নিউজ ডেস্ক: করোনা হাসপাতালে আবারও বিধ্বংসী আগুন; অগ্নিদগ্ধ হয়ে ১৮ জন করোনা রোগীর মৃত্যু, মৃতের সংখ্যা বৃদ্ধির আশঙ্কা। ঘটনাস্থল গুজরাতের ভারুচ। শুক্রবার মধ্য রাতে এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় রীতিমত আতঙ্কের পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।
জানা যায় এদিন রাত ১ টা নাগাদ আহমেদাবাদ থেকে প্রায় ১৯০ কিমি দূরে ভারুচ-জাম্বুসার হাইরোডের কাছে থাকা করোনা হাসপাতাল, যেটি একটি ট্রাস্ট দ্বারা পরিচালিত, সেখানে আচমকাই আগুন লেগে যায়। ভারুচের পুলিশ সুপার রাজেন্দ্রাসীন চূড়াসামা জানিয়েছেন, হাসপাতালের আইসিইউ-তে আগুন লেগে বিপত্তি। জানা গিয়েছে এই দুর্ঘটনার সময় ৫০ জনের বেশি রোগী সেখানে ভর্তি ছিলেন।
সংবাদ সংস্থা পিটিআই এর বরাত দিয়ে পুলিশ এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, সকাল ৬ টা ৩০ নাগাদ গণনা করতে গিয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়ায় ১৮ জন। পুলিশ সুপার রাজেন্দ্রাসীন চূড়াসামা জানান, ১২ জন রোগীর করোনা ওয়ার্ডেই আগুনে ঝলসে ও দম বন্ধ হয়ে মৃত্যু হয়। বাকি ৬ জন ওয়েলফেয়ার হাসপাতালেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছেন, না অন্যত্র স্থানান্তরিত করার সময় প্রারণ হারিয়েছেন সেটা স্পষ্ট নয়। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলেই আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এদিন আগুন লাগার ঘটনা নজরে আসতেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দমকলে খবর দেয়। কিছুক্ষণের মধ্যেই ঘটনাস্হলে পৌঁছায় দমকল। এক ঘণ্টার মধ্যেই আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। উদ্ধার কাজে দমকল কর্মীরা ছাড়াও স্থানীয় ও হাসপাতালের কর্মীরাও হাত লাগান। আগুন লাগার প্রকৃত কারণ এখনও জানা যায়নি।
উল্লেখ্য, এপ্রিল মাসের ২৩ তারিখ মহারাষ্ট্রের পালঘরে কোভিড হাসপাতালে মারাত্মক অগ্নিকাণ্ডে ঝলসে মৃত্যু হয় ১৫ জন করোনা রোগীর। ঘটনাস্থলে প্রথমে ১৩ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়, পরবর্তীতে আরও ২ জনের মৃত্যুর খবর মেলে। বিরার পশ্চিমে বিজয় বল্লভ হাসপাতালের আইসিইউ-তে এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। দমকলের ১০ টি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণ আনে। এই অগ্নিকাণ্ডের কারণ সম্পর্কে সরকারিভাবে এখনও কিছু জানা যায়নি। তবে সূত্রের খবর, শর্ট সার্কিটের কারণেই আইসিইউ-তে আগুন ধরে যায়, যার ফল হয় এমন মারাত্মক। মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে বিজয় বল্লভ কোভিড কেয়ার হাসপাতালের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রীর দফতর সূত্রে এক বিবৃতিতে একথা জানানো হয় এদিন।
এর আগে গত ২৬ শে মার্চ মুম্বাইয়ের ভাণ্ডুপে কোভিড হাসপাতালে মধ্যরাতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ভাণ্ডুপের ড্রিম মলের দোতলায় আগুন লাগে। দ্রুত তা ছড়িয়ে পড়ে মলের ভেতরে সানরাইজ হাসপাতালে। দমকলের ২৩টি ইঞ্জিন আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চালায়। ১ থেকে ৪ তলা পর্যন্ত আগুন ছড়িয়ে পড়ে। বেগ পেতে হিমিশিম খেতে হয় দমকল কর্মীদের। সেই সময় প্রথমে ৬ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেলেও পরবর্তীতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ১১ জন।
এছাড়াও গত বুধবার ভোর ৩ টে ৪০ মিনিট নাগাদ মহারাষ্ট্রের থানের বেসরকারি হাসপাতালে লাগা বিধ্বংসী আগুনে ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। তবে, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সূত্রে খবর হাসপাতালে কোনও করোনা আক্রান্ত রোগী ছিল না।