নিজস্ব সংবাদদাতা: “মেদিনীপুরের মাটি বীরের মাটি, শহীদের মাটি। সেই মেদিনীপুরের সন্তান হিসাবে মেদিনীপুরের এক বীর শহীদের পিতা মাতার কাছে এসেছি,আপনাদের কাছে এসেছি।” পশ্চিম মেদিনীপুরের সবং থানার সিংপুর গ্রামে কাশ্মীরের অনন্তনাগে জঙ্গি হামলায় নিহত শ্যামল কুমার দের বাড়িতে এসে রবিবার এমনই জানালেন, রাজ্যের পরিবেশ তথা পরিবহন মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী।
গত ২৬শে জুন কাশ্মীরের অনন্তনাগে ঝারিপোরায় জঙ্গিদের আক্রমনের নিহত হন সিআরপিএফের ৯০নম্বর ব্যাটালিয়নের জওয়ান ২৭বছরের শ্যামল। ২৮শে জুন রবিবার সিংপুরের বাড়ির বাগানে তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। আজ আরেক রবিবার, ৮ দিনের মাথায় তাঁকে বিশেষ শ্রদ্ধা জানানোর উদ্যোগ নেয় সতীশ চন্দ্র মেমোরিয়াল ট্রাস্ট। শহীদের বাড়ির প্রাঙ্গনেই এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল ট্রাস্টের পক্ষ থেকে।
রবিবার সেখানেই উপস্থিত হয়েছিলেন মন্ত্রী ওই ট্রাস্টের সভাপতি হিসাবে। অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদের খাদ্য কর্মাধক্ষ্য অমূল্য মাইতি ও বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ প্রভাত মাইতি সহ একগুচ্ছ মানুষ। উপস্থিত ছিলেন শহীদের গ্রাম সিংপুরের অধিবাসীরাও। সেখানেই শ্যামলের প্রতিকৃতিতে মাল্যদান করার পর শুভেন্দু অধিকারী দেখা করেন শ্যামলের শোকসন্তপ্ত পিতা বাদল কুমার দের সঙ্গে। সতীশচন্দ্র মেমোরিয়াল ট্রাস্টের পক্ষ থেকে শহীদের পিতা ও মাতার নামে আলাদা আলাদা ভাবে আড়াই লক্ষ করে মোট ৫লক্ষ টাকার চেক তুলে দেওয়া হয়।
সেই চেক তুলে দিতে গিয়েই মন্ত্রী বিনয়ের সঙ্গে বলেন, “মেদিনীপুরের মাটি শহীদের মাটি, বীরের মাটি সেই মাটির সন্তান হিসাবেই আপনাদের কাছে এসেছি। যে আত্মত্যাগের কোনও মূল্য হয়না সেই আত্মত্যাগের কোনও স্বান্তনাও হয়না। আপনাদের প্রনাম।”
বাড়ির সামনেই অনুষ্ঠান তবুও বাইরে বের করাই মুশকিল হয়েছে শহীদ শ্যামলের মাকে। প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন ১০ দিন পেরিয়েও কান্না থামেনি তাঁর। মন্ত্রী দূর থেকেই প্রনাম জানিয়েছেন তাঁকে। পরিবারকে বলেছেন, ” আমাদের ট্রাস্ট আজীবন আপনাদের পাশে রয়েছে। কোনও সমস্যা হলে আমাদের জানাবেন। জানাতে পারেন অমূল্যবাবু, প্রভাতবাবুদের। আমরা দায়বদ্ধ শহীদের পরিবারের প্রতি।”
ট্রাস্টের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে এই প্রথম নয়, চীনের গালওয়ান সীমান্তে নিহত বাংলার দুই শহীদ পরিবারের হাতেও আর্থিক সাহায্য তুলে দিয়েছে এই ট্রাস্ট। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মন্ত্রী কথাও বলেছেন সেই পরিবারগুলির সাথে। ট্রাস্টের এই উদ্যোগে আপ্লুত শ্যামলের পরিবার ও শহীদের গ্রাম সিংপুর।