Homeরাজ্যস্বাস্থ্যবিধি মেনে ১৫ জুন থেকে খুলছে বেলুড় মঠ, থাকছে নতুন নিয়ম

স্বাস্থ্যবিধি মেনে ১৫ জুন থেকে খুলছে বেলুড় মঠ, থাকছে নতুন নিয়ম

ওয়েব ডেস্ক : করোনা সংক্রমণের জেরে গত ২৫ শে মার্চ লকডাউন ঘোষণার পর থেকে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল রাজ্যের বিভিন্ন ধর্মীয় স্থান। সেই সময় অন্যান্য মন্দিরের মতো মন্দির বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন বেলুড় মঠ কর্তৃপক্ষও। এরপর ১ লা জুন থেকে বিধিনিষেধ মেনে সরকারের তরফে ধর্মীয় স্থান খোলার অনুমতি দিলেও অনেকেই শুভ দিনক্ষণ মেনে পুনরায় মন্দির খোলার কথা ভাবেন। স্বাস্থ্যবিধি ও সরকারি নির্দেশিকা মেনে অবশেষে প্রায় ৮২ দিন পর আগামী ১৫ জুন থেকে পুনরায় দর্শনার্থীদের জন্য বেলুড় মঠ খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে মঠ খুলে গেলেও আর আগের মতো স্বাধীনভাবে মঠের ভিতর ঘোরাফেরা করতে পারবেন না দর্শনার্থীরা। তাদের সুরক্ষার জন্য মঠ কর্তৃপক্ষের তরফে একগুচ্ছ পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। বুধবার সেই বিষয়ে খতিয়ে দেখে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদল।

মঠ কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে, আগে প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত এবং দুপুর ৩টে থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত মঠ খোলা থাকতো কিন্তু এবার থেকে নিয়ম বদলে সকাল ৯টা থেকে ১১টা এবং বিকেল ৪টে থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত মঠ খোলা থাকবে। পাশাপাশি দর্শনার্থীদের মধ্যে যাতে কোনোভাবেই সংক্রমণ না ছড়ায় সে কথা মাথায় রেখে এবার থেকে মঠে ঢোকার সময়ে থাকছে বেশকিছু বিধিনিষেধ।

কি সেই বিধিনিষেধ? মঠের তরফে মূল প্রবেশপথের বাইরে দর্শনার্থীদের কয়েক মিনিট বসার জন্য প্রায় ৪০ ফুট লম্বা একটি বাঁশের ছাউনি তৈরি করা হয়েছে। সেখানে মিনিট কয়েক জিরিয়ে নিয়ে তবেই মূল প্রবেশপথের সামনে যেতে পারবেন দর্শনার্থীরা। এরপর মূল প্রবেশদ্বারের সামনে থার্মাল স্ক্রিনিং করা হবে। কিন্তু হঠাৎ জিরিয়ে নেওয়ার পর থার্মাল ক্রিনিং এর ব্যবস্থা করা হল কেন?? এই বিষয়ে এক সন্ন্যাসীর জানান, ‘‘রোদে শরীরের তাপমাত্রা কিছু বাড়তে পারে। তাই অস্থায়ী ছাউনিতে জিরিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। শরীরের তাপমাত্রা ৯৯ ডিগ্রি ফারেনহাইটের নীচে থাকলে তবেই তাঁকে ঢুকতে দেওয়া হবে। এছাড়া মূল দ্বারের সামনে স্যানিটাইজারের যন্ত্রের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ভক্তরা যন্ত্রটি পা দিয়ে চাপলেই হাতে পড়বে স্যানিটাইজার। ’’

মূল প্রবেশপথ থেকে জুতো ঘর পর্যন্ত দূরত্ব মেনে মাটিতে গন্ডি কাটা রয়েছে। ভক্তরা সেখানে ৬ ফুট দূরত্ব মেনে ২৫ জন করে ঢুকতে পারবেন। সেখান থেকে নির্দিষ্ট পথ দিয়ে ফের হাত জীবাণুমুক্ত করে মাত্র ১০ জন করে ঢুকতে পারবেন শ্রীরামকৃষ্ণের মন্দিরে। সেখানে পৌঁছে কয়েক মিনিট শুধু দাঁড়িয়ে প্রণাম করার সুযোগ পাবেন। কোনোভাবেই উবু হয়ে বা সাষ্টাঙ্গে প্রণাম করার সুযোগ দেওয়া হবে না। তবে ব্রহ্মানন্দ মন্দির, সারদা মায়ের মন্দির ও স্বামীজির সমাধি মন্দির দর্শন করা গেলেও
আপাতত স্বামীজির ঘর এবং পুরনো মন্দিরে প্রবেশ একেবারেই বন্ধ থাকবে। একই সাথে বন্ধ থাকবে প্রসাদ বিতরণ, আরতি দেখা, গঙ্গায় স্নান সহ প্রেসিডেন্ট মহারাজের দর্শন, প্রণাম, দীক্ষা দান,মিউজিয়াম, পল্লিমঙ্গল, সারদাপীঠ, বুকস্টল প্রভৃতি। সেই সাথে এই মূহুর্তে মঠ পরিদর্শনের ক্ষেত্রে পাওয়া যাবে না হুইলচেয়ার ও ব্যাটারিচালিত গাড়ির পরিষেবাও। শুধুমাত্র মন্দিরগুলিতে দর্শন করারই সুযোগ দেওয়া হবে ভক্তদের।

প্রসঙ্গত, বেলুর মঠের মতোই নানান বিধিনিষেধ মেনে আগামীকাল, অর্থাৎ ১৩ জুন থেকে খুলছে দক্ষিণেশ্বর মন্দির। সেখানেও মন্দির কর্তৃপক্ষের তরফে দর্শনার্থীদের জন্য বেশ কিছু নিয়মকানুন করেছেন। এবার থেকে মন্দিরে ঢুকতে গেলে মাস্ক, গ্লাভস বাধ্যতামূলক। থাকতে হবে স্যানিটাইজার। মন্দিরে ঢোকার আগে হাত জীবাণুমুক্ত করতে হবে। মন্দিরের ভিতর মাত্র ১০ জন করে প্রবেশ করতে হবে। কিন্তু যেভাবে প্রতিদিন রাজ্যে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে সেখানে দাঁড়িয়ে দর্শনার্থীদের ভীড় উপচে পড়লে ধর্মীয় স্থানগুলি কতটা স্বাস্থ্যবিধি মেনে মন্দির খোলা রাখতে পারবেন সেবিষয়ে একটা বড় প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।

RELATED ARTICLES

Most Popular