নিজস্ব সংবাদদাতা: লকডাউনে সব কেড়ে নিয়েছে প্রান্তিক মানুষের। মাসের পর মাস মাঠেই পড়ে ছিল ফসল। বাজার নেই, হাট নেই ফসল কিনবে কে? আনলক পর্বে অর্থনীতি ধ্বংস হয়ে যাওয়া সংসার, সন্তানদের ফের চাঙ্গা করার চেষ্টায় মরিয়া কৃষকরাও। সেরকমই স্বপ্ন দেখেছিলেন ঝাড়গ্রাম জেলার গোপীবল্লভপুরের টোপগেড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা ৪২ বছরের গুরুপ্রসাদ মন্ডল। উপার্জনহীনতার ধকল কাটিয়ে স্ত্রী আর দুই নাবালক সন্তানকে নিয়ে ফের ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন। ক্ষেতের ফসল যত বেশি করে বিক্রি করে ফেলা।
কিন্তু বাধ সাদল বাজার। টোপগেড়িয়া থেকে ১২কিলোমিটার গোপীবল্লভপুর বাজারে গিয়েছিলেন শশা নিয়ে। কিন্তু বাজার ছিলনা তেমন, তাই ১৭ কিলোমিটার দূরে পাশের থানা নয়াগ্রাম থানার কাশিয়ার সাপ্তাহিক হাটে গিয়েছিলেন বাকি ফসল বেচে দিতে। ক্ষেত থেকে তুলে নেওয়া সবজি বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার মানে হয়না। হাটে শশা বিক্রিও হয়ে গেছিল তাড়াতাড়ি।
তারপর ফেরার পথ।আর সে পথেই ঘটল দুর্ঘটনা। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে ৯ নম্বর রাজ্য সড়কের পাশেই রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায় গুরুপ্রসাদ মন্ডলকে। পাশেই পড়ে ছিল তাঁর বাইক। খবর পেয়েই পুলিশ গুরুপ্রসাদ বাবুকে গোপীবল্লভপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে এলে ডাক্তাররা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
দুর্ঘটনার কারণ সম্পর্কে পুলিশ তদন্ত করছে। কিন্তু বাড়ির একমাত্র রোজগারের ব্যক্তি গুরুপ্রসাদ বাবু মারা যাওয়ায় খবর পেয়ে স্ত্রীমনী মন্ডল বোবা হয়ে গেছেন। হতবাক দুই নাবালক সন্তানও। ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে টোপগেড়িয়া গ্রামে। এক কৃষকের অধরা স্বপ্নে শোকাহত গ্রামের কৃষিজীবী পরিবারগুলি।