নিউজ ডেস্ক: দিলীপ ঘোষের সভার আগেই রাজনৈতিক সংঘর্ষে আবারও একবার উত্তপ্ত হয়ে উঠল কোচবিহার। পাশাপাশি প্রকাশ্য দিবালোকে গুলি চালানোর ঘটনা ও তাতে এক স্বর্ণ ব্যবসায়ীর মৃত্যুও হয়েছে। ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়েছে রাজার শহরে। ঘটনায় পুলিশি নিস্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে পথ অবরোধ করে বিক্ষভে সামিল হন স্থানীয়রা।
জানা গিতেছে, সিতাই বিধানসভার মেয়ারের দিঘি এলাকায় দু দলের রাজনৈতিক সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে আহত হয়েছেন দুই বিজেপি কর্মী। তাদের মধ্যে একজন গুলি বিদ্ধ হয়েছেন। অভিযোগ তৃণমূলের বিরুদ্ধে। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। আগামী ৮ এপ্রিল সিতাইয়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের জনসভার আগে এই সংঘর্ষের ঘটনায় রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়।
সিতাইয়ের কোনাচাত্রা হাইস্কুলের মাঠে জনসভা করবেন দিলীপ ঘোষ। ইতিমধ্যে সেখানে হেলিপ্যাড তৈরি হয়েছে। কিন্তু জনসভার একদিন আগে সিতাইয়ের মেয়ারের দিঘি এলাকা মঙ্গলবার গভীর রাতে তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। বিজেপির অভিযোগ, তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতিরা এই ঘটনাটি ঘটিয়েছে।
বিজেপির জেলা কমিটির সদস্য তথা স্থানীয় নেতা নারায়ণচন্দ্র বর্মন বলেন, “তণমূলের দুষ্কৃতিরা গতকাল গভীর রাতে মেয়ারের দিঘি এলাকায় আমাদের দলীয় কর্মীদের একাধিক বাড়িতে ভাঙচুর চালায়। বোমাবাজির পাশাপাশি চলে গুলিও। ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়েছেন আমাদের দলীয় কর্মী নিবারণ বর্মন। আরও একজন ছুড়িকাহত হয়েছেন।“ দলের হেভিওয়েট নেতা দিলীপ ঘোষের জনসভার আগে জনগণের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি করতে তৃণমূল এই সন্ত্রাস চালিয়েছে বলেই অভিযোগ করেন তিনি।
অপরদিকে, বুধবার সকালে কোচবিহার পৌরসভার অন্তর্গত ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা প্রাণতোষ সাহা গুলিবিদ্ধ হন। এদিন তিনি তার সোনার দোকানে বসে কাজ করছিলেন। সেই সময় মুখ ঢেকে ২ জন দুষ্কৃতি একটি মোটর বাইকে করে এসে তাকে সামনে থেকে গুলি চালায়। ঘটনায় প্রাণতোষ সাহার মাথায় ও বুকে গুলি লাগে। শব্দ শুনে স্থানীয় বাসিন্দারা ছুটে এলে দুষ্কৃতিরা পালিয়ে যায়। তাকে উদ্ধার করে কোচবিহার এম.জে.এন. মেডিকেল কলেজ এবং হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
তবে ভোটের মুখে প্রকাশ্য দিবালোকে শহরের বুকে এ ধরনের ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। বিক্ষুব্ধ বাসিন্দারা ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে টায়ার জ্বালিয়ে, রাস্তায় বাঁশ ফেলে পথ অবরোধ করেন। ঘটনা স্থলে পুলিশ দেরিতে আসায় পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথর ছোঁড়ে স্থানীয় বাসিন্দারা। পাল্টা স্থানীয় বাসিন্দাদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ লাঠিচার্জ করে এবং বেশ কয়েকটি টিয়ার গ্যাসের শেল ফাটায় পুলিশ বলেও অভিযোগ। এমনকি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ কয়েক জন স্থানীয় বাসিন্দাদের আটকও করেছে ইতিমধ্যেই।
এদিকে এই ঘটনার প্রতিবাদে ও গুলি চালানোর ঘটনায় জড়িত দুষ্কৃতিদের গ্রেফতারের দাবীতে স্থানীয় বাসিন্দাদের সাথে নিয়ে বিজেপি সমর্থকরা কোতোয়ালি থানার সামনে অবস্থান বিক্ষোভে বসেন। সেখানে পৌঁছান কোচবিহার পৌরসভার প্রশাসক তথা সদ্য বিজেপিতে যোগ দেওয়া নেতা ভূষণ সিংও। সব মিলিয়ে দুটি ঘটনার জেরে বুধবার সকাল থেকেই অশান্ত রাজার শহর।