নিজস্ব সংবাদদাতা ,মেদিনীপুর: দীর্ঘ অপেক্ষার ধৈর্যের বাঁধ ভাঙল এবার। গত সাত বছর ধরে খুড়োর কলের মত ঝুলিয়ে রাখা হাজার হাজার উর্ত্তীর্ণ চাকুরি প্রার্থীরা সরকারের পরিকল্পিত নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ রাখার ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে ধিক্কার জানিয়ে তুমুল বিক্ষোভ হলো মেদিনীপুর শহরে। হয় চাকুরি দাও নইলে পদত্যাগ করো এমন শ্লোগান তুলেই নব গঠিত সংগঠনের কয়েকশ যৌবন মঙ্গলবার এই কর্মসূচীর মাধ্যমে আত্মপ্রকাশ করল।
পশ্চিমবঙ্গ আপার প্রাইমারী চাকুরি প্রার্থী মঞ্চ ( WBUPCPM) এবং বেকার যুবকদের কাজের দাবী নিয়ে গত সাত বছর ধরে আন্দোলন গড়ে তোলার সংগঠন বেঙ্গল প্লাটফর্ম অফ আনএমপ্লয়ীজ ( BPU) এক যোগে এই আন্দোলনের সামিল হয়।
আন্দোলনকারীদের একাংশ এদিন দাবি করেছেন, রাজ্যে তৃনমূল সরকার অন্যান্য অনেক ক্ষেত্রেই যে নিয়োগ বন্ধ রেখেছেন তার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই কর্মহীন উন্নয়নের নামে শিক্ষিত বেকার যুবক যুবতীর স্বপ্নকে চুরমার করছে। একদিকে হাজার হাজার শূন্যপদে নিয়োগের কোনো পরিকল্পনা নেই।
বিক্ষোভ আন্দোলনে অংশ নেওয়া তারুণ্যের দাবি আপার প্রাইমারী পরীক্ষার উত্তীর্ণদের তালিকা প্রকাশে ইচ্ছাকৃত ভাবে দীর্ঘায়িত করা হচ্ছে যাতে স্বজনপোষণ ও দূর্নীতি করা যায়। পেছনের দরজা দিয়ে লোক ঢোকানো যায়। আর সেকারণেই হাজার হাজার যুবকের নিয়োগ প্রক্রিয়া কে আটকে রেখেছে। জেলায় সাড়ে ছয় হাজার অধিক এমন যুবক যুবতী গত সাত বছর ধরে নিয়োগ পত্র না পেয়ে যন্ত্রনায় জর্জরিত।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া ঘোড়াই, গৌতম গাঁতাইৎ, নজরুল জামাল, প্রিয়াঙ্কা হাজরা, দেবব্রত মন্ডল,সহ বহু চাকুরী প্রার্থী জানিয়েছেন সরকারের উদাসীনতাই তাঁদের স্কুলের প্রাঙ্গনের পরিবর্তে সংগঠন গড়ে তুলে রাজপথে নামতে বাধ্য করেছে। মেদিনীপুর শহরের বার্জ টাউন মাঠ থেকে মিছিল বের হয়ে চার কিলোমিটার পথ বিক্ষোভ মিছিল সহকারে জেলার শিক্ষা পরিদর্শক বা ডিআই য়ের দপ্তর গিয়ে ঘেরাও বিক্ষোভ করে আন্দোলনকারীরা।
আন্দোলনকারীরা এদিন নিজেদের দাবীপত্র জমা দেওয়ার পাশাপাশি বক্তব্য রাখতে গিয়ে জানিয়েছেন আগামী ২৩ শে জুলাই এই দুই সংগঠন যৌথ ভাবে জেলা শাসক দপ্তর অভিযান ও ঘেরাও করবেন তাঁরা। শহরের রাজপথে যৌবনের এই উদ্দীপ্ত মিছিল সহমর্মিতা যোগাড় করেছে সাধারন মানুষেরও। বহু মানুষ প্রশ্ন তুলেছেন এই ভাবে রাজ্যের শিক্ষিত বেকারদের নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে কেন সরকার? আন্দোলনকারীরা স্পষ্ট ঘোষনা করেছেন ন্যায্য দাবি না আদায় করা অবধি ধারাবাহিক আন্দোলন চালিয়ে যাবেন তাঁরা।