নিজস্ব সংবাদদাতা: বৃষ্টি শুরু হতেই ছুটে মাঠের দিকে বেরিয়ে গেছিল কিশোরী। আগে ওই যেত। ঝড় জল বৃষ্টিতে বোকার মত দাঁড়িয়ে থাকত গরুটা। সে গিয়ে তাড়া লাগলে তবেই যেন সম্বিৎ ফিরত তার। তখন ল্যাজ গুটিয়ে দে দৌড় বাড়ির দিকে। বৃহস্পতিবার সবে দুপুরের খাওয়া শেষ করে দাওয়ায় বসে ছিল মেয়েটা। কালো মেঘ ঘনিয়ে হঠাৎই হুড়মুড়িয়ে বৃষ্টি নামল। মাঠে পড়ে রয়েছে গরুটা যাকে ওরা কালী বলেই ডাকত।
সোনালী দৌড় দিয়েছিল মাঠের দিকে, কেউ না গরুটা ঠায় দাঁড়িয়ে থাকবে। কোথায় কি অঘটন ঘটে? বাজ পড়ছে যে! হতভাগী কিশোরী একবারও ভাবলনা বাজটা তার ওপরও পড়তে পারে! হলও তাই। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার সবং থানার রামপুরা গ্রামের মাঠেই পড়ে রইল ১৪বছরের সোনালী জানার নিথর শরীর।মৃত্যু হল অষ্টম শ্রেণীর স্কুলছাত্রীর।
ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার সবং ব্লকের সারতা হাইস্কুলের ক্লাশ এইটের ছাত্রী সোনালীর বাবা প্রসন্ন জানিয়েছেন, কিছু বলার আগেই মেয়েটা ছুটে বেরিয়ে গেল। এমনই পাগলি ছিল মেয়েটা। গরুটাকে ভীষন ভালবাসত। ওর সঙ্গেই যেন ওর যত কথা। গরুটাও সেরকমই ও যেতে না বললে এক পাও নড়বেনা। আমরা মজা করে বলতাম তোর বিয়ে দিলে কালীকেও পাঠিয়ে দেব তোর শ্বশুরবাড়িতে। কিন্তু কোথায় যে কী হয়ে গেল!
সারতা গ্রাম পঞ্চয়েতের অধীন রামপুরা গ্রামের এক বাসিন্দা জানিয়েছেন, হঠাৎই আলোয় ঝলসে উঠেছিল। তারপর বিকট আওয়াজ। তারপরই দেখি মেয়েটা মাটিতে পড়ে। আমরা সবাই মিলে একটা গাড়ি যোগাড় করে ওকে সবং গ্রামীন হাসপাতালে নিয়ে যাই। কিন্তু ততক্ষনে সব শেষ। ডাক্তারা জানায় সোনালী মারা গেছে।কিন্তু শরীরে তেমন কোনও বিকৃতি নেই। ঠিক যেন ঘুমিয়ে রয়েছে। শুধু একটু কালচে আভা। পরে মৃতদেহ সবং থানায় নিয়ে আসা হয় ময়না তদন্তের জন্য খড়গপুর মহকুমা হসপিটালে পাঠানো হবে বলে। সোনালীর বাড়ির লোকেরা জানিয়েছে, গরুটা থম মেরেই দাঁড়িয়ে আছে সারা বিকাল, সন্ধ্যা। গরু কী কিছু বুঝতে পারে? তবে যে মেয়েটা ওকে বোকা বলত!