ওয়েব ডেস্ক : দীর্ঘ আড়াই মাস যাবৎ চেলেছে লকডাউন আর সেই কারনে করা যায়নি প্রাক বর্ষা প্রস্তুতির কাজ আর তার ফলে মেদিনীপুর আর খড়গপুর শহরের বিস্তীর্ণ অঞ্চল ভাসতে পারে এই বর্ষার কয়েক মাস। দুই পৌরসভার তরফেই জানানো হয়েছে দুই শহরেরই বেশকিছু এলাকায় এখনও কাঁচা নর্দমা রয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী সেই নর্দমাগুলি দিয়ে এলাকার অতিরিক্ত জল বের করে দেওয়ার উদ্দেশ্যে মূল জলনিকাশি ব্যবস্থার সঙ্গে জুড়ে দেওয়ার জন্য নালাগুলিকে চওড়া অথচ অগভীর করে সংস্কার করা হত। পাকা নর্দমাগুলি ঢেলে পরিষ্কার করার পর মহানালার সঙ্গে যুক্ত মুখগুলি পরিষ্কার করা হত। এ সবই করা হত বর্ষার এক দুমাস আগে থেকে। কিন্ত এবছর করোনা সংক্রমনের জন্য শুরু হওয়া লকডাউনের কারনে সেই কাজ খুবই মার খেয়েছে । লকডাউন শিথিল হওয়ার পর সবে মাত্র কোথাও কোথাও শুরু হয়েছে কাজ আর তার মধ্যেই ঢুকে গিয়েছে বর্ষা। ফলে পুরোপুরি কাজ করা যায়নি।
গোদের ওপর বিষফোঁড়ার মত এবার ফের বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপের ভ্রুকুটি আর তার জেরে আগামী শুক্রবার থেকে টানা ৫ দিন রাজ্যজুড়ে অতিভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিল আলিপুর আবহওয়া দপ্তর। হাওয়া অফিসের পূর্বাভাস অনু্যায়ী, আগামী শুক্রবার উত্তর বঙ্গোপসাগরে একটি নিম্নচাপ তৈরির সম্ভাবনা রয়েছে। এর জেরে বুধবার থেকেই সমুদ্র উত্তাল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে ইতিমধ্যেই উত্তর ও মধ্য বঙ্গোপসাগরে মৎসজীবীদের সমুদ্রে ট্রলার নামাতে বারণ করে দেওয়া হয়েছে।
এরই পাশাপাশি, আবহাওয়া দফতরের তরফে বুধবার থেকে আগামী ৫ দিন উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গে ব্যাপক বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। সঙ্গে থাকবে ঝোড়ো হাওয়া। আগামী ৫ দিন উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গে একই সাথে ভারী বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এবছর রাজ্যে এবার সঠিক সময়েই ঢুকেছে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু। আবহাওয়া দফতরের তরফে জানানো হয়েছিল, মঙ্গলবার পর্যন্ত রাজ্যে বৃষ্টি হবে বুধবারে পর থেকে তা কমবে। কিন্তু ইতিমধ্যেই বঙ্গোপসাগরে ফের নতুন একটি নিম্নচাপের সৃষ্টি হয়েছে৷ এর জেরে বৃহস্পতিবার থেকে উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর।
এদিকে বর্ষা ও তার আগে আমফান ও নিম্নচাপ জনিত বৃষ্টিতেই কাহিল হয়েছে দুই শহর। মেদিনীপুরের ৬০নম্বর জাতীয় সড়কের হবিবপুর এলাকায় যেভাবে ওই বৃষ্টিতেই ঘরে ঘরে জল ঢুকে পড়েছিল তেমনই খড়গপুর শহরের দেবলপুর, ঝুলি, আনন্দনগর ইত্যাদি এলাকায় জল জমে থইথই। প্রাক বর্ষার বৃষ্টির জল তবুও শুকনো মাটি অনেকটাই টেনে নিত কিন্তু বর্ষার মাঝেই এই নিম্নচাপ দুই শহরের অবস্থা কী করে তাই নিয়ে দুশ্চিন্তা বাড়ছে।
এদিকে আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনু্যায়ী, বুধবার থেকে আগামী রবিবার পর্যন্ত টানা ৫ দিন দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় বিক্ষিপ্তভাবে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং মুর্শিদাবাদে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া ভারী বৃষ্টি হতে পারে পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, নদীয়া, বীরভূম, পশ্চিম বর্ধমান, বাঁকুড়া ও পুরুলিয়াতেও। উত্তর ২৪ পরগনায় অতিভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। বৃহস্পতিবার থেকে দক্ষিণবঙ্গে বাড়বে বৃষ্টি, এমনটাই জানিয়েছেন আলিপুর আবহাওয়া দফতর।