নিজস্ব সংবাদদাতা: ২৪ ঘন্টার ব্যবধানে করোনা আক্রান্ত অবস্থায় শহর ও গ্রামীন খড়গপুরে মৃত্যু হল ৩ জনের। এবং এই প্রথম জেলায় একজনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটল যাঁর বয়স মাত্র ৩৪বছর! শুক্রবারই সন্ধ্যায় খড়গপুর রেল হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছিল খড়গপুর গ্রামীন এলাকার পপরআড়া গ্রামের বাসিন্দা এক রেল কর্মচারীর। জানা গেছিল ক্যানসার আক্রান্ত ওই ব্যক্তি পেটের সামান্য ব্যথা নিয়ে ভর্তি হয়েছিলেন। বৃহস্পতিবার তাঁর করোনা পরীক্ষা হয়েছিল যা শুক্রবার তাঁর মৃত্যুর পরে পজিটিভ বলে জানা যায়।
অন্যদিকে বৃহস্পতিবারই সকালে সামান্য অস্বস্তি বোধ করায় খড়গপুর মহকুমা হাসপাতালে নিজের নমুনা দিতে এসেছিলেন পুরানো মালঞ্চ ছাড়িয়ে রাজগ্রামের ৩৪ বছরের এক যুবক। নমুনা দিয়ে বাড়ি চলে যান। শুক্রবার সন্ধ্যায় খিঁচুনির মত উপসর্গ দেখা দেয় তার। ফের তাকে খড়গপুর মহকুমা হাসপাতালে আনা হয়। রাতেই রিপোর্ট আসার পর দেখা যায় যুবক করোনা পজিটিভ। তখুনি তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় শালবনী কোভিড হাসপাতালে। শনিবার সকালে মৃত্যু হয় তাঁর।
জানা গেছে তরুন এই যুবক অত্যধিক মাদকাসক্ত ছিলেন। এই মাদকাসক্তির কারনে গোলবাজারের দোকানটিও ঠিকঠাক চালাতেননা। নানারকম উপসর্গ লেগেই থাকত। চিকিৎসকদের অভিমত মদের আধিক্য পাকস্থলির বড়সড় ক্ষতি করে দিয়েছিল। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ছিলইনা। ফলে প্রথম থেকেই চিকিৎসায় সাড়া দিতে পারেননি।
এদিন সন্ধ্যাতেই কলকাতার নামি বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে খড়গপুর শহরের বিদ্যাসাগরপুরের বাসিন্দা রশ্মি মেটালিকের ৬৮ বছরের এক ম্যানেজারের। প্রায় ২০ দিন মত ভর্তি ছিলেন ওই হাসপাতালে। শেষের দিকে ভেন্টিলেশনে ছিলেন তিনি। কলকাতায় নিজের করোনা আক্রান্ত ভাইকে দেখতে গিয়ে নিজেও করোনা আক্রান্ত হয়ে পড়েছিলেন তিনি। সেই সময় তাঁর ভাই মারা যান। পরে তাঁরও করোনা পজিটিভ ধরা পড়ে তখন থেকেই ভর্তি ছিলেন।
গ্রামীন খড়গপুরের ব্যক্তিকে বাদ দিয়ে গত ২৯ মে থেকে শুরু করে শনিবার অবধি মোট ৬ জনের মৃত্যু হল শহরে। এরমধ্যে পাঁচবেড়িয়া এলাকার ৪ ও ৫নম্বর ওয়ার্ডের ২জনের মৃত্যু হয় গ্লোকাল ও রেল হাসপাতালে। অন্য ২জন ২৮ ও ২৯ নম্বরের দুই বৃদ্ধের মৃত্যু হয় কলকাতায়। শনিবার শহরের মহকুমা হাসপাতালে শতাধিক ব্যক্তির নমুনা সংগ্ৰহ করা হয়েছে। যার মধ্যে ব্যারাকপুর থেকে সালুয়ায় প্রশিক্ষন নিতে আসা ৬০ জন রাজ্য সশস্ত্র পুলিশের জওয়ান রয়েছে। মোট ৪০০ জনের এই দলটির এক জওয়ানের শুক্রবারই পজিটিভ পাওয়া যায়। নমুনা দিতে আসা ৬০ জওয়ানের কয়েকজনের করোনা সন্ক্রমন জাতীয় উপসর্গ রয়েছে বলে জানা গেছে। রবিবার কী ফল আসে সেটাই এখন দেখার।