নিত্যযাত্রীদের যাতায়াত করতে দেখা গিয়েছে যা কিনা , যেকোনও মুহূর্তে বড়সড় দূর্ঘটনার আশঙ্কা নিয়েই থেকে যাচ্ছে। স্থানীয় মানুষদের বক্তব্য, তাঁদের কাছে অন্য কোনও বিকল্প নেই। প্রতিবছরই বর্ষায় শিলাবতী নদীর জল বাড়লেই এমন চরম দুর্ভোগের শিকার হতে হয় তাঁদের। বন্ধ হয়ে পড়ে যোগাযোগ। মানুষের অভিযোগ দীর্ঘ দিন ধরে একটি কংক্রিট ব্রীজের দাবি জানিয়ে আসলেও তার কোনও সাড়া মেলেনি। সমস্যার কথা স্বীকার করে ভগবন্তপুর ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের উপ প্রধান ইকবাল সরকার জানান,রাতের প্রবল বৃষ্টিতে নদীর জল বাড়ায় পঞ্চায়েত এলাকার চারটি কাঠের সেতুই জলের তলায়,পারাপারে মানুষের ভোগান্তি হচ্ছে।গ্রাম পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে রাত থেকেই লোক লাগিয়ে সেতুগুলি বাঁচানোর চেষ্টা চলছে,কোনও দূর্ঘটনা যাতে না ঘটে তার জন্য নজরদারি চলছে।

এদিকে আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী আরও অন্ততঃ ২৪ঘন্টা ভারী বর্ষনের সম্ভবনা থাকায় আশঙ্কা ও আতঙ্ক বাড়ছে ঘাটাল মহকুমা জুড়ে। মাত্র মাস দুয়েক আগেই ঘূর্ণিঝড় যশের প্রভাবে ভারী বর্ষনের জমা জলের দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে ঘাটাল শহর এবং সংলগ্ন গ্রাম পঞ্চায়েতগুলিকে। আগামী ২৪ঘন্টা একই হারে বৃষ্টি চললে ফের ঘাটালের ১২টি ওয়ার্ড জলমগ্ন হওয়ার আশঙ্কা, নামাতে হতে পারে নৌকা। একই অবস্থা দাসপুর ২ব্লকের। পূর্ব মেদিনীপুর ও হাওড়া লাগোয়া ওই অঞ্চলের রূপনারায়ন, দুর্বাচটি ইত্যাদি ছোটবড় নদী ও খালগুলির জলস্তর বাড়তে থাকায় বিপদ আরও বাড়ার আশঙ্কায় বেশ কয়েকটি গ্রাম।

RELATED ARTICLES

Most Popular