নিজস্ব সংবাদদাতা: আশঙ্কা ছিলই যে ২০টি অমীমাংসিত ফলাফল থেকে বের হতে পারে ভাল সংখ্যক পজিটিভ আর হলও তাই, বুধবার দিনের শেষে সেই চারগন্ডা অমীমাংসিত ফল থেকেই বেরিয়ে এল এক গন্ডা পজিটিভ। অর্থাৎ প্রায় দেখা যাচ্ছে এই হারেই অমীমাংসিত থেকে পজিটিভ ফলাফল বেরিয়ে আসছে যা শহরের পক্ষে উদ্বেগ জনকই বলছেন স্বাস্থ্য কর্তারা। কারন শহরে প্রথম ১৫টি অমীমাংসিত থেকে ৩টি, দ্বিতীয় ৫টি অমীমাংসিত থেকে ১টি পজিটিভ এসেছিল। এবার ২০টি অমীমাংসিত থেকে ৪টি পজিটিভ এল।
উল্লেখ্য খড়গপুর মহকুমা হাসপাতালে সোমবার সংগ্ৰহ করা হয়েছিল ১০৩ জনের নমুনা যার থেকে এই ২০ অমীমাংসিত ফল এসেছিল। যদিও স্বস্তির কথা এটাই যে মঙ্গলবার সংগৃহিত ৮২ টি নমুনা থেকে কোনও পজিটিভ ফল আসেনি। বুধবার খড়গপুর হাসপাতালে ফের ৭৯জনের নমুনা সংগ্ৰহ করা হয়েছে।
দ্বিতীয় যে বিষয়টি উদ্বেগ জনক তা হল আক্রান্ত জায়গা থেকেই সংক্রমন ছড়াচ্ছে। বুধবার যে চারজনের ফলাফল পজিটিভ এসেছে তার মধ্যে ৩ জন ভবানীপুর এলাকার। ৬নম্বর ওয়ার্ডের ঠিক সেই জায়গা যেখানে কয়েকদিন আগে একজনের পজিটিভ বেরিয়ে ছিল সেই সূত্রেই এই তিনজন আক্রান্ত বলেই মনে করা হচ্ছে। আগে আক্রান্ত ব্যক্তি নির্মান কাজের জন্য বাইরে গেছিলেন। তার থেকেই সংক্রমন ঘটেছে সরাসরি সম্পর্কিত এই তিনজনের। বাকি ১আক্রান্ত পাঁচ বেড়িয়ার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের যেখান থেকে খড়গপুর পৌরসভার প্রাক্তন উপ পৌরপ্রধান সহ তিনজন আক্রান্ত একই দিনে চিহ্নিত হয়।
এবার শহরের করোনা মানচিত্রের দিকে নজর দিলে লক্ষ্য করা যাবে শহরে বর্তমানে করোনার এপিসেন্টার বা কেন্দ্র হয়ে দাঁড়িয়েছে ৪,৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ড। শেষ কয়েকদিনে এই এলাকা থেকেই আক্রান্তের সংখ্যা আসছে এবং শহরে ৩০ ছুঁতে যাওয়া করোনা আক্রান্তের মধ্যে একডজন আক্রান্ত এই পাঁচবেড়িয়া ও সংলগ্ন ভবানীপুর এলাকার। আবার করোনা উপসর্গ নিয়ে মৃত এই শহরের চারজনের ২জনই এই এলাকায় পড়ছে। অন্যদিকে করোনার সন্ধান মিলেছিল এমন বাকি জায়গা থেকে নতুন আক্রান্তের সংখ্যা বুধবার অবধি মেলেনি।
তথ্য বলছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার আর কোনও শহরেই এত আক্রান্তের খবর নেই। খড়গপুর বাদ দিলে পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটাল মহকুমায় আক্রান্তের সংখ্যাটা বেশি বটে কিন্ত সেখানে আক্রান্তের ৯৯%ই হয় পরিযায়ী শ্রমিক অথবা তাঁদের দ্বারা আক্রান্ত কিন্তু খড়গপুর শহরে ঠিক উল্টো আক্রান্তের ৯৯%ই পরিযায়ী নয়। শহরের মৃত চার আক্রান্তের একজন বাড়ি থেকে ট্রেনে চাকরি সূত্রে পূর্ব মেদিনীপুরে যাতায়ত করতেন বাকি ৩জনের দুজন অবসর প্রাপ্ত ও একজন ব্যবসায়ী লকডাউনে যাঁরা বাড়িতেই ছিলেন। সব মিলিয়ে সংক্রমন ও তার উৎস দুই-ই শহরের অভ্যন্তরকেই নির্দেশ করছে। এক স্বাস্থ্যকর্তার বক্তব্য, শহরের যা অবস্থা তাতে টেস্টের সংখ্যা বাড়ালেই আক্রান্তের সংখ্যাও বাড়বে।