নিজস্ব সংবাদদাতা: পুলিশের জেরা এড়ানোর জন্য সম্ভাব্য সমস্ত রাস্তা ব্যবহার করেও লাভ হলনা অর্নব গোস্বামীর। বম্বে হাই কোর্টেও সাংবাদিক অর্নবকে গোস্বামীকে জানিয়ে দিল পুলিশের জেরার মুখে বসতেই হবে তাকে। আর স্বাভাবিক ভাবেই রিপাবলিক টিভির মুখ্য সম্পাদককে মুম্বই পুলিশের জেরার মুখোমুখি হতেই হচ্ছে। এমনিতেই অর্নবের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন জায়গায় বেশ কয়েকটি মামলা দায়ের হয়েছে। তার বেশির ভাগই বিভিন্ন উস্কানি ও প্রোরচনামূলক সংবাদ প্রচারের জন্য। বরাবরই সাংবাদিকতার রীতিনীতি বহির্ভূত একপেশে সংবাদ পরিবেশনের কুখ্যাতি রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। এমন কি তাঁর সম্পর্কে ধারনা রয়েছে যে পেড নিউজ পরিবেশন করেন তিনি। সেরকমই একটি মামলা দায়ের হয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। যা এড়ানোর সমস্ত চেষ্টা ব্যর্থ হল অর্নবের।
বান্দ্রা স্টেশনে লকডাউনের দ্বিতীয় পর্বের শুরুতে পরিযায়ী শ্রমিকরা জড়ো হয়েছিলেন। কাতারে কাতারে মানুষকে হঠাতে লাঠিচার্জ করে পুলিশ। সেই ঘটনাকে সাম্প্রদায়িক দৃষ্টিকোণে খবর পেশ করার অভিযোগে মুম্বই পুলিশ অর্ণব গোস্বামীর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয়। সেই মামলাতেই পুলিশি জেরা এড়াতে মামলা ওঠানোর জন্য বম্বে হাই কোর্টে আপিল করেন গোস্বামী। কিন্তু মঙ্গলবার ভিডিও কনফারেন্সিং শুনানিতে সেই আবেদন খারিজ করে হাই কোর্ট নির্দেশ দেয়, ১০ জুন, বুধবার পুলিশের মুখোমুখি হতে হবে গোস্বামীকে।
বান্দ্রার ঘটনায় রিপাবলিক টিভি যে বিতর্কের অনুষ্ঠান সম্প্রচার করেছিল, সেখানে পরিযায়ী শ্রমিকদের ইস্যুকে সাম্প্রদায়িক রং লাগানোর অভিযোগ ওঠে অর্ণব গোস্বামীর বিরুদ্ধে। এরপর মুম্বইয়ের এনএম জোশী থানা এবং পাইধোনী থানায় জোড়া এফআইআর দায়ের হয় গোস্বামীর নামে। প্রায় একমাস আগে পালঘর সাধু হত্যা মামলায় কংগ্রেসের কার্যনির্বাহী সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীর বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙূল তুলেছিলেন অর্ণব গোস্বামী। তখন একাধিক থানায় গোস্বামীর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয়। পুলিশ ১২ ঘণ্টা ধরে তাঁকে তখন জেরা করে।
গত ১৯ মে মামলা মহারাষ্ট্র পুলিশ থেকে সিবিআইকে হস্তান্তর করার জন্য অর্ণব গোস্বামীর আবেদন খারিজ করে দেয় সুপ্রিম কোর্ট। তখন গোস্বামীর আইনজীবী হরিশ সালভে শীর্ষ আদালতকে জানান, একজন তদন্তকারী অফিসার করোনা পজিটিভ। তাই মামলা যেন সত্ত্বর সিবিআইকে হস্তান্তর করা হয়। এদিন বম্বে হাই কোর্টও গোস্বামীর আবেদন খারিজ করে দেয়। ইতিমধ্যে একদিন ভিডিও পোস্ট করে গোস্বামী অভিযোগ করেন, গভীর রাতে তাঁর গাড়িতে হামলা চালিয়েছেন কংগ্রেস সমর্থকরা। তখন গাড়িতে তাঁর স্ত্রীও ছিলেন।
তবে অর্নবের আইনজীবী যখন পুলিশের কাছ থেকে মামলা সিবিআইকে হস্তান্তর করার আবেদন জানায় তখনই অর্নবের আসল মুখোশ উন্মোচিত হয়ে যায় বলে দাবি করা হয়েছিল বিভিন্ন মহল থেকে। অর্নব যেহেতু শাসকদলের ঘেঁষা তাই শাসকের তোতাপাখি বলে অভিহিত সিবিআইয়ের হাতে মামলা চলে গেলে মামলা লঘু করা এবং অর্নবকে সহজেই মুক্তি দেওয়ার পথ প্রশস্ত হতে পরেই অর্নবের আইনজীবীর দাবির তীব্র বিরোধিতা করা হয়। আদালত পুলিশের জেরা মেনে যেমন নিয়েছেন তেমনই কোনও রক্ষা কবচও দেননি অর্নবকে গ্রেপ্তারের বিরুদ্ধে । ফলে অর্নব গ্রেপ্তার হয়ে যেতে পারেন এমন আশঙ্কাও করছেন কেউ কেউ। এখন দেখার কী হতে চলেছে পুলিশি জেরায়।