ওয়েব ডেস্ক : প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ অনুযায়ী গত কয়েকদিন আগেই রাজ্যে ‘আমফান’ বিধ্বস্ত জেলা পর্যবেক্ষণে এসেছিলেন কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল। গত দু’দিন ধরে মূলতঃ দুই ২৪ পরগণার বিস্তীর্ণ এলাকার ক্ষয়ক্ষতি পর্যবেক্ষণের পর শনিবার নবান্নে মুখ্যসচিব ও স্বরাষ্ট্রসচিবের সাথে বৈঠকে বসেন কেন্দ্রীয় দল। প্রায় ঘন্টাখানেক বৈঠকের পর এদিন রাজ্যের তরফে পশ্চিমবঙ্গে আমফানে ক্ষয়ক্ষতি পরিমাণ হিসেবে বাবদ ১ লক্ষ আড়াই হাজার কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ দাবি করা হয়।
সূত্রের খবর, শনিবার রাজ্যের বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতির পাশাপাশি আমফান বিপর্যস্ত এলাকায় রাজ্য ‘আমফান’ পরবর্তী কি কি ব্যবস্থা নিয়েছেন সে বিষয়েও আলোচনা হয়। এর বৈঠকেই আমফানের জেরে রাজ্যে ক্ষয়ক্ষতির পরিমান ও আমফান পরবর্তী পরিস্থিতিতে এখনও পর্যন্ত রাজ্য সরকার কী কী ব্যবস্থা নিয়েছে সে সংক্রান্ত একটি রিপোর্ট শনিবার কেন্দ্রীয় দলের হাতে তুলে দেন রাজ্য মুখ্যসচিব রাজীব সিনহা।
রাজ্যের পেশ করা হিসেব অনুযায়ী, ‘আমফান’এ রাজ্যে ২৮,৫৬,০০০ টি বাড়ি আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যার আর্থিক পরিমাণ প্রায় ২৮ হাজার ৫৬০ কোটি টাকা। এছাড়া ১৭ লক্ষ হেক্টর জমিতে চাষের ক্ষতি হয়েছে। আম-লিচুর বাগান এবং পানের বোরোজ নিয়ে প্রায় ২ লাখ ৫০ হাজার ৫৫৬ হেক্টর জমিতে চাষের ক্ষতি হয়েছে৷ ফলে সবমিলিয়ে কৃষিক্ষেত্রে ক্ষতির পরিমাণ ১৫ হাজার ৮৬০ কোটি টাকার বেশি। মৎস্যজীবীদের ৮,০০০ নৌকা নষ্ট হয়ে গিয়েছে, সেই সাথে বিপুল পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে মাছ চাষীদের। ফলে মৎস্যজীবীদের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা।
এছাড়া ঘূর্ণিঝড়ে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১৪ হাজার ৬৪০টি স্কুল এবং ৩০১টি কলেজ। এছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১২ হাজার ৬৭৮টি আইসিডিএস শিক্ষাকেন্দ্র। রাজ্যে গবাদি পশু মারা গিয়েছে প্রায় ২১ লক্ষ ২২ হাজার। নদীবাঁধ ভেঙেছে ২৪৫ কিমি ও সমুদ্র বাঁধ ৪ কিমি। মোট ক্ষয়ক্ষতির পরিমান ১,০২,৪৪২ কোটি টাকা। সবমিলিয়ে মোট ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ১ লক্ষ আড়াই হাজার কোটি টাকা। তবে শুধু গ্রামাঞ্চল নয় শহরাঞ্চলের বিভিন্ন ক্ষয়ক্ষতির হিসেব মিলিয়েই রাজ্যের তরফে এই রিপোর্ট কেন্দ্রীয় দলের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।
সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই দিল্লি উড়ে গিয়েছেন কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল। সোমবারই রাজ্যের দেওয়া রিপোর্ট কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকে জমা দেবেন কেন্দ্রীয় দলের মুখ্য প্রতিনিধি অনুজ শর্মা।