ওয়েব ডেস্ক : গত শুক্রবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকের মাধ্যমে বাস মালিকদের বাস পিছু আগামী তিন মাস ১৫,০০০ টাকা ভর্তুকির কথা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর এই প্রস্তাবে রাজি হয়েছিলেন বেশ কিছু বাস সংগঠন। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর এই সিদ্ধান্তে সায় না দিয়ে বাসভাড়া বৃদ্ধির দাবিতেই অনড় রইল বাসমালিকদের একাংশ। তাদের দাবি, প্রতিদিন একটি বাস চালাতে খরচ হয় ৩ হাজার টাকা। সেক্ষেত্রে বাসপিছু তিনমাস ১৫,০০০ টাকা ভর্তুকিতে আদপে তাদের সমস্যার কোনও সুরাহাই হবে না।
এবিষয়ে শনিবার ওয়েস্ট বেঙ্গল বাস অ্যান্ড মিনিবাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের তরফে বৈঠক ডাকা হয়। বৈঠকে বাসমালিকদের তরফে স্পষ্টভাবে জানানো হয়েছে, মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী ১৫ হাজার টাকায় তাদের কোনো সমস্যারই সমাধান হবে না। তাই সরকারের দেওয়া ভর্তুকির টাকা নেবেন না ওই সংগঠনের বাসমালিকরা। সেইসাথে তারা আরও জানান, বাস ভাড়া না বাড়ানো হলে সরকারের নির্দেশ অনুযায়ী এই মূহুর্তে সমস্ত বাস রাস্তায় নামাবে না তারা। লোকসান সামাল দিয়ে যে ভাবে গুটিকয়েক বাস রাস্তায় নামানো হয়েছিল সেভাবেই চলবে।
তাদের আরও দাবি, এই সামান্য ভর্তুকি নেওয়ার পর রাস্তায় বাস নামালে স্বভাবতই নানা কারণে পুলিশ কেস দেবে কিংবা ফাইন নেবে সেক্ষেত্রে ১৫০০০ টাকা শ্রমিকদের ভাড়া মিটিয়ে বাসের আনুসাঙ্গিক খরচের পর পুলিশকে টাকা দিলে বাস মালিকদের কাছে প্রতিদিন কিছুতো থাকছেই না বরং আরও বেশি খরচ হচ্ছে। ফলে তারা যে সরকারের প্রস্তাব না মেনে বাস ভাড়া বৃদ্ধির দাবিতেই অনড় থাকবেন তা সোমবার পরিবহণমন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হবে।
এবিষয়ে সংগঠনের এক কর্তা বলেন, “এই ভর্তুকিতে আমাদের কোনও সুরাহা হবে না। আমাদের রোজ ১৫০০ থেকে ২০০০ টাকা ক্ষতি হচ্ছে। সেখানে সরকার দিনপ্রতি ভর্তুকি দিচ্ছে মাত্র ৫০০ টাকা। এই টাকা তো গাড়ি রাস্তায় নামলে ট্রাফিকের ফাইন দিতে চলে যাবে।”
প্রসঙ্গত, শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রী সাংবাদিক বৈঠকে জানান, লকডাউনের মধ্যেই জ্বালানির দাম ক্রমশ বাড়ছে। এর জেরে বাস চালিয়ে লাভ করতে পারছেন না, বরং ক্ষতির মুখে পড়েছেন বাসমালিকরা। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষের কথা মাথায় রেখে কোনোভাবেই বাসের ভাড়া বাড়ানো সম্ভব না। তাই ৬,০০০ বাসের মধ্যে মাত্র ২,৫০০ বেসরকারি বাস রাস্তায় নেমেছে।
ফলে সমস্ত বাস রাস্তায় নামাতে আগামী তিনমাস অর্থাৎ জুলাই, অগাস্ট ও সেপ্টেম্বর বাসপিছু ১৫,০০০ টাকা করে প্রতিটি বেসরকারি বাসকে ভর্তুকি দেবে সরকার। সেই সাথে বেসরকারি বাসের চালক ও কনডাক্টরদের ‘স্বাস্থ্যসাথী’ প্রকল্পের আওতায় আনা হবে। এর ফলে যদি কোনোভাবে বাস ড্রাইভার কিংবা কন্ডাকটর অসুস্থ হন তবে তাঁর চিকিৎসা হবে বিনামূল্যে।