নিজস্ব সংবাদদাতা: লকডাউন দরিদ্র গরিব পরিবার গুলোকে অর্থনৈতিক ভাবে বিপর্যস্ত করে দিয়েছে। করোনার অভিশাপের চাইতেও বড় অভিশাপ হয়ে এসেছে কর্মহীনতা। শুধুই রেশনে সংসার চলেনা, জীবন যাপনের আরও দরকারি প্রয়োজনীয় চাহিদা মেটানো আজ দুরস্ত। দিন আনি দিন খাই জীবনে আজ যেন মৃত্যুই সম্বল অন্তত সেরকমটাই মনে করে পশ্চিম মেদিনীপুরের বেলদাতে আত্মহত্যা করলেন ৪৮ বছরের এক ব্যক্তি। সোমবার রাতের ঘটনায় হতভম্ব বেলদাবাসী।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে মৃত ব্যক্তির নাম দুর্গাপদ কর স্থানীয় ভাবে তিনি খোকন বলেই পরিচিত। দুর্গাপদ বাসের কনডাকটরের কাজ করতেন। তাঁর ছেলে একটি ছোট খাটো খাবারের দোকান চালাতেন। ৫ জনের সংসারে আয়ের ওই সামান্য উৎসই চলে গিয়েছিল লকডাউনের ফলে। তিন মাস রাস্তায় বাস চলেনি আর নতুন করে দোকান চালু করার মত পুঁজি জোগাড় করে উঠতে পারেননি ছেলে ফলে লকডাউন শিথিল হলেও খোলা2 যায়নি দোকান।
প্রথম দিকে ১৯ দিন তারপর ২১দিন সব স্বভাবিক হয়ে যাবে আর স্বাভাবিক হলেই সঙ্কট কাটিয়ে উঠবেন ভেবে অভাবের সংসারে কিছু ধার দেনা হয়ে যায়। লকডাউনের ফাঁস ক্রমশ পিতপুত্রের গলায় চেপে বসায় সেই ধার শোধ করা হয়ে ওঠেনি ফলে পাওনাদারের চাপও ছিল।ফলে উপায় না পেয়ে বিনা পয়সায় মুক্তির সুলভ পথটাই বেছে নেন দুর্গাপদ এমনটাই দাবি পরিবারের। মৃতের বোন মিতালি মন্ডল জানিয়েছেন অভাব আর পাওনাদারদের তাগাদার জেরে মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন দাদা, তাই এই পথ বেছে নিয়েছেন।
বেলদা শহরের সুভাষপল্লী এলাকার বাসিন্দা দুর্গাপদ বাড়ি থেকে অনতি দূরেই খড়গপুর ভদ্রক শাখার সুভাষপল্লী লেবেলক্রসিং কাছেই ট্রেনের সামনে ঝাঁপ দেন। খবর পেয়েই নিকটবর্তী বেলদা স্টেশন থেকে ছুটে আসেন জিআরপি ও আর পি এফ জওয়ানরা। জিআরপি দেহ উদ্ধার করে একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা দায়ের করেছে। দেহ পাঠানো হয়েছে ময়নাতদন্তের জন্য।