![]() |
নিত্যদিন , যত্রতত্র |
নিজস্ব সংবাদদাতা: দেখতে দেখতে গা সওয়া হয়ে গেছে সবারই। সাধারন মানুষ থেকে শুরু করে পুলিশেরও। সরকারের রাস্তা জুড়ে ইট বালি চিপস পাথর ফেলে রেখেই ব্যবসা। কেউ কিছু বলতে পারেনা, বললেই সম্মিলিত ব্যবসায়িক ঐক্য চিৎকার করে ওঠে, ‘কই অন্য কেউ কিছু বলেনা শুধু আপনারই অসুবিধা হচ্ছে?’ কিংবা আরও একটু গলা চড়িয়ে, ‘রাস্তা কি আপনার বাপের?’ না, পাল্টাটা বলা যায়না। বললে, আপনিই মার খেয়ে যাবেন। সুতরাং চলতেই থাকে। শুধুই এক আধটা মৃত্যু এসে মাঝে মধ্যে নাড়িয়ে দিয়ে যায়। যেমনটা শুক্রবার সকালে ঘটে গেল পশ্চিম মেদিনীপুরের মাদপুরে। রাস্তার সংকীর্ন পরিসরে বাবা-মাকে দুর্ঘটনার হাতে তুলে দিতে বাধ্য হল ২২ বছরের যুবক।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
এদিন সকাল ৯টা নাগাদ খড়গপুর গ্রামীন থানার মাদপুর রেল স্টেশন বাজার থেকে বাবা-মাকে নিয়ে বাজার করে ফিরছিল ২২বছরের সেখ সম্রাট। মেদিনীপুর কোতোয়ালি থানার বেনাডিহা গ্রামের বাসিন্দা তিনজন ফিরছিল ‘মাদপুর ঘাট’ রাজ্য সড়ক ধরে। বাইক চালাচ্ছিল সম্রাট, পেছনে বাবা-মা।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ”মাদপুরে অবস্থিত খড়গপুর-২ ব্লক কার্যালয়ের অনতিদুরেই ওই রাজ্য সড়কের ওপর ডাঁই করে রাখা নির্মান সামগ্রী পড়ে থাকে মাসের পর মাস। ঠিক এরকমই একটি স্থানে দক্ষিন মুখী একটি ডাম্পার চলে এলে সেটিকে জায়গা ছেড়ে দিতে সম্রাট রাস্তার ধারে সরে যেতে গিয়ে বাইক নিয়ে চলে যায়। ঘটনাক্রমে সেই স্থানেই ছিল বালি যা বাইক সমেত তিনজনকে রাস্তার দিকেই ফিরিয়ে দেয়। সম্রাট নিজেকে সামলে নিতে পারলেও তাঁর মা-বাবা চলে যান সোজা ডাম্পারের তলায়।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় সম্রাটের বাবা শেখ সিরাজ(৫২)য়ের। গুরতর আহত অবস্থায় সম্রাটের মা সাবেরা বিবি(৪২)কে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার মৃত্যু হয়। ঘটনার পরে চরম উত্তেজনা তৈরি হয়। শুরু হয় রাস্তা অবরোধ। অবরোধের মাঝেই গলা চড়িয়ে ছুটে আসে নির্মান সামগ্রীর ব্যবসায়ীরা। দাবি করে দোষ তাঁদের নয়, দোষ ডাম্পারের। উত্তেজিত বিক্ষোভকারীদের হাতে চড় চাপাটিও খায় ব্যবসায়ীরা। ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায় বিশাল পুলিশবাহিনী। উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে উত্তেজিত জনতাকে শান্ত করে তারা। অবরোধ প্রত্যাহৃত হয়। হাহাকারে ফেটে পড়া সম্রাটের আর্তি , আর কোনও হতভাগ্যকে যেন এমন করে বাবা-মাকে মৃত্যুর হাতে তুলে দেওয়ার যন্ত্রনায় সারা জীবন দগ্ধ হতে না হয় ।