Homeদেশমানবিকতার নজির!! কুকুরের প্রাণ বাঁচাতে মৃত্যু হল মা ও ২ সন্তানের

মানবিকতার নজির!! কুকুরের প্রাণ বাঁচাতে মৃত্যু হল মা ও ২ সন্তানের

ওয়েব ডেস্ক : দিন কয়েক আগেই কেরালায় একটি গর্ভবতী হাতিকে বাজি ভরা আনারস খাইয়ে খুন করার প্রতিবাদে সরব হয়েছিল দেশবাসী। সাধারণ মানুষের পাশাপাশি হাতিটিকে খুন করায় আবেগে ভেসেছেন বলিউড-টলিউড৷ গর্জে উঠেছিল সোশ্যাল মিডিয়াও। খুনীদের যথাযোগ্য সাজা দেওয়ার আশ্বাসও দিয়েছেন কেরালার মুখ্যমন্ত্রী। এই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতে ফের একটি কুকুরের মুখে টেপ বেঁধে দেওয়ার ভিডিও প্রকাশ পেয়েছিল সোশ্যাল মিডিয়ায়। একদিকে যখন এই ঘটনার প্রতিবাদে সরব হয়েছেন দেশবাসী, সেইসময় পুণেতে রাস্তার এক কুকুরকে বাঁচাতে গিয়ে মৃত্যু হল মা-সহ ছোট্ট দুটি দুধের শিশুর।

মঙ্গলবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে পুণে শহর থেকে ৩৫ কিমি দূরে অষ্টপুর গ্রামের হাভেলি তালুকে। মৃতা মহিলা বছর ৩৩ এর শীতল ভোঁসলে, মেয়ে শ্রুতি ভোঁসলে (৯) ও ছেলে সৌর্য্য ভোঁসলে (৫)। পুণের অস্টপুর গ্রামের বাসিন্দা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছে দেহ তিনটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের উদ্দেশ্যে পাঠানো হয়।

জানা গিয়েছে, দুর্ঘটনার সময় গাড়িটি চালাচ্ছিলেন মৃতার স্বামী সচিন ভোঁসলে (৩৫)। তিনি পেশায় একজন কৃষক। দুর্ঘটনায় ছিটকে পড়ে তাঁর মাথায় ও শরীরে সামান্য চোট লাগে। সচিন জানান, মঙ্গলবার নিজের বাগানের আম দিতে স্ত্রী ও ছেলেমেয়েকে নিয়ে ভ্যান চালিয়ে শ্বশুরবাড়ি দওদ-এর রাহু গ্রামে গিয়েছিলেন। ফেরার পথে রঞ্জনগাঁও -তে অন্যান্য আত্মীয় পরিজনদের বাড়িতেও যান তারা। ফিরতে বেশ খানিকটা রাত হয়। রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ তাঁরা অষ্টপুর পৌঁছান। সেই সময় আচমকা তার ভ্যানের সামনে একটি কুকুর ক্রমশ এগিয়ে আসে। কুকুরটিকে বাঁদিক দিয়ে আসতে দেখে ওকে বাঁচাতে সচিন রাস্তার ডানদিকে ভ্যান নিয়ে যান। কিন্তু কুকুরটিও ফের একই দিকে ক্রমশ দৌঁড়ে আসতে থাকে। সেই সময় সচিন ফের ভ্যানটিকে আরও ডানদিকে নিয়ে যান। সেইসময়ই আচমকা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ভ্যানটি একটি কুয়োয় গিয়ে পড়ে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় স্ত্রী-সহ দুই সন্তানের।

ঘটনায় লোনিকান্ড থানার অফিসার সদাশিভ গায়কোয়াড় জানান, “আচমকাই গাড়ির সামনে চলে আসে একটি কুকুর। চালকের আসনে ছিলেন সচিন। তিনি কুকুরটিকে বাঁচাতে গিয়ে গাড়ির ওপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন। রাস্তার ধারে একটি কুয়োয় ছিটকে পড়ে গাড়িটি। কুয়োর জলেই ডুবে মৃত্যু হয় সচিনের স্ত্রী শীতল ও দুই ছেলেমেয়ের।”

এই ঘটনায় সচিন চাইলেই তার গাড়ীর সামনে এগিয়ে আসা কুকুরটির ওপর গাড়িটি চালিয়ে দিয়ে তার স্ত্রী-ছেলেমেয়েকে বাঁচাতেন পারতেন। কিন্তু না!! সচিন সেটা করেননি। কারণ, তাঁর কাছে অবলা কুকুরটির প্রাণ বাঁচানোটাও সমান দায়িত্বের বলে মনে হয়েছিল। তাই তো তিনি নিজের পরিবারের বিপদের কথা না ভেবে অবলা কুকুরটিকে বাঁচাতে পেরেছেন। এই ঘটনা প্রমাণ করে দিল এই সমাজে শুধু গর্ভবতী হাতি খুনিরাই নয় সচিনের মতো মহান মানবিকতার মানুষরাও বাস করেন।

RELATED ARTICLES

Most Popular