Homeএখন খবরপাখির চোখ ২০২১,মন্ত্রীত্ব পদে এগিয়ে ঝাড়গ্রামের সাংসদ কুনার হেমব্রম, জঙ্গলমহলকে পুরস্কার দিচ্ছেন...

পাখির চোখ ২০২১,মন্ত্রীত্ব পদে এগিয়ে ঝাড়গ্রামের সাংসদ কুনার হেমব্রম, জঙ্গলমহলকে পুরস্কার দিচ্ছেন মোদি

নিজস্ব সংবাদদাতা: চার দশক পেরিয়ে ফের কেন্দ্রীয় মন্ত্রীত্ব পাওয়ার দৌড়ে এগিয়ে জঙ্গল মহল, এগিয়ে ঝাড়গ্রাম। ২০২১ বাংলার বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখেই এবার বড়সড় রদবদল হতে চলেছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মন্ত্রী সভায় আর সেই মন্ত্রী সভায়। বাংলার একাধিক মুখ এবার বেছে নিচ্ছেন মোদি যার মধ্যে মুকুল রায়ের সঙ্গে নাম উঠে আসছে ঝাড়গ্রামের সাংসদ কুনার হেমব্রমের। যদি হয় তবে ১৯৭৭ য়ের পর ২০২০, ৪৩ বছর পর ঝাড়গ্রাম হয়ে উঠছে জঙ্গলমহলের সেই মুখ যাকে সামনে রেখে আরও উৎসাহ নিয়ে ২০২১ য়ে নির্বাচনী যুদ্ধে নামবে জঙ্গলমহলের বিজেপি কর্মীরা।

এমনিতেই জঙ্গলমহলে কোন ঠাসা শাসকদল, ২০১১ শুরুতে ঘাসফুলে ছেয়ে থাকা ঝাড়গ্রাম এখন পদ্মফুলের উর্বর ক্ষেত্র। পার্থ চট্টোপাধ্যায় কিংবা শুভেন্দু অধিকারীরা দাঁত ফোটাতে পারছেন না। পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রথম বিজেপির পঞ্চায়েত সমিতি এই ঝাড়গ্রামেরই গোপীবল্লভপুর। তার ওপর ঝাড়গ্রাম থেকে শুরু করে বাঁকুড়া পুরুলিয়া পশ্চিম মেদিনীপুর,জঙ্গলমহলের বিস্তীর্ণ অংশ জুড়ে সাংসদ হীন শাসকদল। সেই হিসাবে জঙ্গলমহলে শাসকদলের বিধায়কদেরও আসন এখন টলমল। তাই পুরস্কার পাওনাই ছিল জঙ্গলমহলের বিজেপি কর্মীদের। শোনা যাচ্ছে কুনার হেমব্রমের হাত ধরেই সেই পুরস্কারই পাঠাচ্ছেন নরেন্দ্র মোদি।
প্রথম, দ্বিতীয়, লোকসভায় ঝাড়গ্রামের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন সুবোধ হাঁসদা। কয়েক দফা পরাজয়ের পর ফের তিনি ফিরে আসেন ইন্দিরা গান্ধীর নেতৃত্বাধীন লোকসভায়। ১৯৭২ য়ের সেই সঙ্কটের সময়ে কংগ্রেস ঝাড়গ্রামের আসনটি উপহার দেওয়ায় ইন্দিরা গান্ধীও পুরস্কৃত করেছিলেন ঝাড়গ্রামকে। সুবোধ হাঁসদার হাত ধরেই স্বাধীনতার প্রথম মন্ত্রীত্ব পেয়েছিল ঝাড়গ্রাম তথা জঙ্গলমহল। ১৯৭২-৭৭ কেন্দ্রীয় কয়লা প্রতিমন্ত্রী হয়েছিলেন সুবোধ হাঁসদা। এবার সম্ভবত ইতিহাসের পুনরাবৃত্তির পথে ঝাড়গ্রাম।

২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি ১৮টি আসন পেলেও মাত্র ২ জন কেন্দ্রীয় পান রাজ্যবাসী। তাও আবার প্রতিমন্ত্রী। এর মধ্যে আসানসোলের সাংসদ বাবুল সুপ্রিয় আগে থেকেই মন্ত্রী ছিলেন। ফলে হিসাব মতো বিজেপিকে ২ থেকে ১৮ করে রাজ্যবাসীর প্রাপ্তি হয় ১ জন প্রতিমন্ত্রী। তিনি হলেন রায়গঞ্জের সাংসদ দেবশ্রী চৌধুরী।
এই নিয়ে বিজেপিকে বিঁধতে ছাড়েনি তৃণমূল। তাদের দাবি ছিল, বিজেপি পশ্চিমবঙ্গকে গুরুত্ব দেয় না। তাই ১৮ জন সাংসদের মধ্যে মাত্র ২ জনকে প্রতিমন্ত্রী করা হয়েছে। পূর্ণ মন্ত্রীর মর্যাদা পাননি কেউ। বিজেপির তরফে যদিও তখন জানানো হয়েছিল, পশ্চিমবঙ্গে জিতে আসা সাংসদরা সবাই আনকোরা। সংসদীয় রাজনীতি সম্পর্কে তাঁদের অভিজ্ঞতা খুব কম। তাই কিছুদিন পর তাদের মন্ত্রী করা হবে। ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনের আগে সেই এবার সেটাই হতে চলেছে বলে জানা গেছে।

জানা গেছে আপাতত সাংগঠনিক পদে রয়েছেন এমন নেতৃত্বকে মন্ত্রী করা হবেনা। বিজেপির রাজ্য কমিটিতে যারা জায়গা পেয়েছেন তারা বাদ দিয়ে যে কোনও সাংসদকে মন্ত্রী করা হতে পারে। ফলে দিলীপ ঘোষ, সুভাষ সরকার ও লকেটের মন্ত্রী হওয়ার সম্ভাবনা কম। বাকিদের মধ্যে মুকুল রায় ছাড়াও শান্তনু ঠাকুর, জন বারলা, সুকান্ত মজুমদারের নাম শোনা যাচ্ছে। তবে মুকুল রায়কে বাদ দিলে সব চেয়ে জোরালো সম্ভবনা ঝাড়গ্রাম সাংসদের।
সোমবার দ্য খড়গপুর পোষ্ট য়ের তরফে যখন তাঁর সাথে যোগাযোগ করা হয় তখন
নিজেরই নির্বাচনী ক্ষেত্র পশ্চিম মেদিনীপুরের গড়বেতার পথে রওনা দিয়েছেন ঝাড়গ্রাম সাংসদ। খবর শুনে তিনি বলেন , ” এবার শুরু থেকেই এমন সম্ভবনার কথা আমিও শুনে এসেছি। যদি হয় তবে জঙ্গলমহলের জন্য কাজ করার সুযোগ অনেকটাই বেড়ে যাবে। তবে সেটা তো প্রধানমন্ত্রীর বিষয়, তিনি যা বুঝবেন করবেন। সে যখন হবে তখন দেখা যাবে আপাতত যে দায়িত্ব মানুষ দিয়েছেন তাই ভাল করে পালন করি। প্রচুর কাজ বাকি জঙ্গল মহলে। মানুষ কষ্টে আছেন, তাঁদের পাশে দাঁড়ানো দরকার।”

যদি মন্ত্রী হন তবে কোন বিষয়কে অগ্রাধিকার দেবেন? দ্য খড়গপুর পোষ্টের এই প্রশ্নের উত্তরে আইআইটি খড়গপুরের প্রাক্তনীর জবাব, ” আমাদের জঙ্গল মহলের মানুষের চাহিদা খুবই কম, খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা আর স্বাস্থ্য। এই সামান্য পাঁচটি চাহিদা যা এতদিনেও মেটেনি। আমি সেগুলির দিকে তাকিয়েই কাজ করে যাব। তবে জঙ্গলের মহলের মানুষের সব চেয়ে বড় কষ্ট পানীয়জলের। আমি এর আগেও আইআইটির গবেষকদের এনে বিভিন্ন জায়গায় জলের উৎসের খোঁজে স্থানীয় সূত্রের অনুসন্ধান করেছি। সেই কাজটাকেই অগ্রাধিকার দেব।”

RELATED ARTICLES

Most Popular