নিজস্ব সংবাদদাতা: ইটের জবাব পাটকেলেই দিল বিজেপি। বৃহস্পতিবার অভিষেক ব্যানার্জীর সংসদীয় ক্ষেত্র ডায়মন্ড হারবারে গিয়ে তৃনমূল সমর্থকদের হামলার মুখে পড়েছিল বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডার কনভয়, ভাঙচুর হয়েছিল তাঁর গাড়িও। ১২ঘন্টা পেরুলো না সেই ঘটনার, রাতেই আক্রান্ত হল অভিষেক ব্যানার্জীর দিল্লির বাসভবন ও সঙ্গে বঙ্গভবনও।
এদিন রাতেই হামলা চালানোর একটি ভিডিও ভাইরাল হয়ে যায়। সেই ভিডিওতে দেখা যায় কয়েকজন যুবক হাতে পোস্টার নিয়ে দিল্লিতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাসভবনের বাইরে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। তাঁর হিন্দিতে স্লোগান দিচ্ছেন, ‘শরম কর অভিষেক , অভিষেক ব্যানার্জী হায় হায়’ (অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, তোমার লজ্জা হওয়া উচিত। অভিষেক ব্যানার্জী তোমাকে ধিক্কার।) এই বিক্ষোভকারীদের বড় অংশই অবশ্য প্রবাসী বাঙালি বলেই জানা গেছে।
একইসঙ্গে এই দিন অভিষেকের বাসভবনের বাইরের দেওয়ালে, নেমপ্লেটে কালি লেপে দিয়েছেন বিক্ষোভকারী ওই যুবকরা। অভিযোগ, সেই বাড়ি লক্ষ্য করে ইটও ছোড়া হয়েছে। একইভাবে তাণ্ডব চালানো হয় দিল্লির চাণক্যপুরীর বঙ্গভবনেও। ঘটনার খবর পেয়ে এদিন রাতেই বঙ্গভবন ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িকে কঠোর নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হয়। মোতায়েন করা হয়েছে সিআইএসএফ জওয়ানদের। জানা গিয়েছে, এই ঘটনায় ২ জনকে গ্রেফতার করেছে দিল্লি পুলিশ।
দিল্লি পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, এদিনের জোড়া হামলার প্রথম ঘটনাটি ঘটে বঙ্গভবনে। রাত ১০টা নাগাদ বঙ্গভবনের সামনে একদল যুবক এসে তৃণমূলের বিরোধীতায় স্লোগান দিতে থাকে। বঙ্গভবনের বাইরের দেওয়ালেও কালো কালি লেপে দেয় তারা, ছোড়া হয় ইট। একই কায়দায় বিক্ষোভ দেখানো হয় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিল্লির বাড়ির বাইরেও। পুলিশের অনুমান, দুটি ঘটনাতেই বিক্ষোভকারীদের একটিই দল জড়িত।
তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বলেন, ‘যারা হামলা চালিয়েছে তারা কোনও রাজনৈতিক দলের পতাকা নিয়ে না এলেও বোঝাই যাচ্ছে যে তারা বিজেপির গুন্ডা। এটাই বিজেপির স্বভাব। এ ঘটনার তীব্র নিন্দা করছি। এ সব করে বাংলা ও বাঙালিকে ঠান্ডা করা যাবে না।’ বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় পাল্টা বলেন, ‘দেশের মানুষ একজন সাংসদের বাড়িতে চুনকালি মাখাচ্ছে, এটা অনেক আগে হওয়া উচিত ছিল বলে আমার মনে হয়। ধর্মের কল বাতাসে নড়ে। নিউটনের তৃতীয় সূত্রের ফলই আগামীদিনে পাবে তৃণমূল।’
তবে এই ইট আর পাটকেলের রাজনীতিতে তটস্থ বাংলার রাজনৈতিক বোদ্ধারা। তাঁদের বক্তব্য, দলের সমর্থক বা কর্মীরা হয়ত আবেগ থেকে কোনও ঘটনা ঘটিয়ে দেন যা রাজনৈতিক শিষ্টাচার বিরোধী। সমস্যা হচ্ছে দলের নেতৃত্ব যখন সেই ঘটনাকে নিন্দা না করেন।বিজেপি সভাপতির কনভয়ে হামলার ঘটনা যেমন তৃনমূল নেতৃত্ব নিন্দা করেননি তেমনি দিল্লির ঘটনায় বাংলার বিজেপি নেতৃত্বও নিন্দা করেননি বরং দুই ক্ষেত্রেই নেতৃত্বের মুখে প্রশ্রয়ের সুর। এই প্রবনতা আগামী দিনে কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে কে জানে?