নিজস্ব সংবাদদাতা: ছোটবেলায় নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন তিনি আর সেই নোবেল পুরস্কারটাই হাতিয়ে নিয়ে নিজের কাছে রেখে দিয়েছন অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন! অন্যায় ভাবে তার নোবেল পুরস্কার আটকে রাখার প্রতিবাদে এবং তা ফিরিয়ে দিতে হবে এমনই উদ্ভট দাবি করে রবিবার হাওড়া ব্রিজের মাথায় উঠে বসলেন এক মহিলা। আর বছর পঁয়ত্রিশের সেই মহিলার কান্ড দেখে থমকে গেল হাওড়ার ব্রিজ। পথচারীরা হাঁ করে দেখছে সেই কান্ড।
খবর পেয়ে উত্তর বন্দর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছয়, দ্রুত পৌঁছে যায় দমকল বাহিনীও। অবশেষে ঘন্টা খানেকের প্রচেষ্টায় পুলিশ ও দমকলের তৎপরতায় নামানো সম্ভব হয় ওই মহিলাকে। এরপরই তাকে আটক করে নিয়ে যাওয়া হয় উত্তর বন্দর থানায়। তবে ওই মহিলা মানসিক ভারসাম্যহীন বলেই জানা গেছে।
রবিবার বিকেলের ঘটনায় রীতিমত শোরগোল পড়ে যায় হাওড়া ব্রিজের ৪ নম্বর পোলের কাছে। কিছু পথচারী দাঁড়িয়ে রয়েছে আর ওপরে চড়ে বসেছে এক মহিলা দেখেই দৌড়ে যান কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশ কর্মীরা। মহিলার তখন চিল চিৎকার জুড়ে দিয়েছে। আমার নোবেল ফেরৎ দিতে হবে বলে। পুলিশ কর্মীরা যেতে না যেতে ব্রিজের ৪ নম্বর পিলারে বেয়ে আরও উপরে উঠে পড়েন মাঝ বয়সী ওই মহিলা। রবিবাসরীয় বিকেলে হঠাৎ এমন দৃশ্য দেখে কার্যত হতভম্ভ হয়ে যান কর্তব্যরত ট্রাফিক সার্জেন্ট। দ্রুত খবর দেওয়া হয় নর্থ পোর্ট থানায়। খবর পেয়ে এলাকায় পৌঁছায় পুলিশ বাহিনী। তলব করা হয় দমকলকেও।
পুলিশ ও দমকলের লোকেরা অনেক অনুরোধ উপরোধ করেন। এরপরই শুরু বাবা-বাছা করে বোঝানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু মহিলার একটাই কথা, নোবেল না পেলে নামবেননা। মহিলা দাবি করেন, অমর্ত্য সেনের থেকে তার নোবেল ফেরানোর জন্য বহু কাঠখড় পুড়িয়েছেন তিনি। বারবার প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েও কোনও কিছুতেই কোন লাভ হয়নি। বাধ্য হয়েই এই চূড়ান্ত পদক্ষেপ নিতে হয়েছে তাকে। এরপর অবশ্য প্রায় ঘন্টাখানেকের প্রচেষ্টায় অবশেষে তাকে নামাতে সক্ষম হয় পুলিশ ও দমকল বাহিনী।
বছর পঁয়ত্রিশের ওই মহিলা মানসিক ভারসাম্যহীন বলে দাবি পুলিশের। থানায় গিয়ে আধিকারিকদের তিনি আরও জানান, খোওয়া যাওয়া নোবেল উদ্ধারের জন্য অতীতে তার স্থানীয় এসপি অফিসের দ্বারস্থ হয়েও কোনও রকম সাহায্য মেলেনি প্রশাসনের তরফে। তাই বাধ্য হয়ে এই পথ বেছে নিয়েছিলেন তিনি। পুলিশকে কড়া ভাষায় এও হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছেন, তার নোবেল অবিলম্বে ফিরিয়ে দেওয়া না হলে, তিনি ভবিষ্যতেও ফের হাওড়া ব্রিজের চড়ে বসতে পারেন।
জানা গেছে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে ওই মহিলা নিজের নাম ডলি ঘোষ বলে জানিয়েছেন। তার বাড়ি উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগরের কচুয়া ঘোষপাড়া এলাকায় বলেও জানিয়েছেন পুলিশকে। যদিও তার দেওয়া তথ্য কতটা সত্য, তা যাচাই করে দেখছে নর্থ পোর্ট থানার পুলিশ। মহিলা হঠাৎ নোবেল নিয়ে পড়লেন কেন তাও বোঝার চেষ্টা করেছে পুলিশ।