ওয়েব ডেস্ক : রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিন অনুসারে বর্তমানে রাজ্যে করোনা আক্রাতের সংখ্যা ১৫ হাজার ছুঁইছুঁই।
এর মধ্যে কলকাতার সংক্রমণ সবচেয়ে বেশি হলেও। গত কয়েকদিন ধরে চিন্তা বাড়াচ্ছে উত্তরবঙ্গ। ধীরে ধীরে শিলিগুড়ি-সহ গোটা দার্জিলিং জেলায় ক্রমশ বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। সেকথা মাথায় রেখে সোমবার থেকে শিলিগুড়ি শহরের বিধান মার্কেট যা পর্যটকদের কাছে হংকং মার্কেট নামে পরিচিত, তা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিলেন ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ী সমিতির তরফে জানানো হয়েছে, করোনা সংক্রমণ যাতে না ছড়ায় সে কথা মাথায় রেখে ৩০ জুন পর্যন্ত বন্ধ থাকবে এই মার্কেট।
সূত্রের খবর, বেশ কয়েকদিন আগে শিলিগুড়ির হংকং মার্কেট সংলগ্ন এলাকায় এক ব্যক্তি করোনায় আক্রান্ত হন। খবর ছড়িয়ে পড়তে বাজার কর্তৃপক্ষের তরফে তড়িঘড়ি গোটা বাজার বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এরমধ্যে সোমবার ফের শিলিগুড়িতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে এক বৃদ্ধার। জানা গিয়েছে, বছর ৭২ এর ওই বৃদ্ধা শিলিগুড়ি শহরের আশ্রম পাড়ার বাসিন্দা ছিলেন। বেশ কয়েকদিন আগে প্রচন্ড জ্বর ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে তিনি শিলিগুড়ির কাওয়াখালির করোনা হাসপাতালে ভরতি হন৷ তাঁর লালারসের নমুনা সংগ্রহ করা হলে রিপোর্ট পজিটিভ আসে। এরপর ওই বৃদ্ধার করোনা চিকিৎসা শুরু হলে ক্রমশই তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি শুরু হয় এবং অবশেষে সোমবার তাঁর মৃত্যু হয়।
তবে এখানেই শেষ নয়। ইতিমধ্যেই এই মারণ ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন শিলিগুড়ির মুখ্য প্রশাসক অশোক ভট্টাচার্য (৭২)। বেশ কয়েক মাস যাবত অশোকবাবু মূত্রনালিতে সংক্রমণ ও নিউমোনিয়ায় ভুগছিলেন। কিন্তু তা সত্ত্বেও করোনা পরিস্থিতিতে মানুষকে সচেতন করতে ঘুরে বেরিয়েছেন শহরের বিভিন্ন প্রান্তে। এরপর গত কয়েকদিন আগে জ্বর ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে শিলিগুড়ির বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন অশোকবাবু। এরপর তাঁর লালার পরীক্ষা করা হলে রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। এদিকে জ্বর ও শ্বাসকষ্ট ক্রমশই বাড়ছিল। এরপর দ্বিতীয় বার ফের তাঁর লালারসের নমুনা সংগ্রহ করা হলে তা পজিটিভ আসে। এরপর তাকে তড়িঘড়ি কাওখালির করোনা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, সোমবার তাঁর শারীরিক অবস্থার অনেকটাই উন্নতি হয়েছে।
এদিকে সোমবার শিলিগুড়ি পুরনিগমে আরও ১২ জনের শরীরে করোনা সংক্রমণের হদিশ মিলেছে। এদের মধ্যে ৯ জন পুরুষ ও ৩ জন মহিলা। শিলিগুড়ির মুখ্য প্রশাসক অশোক ভট্টাচার্যের সংক্রমণ ধরা পড়ার পর পুরসভা জীবাণুমুক্ত করার জন্য ৩ দিন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তার সংস্পর্শে আসা প্রত্যেককে ইতিমধ্যেই হোম কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়েছে। ক্রমশ বাড়ছে শিলিগুড়ি-দার্জিলিংয়ের করোনা সংক্রমণ। তা সত্ত্বেও বিন্দুমাত্র সতর্ক নয় মানুষজন। অনেকক্ষেত্রেই মানা হচ্ছে না সামাজিক দূরত্ব। মাস্ক ছাড়াই রাস্তাঘাটে ঘুরে বেড়াচ্ছে মানুষজন। এর জেরে ব্যাপক সংক্রমণের আশঙ্কা করা হচ্ছে।