নিজস্ব সংবাদদাতা: তাঁরই আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা ছিল বেশি এবং হলও তাই, খড়গপুর রেলের মেইন হাসপাতালে কোভিড রোগীদের সংস্পর্ষে এসে আক্রান্ত হলে ড: অরবিন্দ কুমার জয়সওয়াল। রেলের হাসপাতালের রোগীদের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয় এই চিকিৎসকের পাশাপাশি আক্রান্ত হয়েছেন আরও একজন মহিলা চিকিৎসক, আক্রান্ত একজন মেল নার্সও। পুরো ঘটনার জন্য কার্যত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে রেলের জোনাল হাসপাতালটি। সঙ্কটাপন্ন রুগী ছাড়া বাকিদের হয় ছুটি দিয়ে দেওয়া হচ্ছে অথবা বাড়িতে যাওয়ার পরিস্থিতি নেই এমন রোগীদের গার্ডেনরিচে স্থানান্তরিত করার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে ।
পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া অবধি বন্ধ রাখা হয়েছে রোগী ভর্তি। খড়গপুর রেল হাসপাতালের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক চিকিৎসক এস.এ নাজমি জানিয়েছেন, ”রেলের হাসপাতালে চিকিৎসার সঙ্গে যুক্ত সমস্ত চিকিৎসক ও চিকিৎসাকর্মীদের করোনা পরীক্ষা করানো, পুরো হাসপাতাল জীবানুমুক্ত করার পরই ফের রোগী ভর্তির প্রক্রিয়া শুরু হবে। আশা করছি দ্রুত তা করা সম্ভব হবে।”
রেল হাসপাতালের অস্থি বিভাগ বাদ দিলে প্রায় সমস্ত বিভাগেই রোগীদের দেখার জন্য যেতেন ডক্টর জয়সওয়াল। পাশাপাশি নিজের আবাসনে আলাদা করে রোগী দেখতেন তিনি ফলে তাঁর আক্রান্ত হওয়ার ফলে আরও কেউ না সংক্রমিত হয়ে পড়েন এটাই এখন দুশ্চিন্তার। অন্যদিকে যে মহিলা চিকিৎসক ড: জয়সওয়ালের সঙ্গে আক্রান্ত হয়েছেন তিনি মূলত: জরুরি বিভাগের দায়িত্বে থাকতেন। রেলের ক্যাজুয়ালিটি বিভাগে ভর্তি হওয়া সমস্ত রোগীকে জরুরি বিভাগ হয়েই যেতে হয় তাই সেক্ষত্রেও ওই চিকিৎসক মারফৎ অন্যদের আক্রান্ত হওয়ার সম্ভবনা থেকেই যাচ্ছে।
দুই চিকিৎসক ছাড়াও হাসপাতালের একজন মেল নার্স আক্রান্ত হয়েছেন বলেই জানা গেছে। এই তিনজন ছাড়াও রেল এলাকায় একজন আরপিএফ ও রেলকর্মীর আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
রেল সূত্রে জানা গেছে, গত এপ্রিলে রেল সুরক্ষা বাহিনী বা আরপিএফ জওয়ানদের যে সংক্রমনের ঘটনা ঘটেছিল তা কাটিয়ে ওঠার পর জুলাই মাসে নতুন করে বাহিনীতে সংক্রমন দেখা দিয়েছে গত ৭দিনে মোট ১৩ জন আরপিএফ জওয়ান আক্রান্ত হয়ে রেলেরই কোভিড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন আর সম্ভবত সেখান থেকেই সংক্রমনের শিকার হয়েছেন দুই চিকিৎসাক ও চিকিৎসাকর্মী। এই অবস্থায় আপাতত রোগী বন্ধ হয়ে যাওয়ায় যথেষ্টই সমস্যায় পড়বেন রেল কর্মীরা।
রেলের খড়গপুর ডিভিশনের কমার্শিয়াল ম্যানেজার তথা জন সংযোগ আধিকারিক আদিত্য কুমার চৌধুরী জানিয়েছেন, দ্রুত এই সংকট কাটিয়ে ফের হাসপাতাল খোলার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। তিনজনকে কোভিড বিধি অনুযায়ী পর্যবেক্ষনে রাখা হয়েছে। এদিন খড়গপুর শহরের ৮, ১০ ও ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে আরও এক মহিলা সহ আরও চারজন আক্রান্ত হয়েছেন করোনায়। এঁদের মধ্যে মহিলা সহ ২জন একই পরিবারের।