ওয়েব ডেস্ক : ” আমার ভেন্টিলেটর খুলে দেওয়া হয়েছে। আমি শ্বাস নিতে পারছি না বাবা।” মৃত্যুর কিছুক্ষণ আগে বাবাকে এমনই একটি ভিডিও পাঠিয়ে ছিল ছেলে। ছেলে আর বেঁচে নেই, কিন্তু ভিডিওটি পাঠিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছিলেন এক যুবক। ঘটনাটি হায়দরাবাদের এরাগাড্ডার। করোনা মোকাবিলায় সাধারণ মানুষ যখন চিকিৎসকদেরই ভগবান মনে করছেন, সেই সময় হায়দরাবাদের বছর ২৫ এর ওই জলজ্যান্ত ছেলেটির মৃত্যুর ঘটনা স্বাভাবিকভাবেই চিকিৎসকদের গাফিলতির দিকেই আঙুল তুলছে।
গত সপ্তাহে জ্বর ও শ্বাসকষ্টের সমস্যা নিয়ে হায়দরাবাদের এরাগাড্ডার গভর্নমেন্ট চেস্ট হাসপাতালে ভরতি বছর ২৬-এর ওই যুবক। শুক্রবার রাতে প্রচন্ড শারীরিক কষ্টের মধ্যেও হাসপাতালের বেডে শুয়ে বাবার উদ্দেশ্যে একটি ভিডিও পাঠায় ছেলে। সকলকে জানানোর উদ্দেশ্যে রবিবার সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিডিওটি শেয়ার করে ওই যুবকের বাবা। এরপর মূহুর্তেই হুহু করে ভাইরাল হতে থাকে। ভিডিওটিতে ওই যুবক হাসপাতালের চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলছেন, “ওঁরা ভেন্টিলেটর খুলে নিয়েছেন এবং গত তিন ঘণ্টা ধরে আমি অক্সিজেন দেওয়ার অনুরোধ করলেও ওরা কিছুতেই আমার কথা শুনছে না। আমার হৃদপিণ্ড প্রায় থেমে গিয়েছে। শুধু ফুসফুস কাজ করছে। আমি শ্বাসপ্রশ্বাস নিতে পারছি না, বাবা। বিদায় বাবা, বিদায় সবাই, বিদায় বাবা।” জানা গিয়েছে, ভিডিওটি বাবাকে পাঠানোর কয়েক মিনিটি পরেই মারা যায় ওই যুবক।
ছেলের মৃত্যুতে স্বাভাবিকভাবেই শোকাহত বাবা৷ তিনি বলেন, “গত ২৪ জুন আমার ছেলের জ্বর হয়েছিল। কয়েকটি হাসপাতালে চেষ্টার পর শেষপর্যন্ত চেস্ট হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছিল। ২৬ জুন সেখানেই ছেলের মৃত্যু হয়।” তবে ভিডিওতে যুবকের করা অভিযোগ একেবারেই অস্বীকার করেছেন হাসপাতাল সুপার মেহবুব খান। তিনি বলেন, ” ভেন্টিলেটর সাপোর্ট ছিল। কিন্তু ওই রোগীর অবস্থা এতটাই জটিল ছিল, উনি অক্সিজেন অনুভব করতে পারেননি। গত কয়েকদিন ধরে এরকম ঘটনা ঘটছে। সাধারণত করোনা আক্রান্ত বয়স্কদের ফুসফুস বন্ধ হয়ে গিয়ে এরকমভাবে মৃত্যু হয়। কিন্তু এখন দেখছি, হৃদপিণ্ডে সংক্রমণের কারণে ২৫-৪০ বছরের রোগীরা মারা যাচ্ছেন। তাঁদের অক্সিজেন দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু তা অপর্যাপ্ত মনে হচ্ছে। চিকিৎসকদের কোনও গাফিলতি নেই।” এদিকে ছেলের মৃত্যুর পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে ওই যুবকের বাবা। ইতিমধ্যেই পুলিশের তরফে ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে।