ওয়েব ডেস্ক : ফের তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষে উত্তপ্ত উত্তর ২৪ পরগণার হালিশহর এলাকা। ভেঙে দেওয়া হয় ব্যারাকপুর লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংয়ের গাড়ি৷ অভিযোগ, দলীয় কর্মসূচিতে যোগ দিতে গিয়ে তার ওপর হামলা চালায় শাসকদলের কর্মী সমর্থকরা, চলে বোমা ও গুলি৷ ঘটানায় অভিযোগের তীর শাসকদলের বিরুদ্ধে। যদিও বিজেপি সাংসদের সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব।
জানা গিয়েছে, সোমবার বিজেপির প্রতিষ্ঠাতা শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের জন্মদিন সে উপলক্ষ্যে প্রতিবছর দলের তরফে বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। কিন্তু এবছর করোনা সংক্রমণের কারণে তা পালনের জন্য ভারচুয়াল সভাই বেছে নেওয়া হয়েছে। ফলে সে কারণেই রবিবার রাতে হালিশহরের বলদেঘাটায় প্রাক্তন উপ-পুরপ্রধান রাজা দত্তের বাড়িতে বৈঠক করছিলেন সাংসদ অর্জুন সিং। অভিযোগ, সে সময় বাইরে রাখা অর্জুন সিংয়ের গাড়ির উপর আচমকা হামলা চালানো হয়। ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে অর্জুন সিংয়ের গাড়ি। মারধোর করা হয় বিজেপি কর্মীদের। এরপর বিজেপি-র তরফে পালটা যুব তৃণমূলের একটি পার্টি অফিসে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। জ্বালিয়ে দেওয়া হয় বেশ কিছু মোটরবাইক। এর জেরে দুপক্ষের হামলা পালটা হামলায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
ঘটনায় বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংয়ের অভিযোগ, রবিবার রাতে দলীয় কর্মীর বাড়িতে বৈঠক চলাকালীন বেশ কিছু তৃণমূলের কর্মী – সমর্থকরা আচমকা তাঁর নিজের গাড়ি ওপর হামলা চালায়। পাশাপাশি আরও তিনটি গাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয়। ঘটনায় পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগও তুলেছেন সাংসদ। তাঁর অভিযোগ, ঘটনাস্থলে পুলিশ থাকলেও কোনোরকম পদক্ষেপ নেয়নি পুলিশ৷ বরং তাঁর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছে, এমনকি অশালীন ভাষায় গালাগাল করা হয়েছে। এদিকে ঘটনায় বিজেপির বিরুদ্ধে পালটা হামলার অভিযোগ তুলেছে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব।
বীজপুর বিধানসভা এলাকার তৃণমূল নেতা সুবোধ অধিকারী পালটা অভিযোগ করে বলেন, অর্জুন সিংয়ের অভিযোগ ভিত্তিহীন বরং তিনি ওই এলাকা দিয়ে আসার সময় বিজেপি কর্মীরা তাঁর উপর হামলা চালায়। সেই সময় স্থানীয়বাসিন্দারা ক্ষিপ্ত হয়ে বিজেপি কর্মীদের গাড়ি ভাঙচুর করে। ঘটনায় উত্তর ২৪ পরগনার তৃণমূল সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের বক্তব্য, ”অর্জুন সিংয়ের ডেরা ভাটপাড়া-হালিশহরে তৃণমূল নতুন করে সংগঠন সাজাচ্ছে। সুবোধকে এখানকার পর্যবেক্ষক হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে। তাতে ভয় পেয়ে অর্জুন এবং বিজেপি কর্মীরা পরিকল্পনা করে এ ধরনের হামলা চালিয়েছে।” এদিকে ঘটনার পর রাতের দিকে বিজেপির তরফে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের বিরুদ্ধে বীজপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। এরপরই বিজেপির তরফে সাংসদ অর্জুন সিংয়ের সুরক্ষা ব্যবস্থা জোরালো করা হয়। এদিকে ঘটনার প্রতিবাদে সোমবার সকাল থেকেই ভাটপাড়া, শ্যামনগর সহ বিজেপি সমর্থকদের তরফে ব্যারাকপুর লোকসভার বিভিন্ন অঞ্চলে অবরোধ করা করা হয়। চলে বিক্ষোভ। পরে ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে।