নিজস্ব সংবাদদাতা: বৃহস্পতিবারই রেকর্ড পরিমান সংক্রমন হয়েছে মহানগরে। জানা গেছে এদিন রেকর্ড ভাঙা সংক্রমন নিয়ে রাজ্যের ১৬৯০ নতুন আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে যারমধ্যে কলকাতাতেই ৪৯৬। দিন দিন কলকাতা যেন করোনার ডিপো হয়ে উঠেছে এবার সেই কলকাতাতেই বাস নিয়ে আক্রান্ত হলেন দক্ষিনবঙ্গ পরিবহন নিগম করপোরেশন বা এসবিএসটিসির মেদিনীপুর ডিপোর এক কন্ডাক্টার। আর তার জেরে মেদিনীপুর শহরের সরকারি বাস ডিপোতে কাজ বন্ধ করলেন কর্মীরা, রাস্তায় বের হল না বেশিরভাগ সরকারি বাস।বৃহস্পতিবার বিকেলই ডিপোকে করা কন্টেমেন্ট জোনের আওতায় নিয়ে এল পুলিশ।
সূত্র মারফৎ জানা গেছে ওই কন্ডাক্টারের স্বাভাবিক রুট ছিল মেদিনীপুর ঝাড়গ্রাম। সেই মত তিনি কাজও করছিলেন বাস চালু হওয়ার পর। কিন্তু দিন কয়েক আগে একদিনের জন্য তাঁকে মেদিনীপুর কলকাতা বাসে কাজ করতে হয়। কলকাতা থেকে ফিরেও আসেন তিনি। এর কয়েকদিন পর তিনি সামান্য অস্বস্তি বোধ করছিলেন। সন্দেহজনক উপসর্গ মনে হওয়াতে মেদিনীপুর এস বি এস টি সি সরকারি বাস ডিপো-র কন্ডাক্টরের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছিল মঙ্গলবার। বুধবার রাতে তার পজিটিভ ধরা পড়ে।তারপরে আতঙ্ক ছড়ায় ওই বাসটি বাকি কর্মীদের মধ্যে। কারণ আক্রান্ত কর্মীর সঙ্গে এক রুমে থাকতেন ৩০ জন বাসের কর্মী। গাদাগাদি করে থাকতেন সকলে। এই ঘটনার খবর পেয়েই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন তাঁরা। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বাস ডিপোর কাজ বন্ধ করে দেন বেশিরভাগ কর্মীরা।
ডিপো মারফৎ জানা গেছে এই সময়ে পঞ্চাশেরও বেশি সরকারি বাস রাজ্যের বিভিন্ন রুটে চালানো হচ্ছিল। বৃহস্পতিবার বেলা ১২ টা অবধি পাঁচটি বাস চালানো সম্ভব হয়েছে। আতঙ্কে বেশিরভাগ কর্মীরাই হয়তো বাড়ি চলে গিয়েছে, নয়তো কাজ বন্ধ করে বসে রয়েছেন। এঁরা প্রত্যেকেই করোনা পরীক্ষার পরই কাজ শুরু করতে চান। এদিন বিকেল থেকে বাসডিপোকে কন্টেনমেন্ট জোন করার সিদ্ধান্ত নেয় পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর। পুলিশের পক্ষ থেকে কনটেনমেন্ট জোন ঘোষনা করা হয় সিল করে দেওয়া হয় ডিপো। লাগিয়ে দেওয়া হয় বোর্ড। আপাতত বন্ধ সরকারি পরিবহন।
জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পুরো বাস ডিপো স্যানিটাইজ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা। তবে বাস পরিষেবা স্বাভাবিক থাকবে কিনা সেটা নিয়েও সংশয় তৈরি হয়েছে। তবে বাস ডিপোর ইনচার্জ অনিমেষ দত্ত বলেন- সকলেই একটু আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন ৷ স্বাস্থ্যদফতর ও পুলিশ প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা নিচ্ছে ৷
রাজ্য পরিবহন কর্মীরা জানিয়েছেন, গত কয়েক মাস ধরে রাজ্যের প্রতিটি জেলাতেই পরিযায়ী শ্রমিকদের পৌঁছানোর কাজ করেছে প্রায় এই ডিপো থেকে ৩০০ সরকারি বাস। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ওড়িশা লাগোয়া দাঁতন সীমানা থেকে সর্বত্র শ্রমিকদের পৌঁছানো হয়েছিল। তখন করোনা সংক্রমনের ঘটনা ঘটেনি। কিন্তু সমস্যা হয়েছে কলকাতা মেদিনীপুর সার্ভিস বাড়ানোর ফলেই। সমস্ত কিছু স্বাভাবিক হওয়ার পরেও তাই কলকাতা পরিষেবা দিতে রাজি হবেন কিনা কর্মীরা সেটাই প্রশ্নের কিন্তু সেতো পরের কথা বর্তমানে আন্তঃজেলা বাস পরিবহনের কী হবে সেটাই লাখ টাকার প্রশ্ন।