ওয়েব ডেস্ক: ৩২দিনের দিনও শিশুকে দেখতে এসেছিলেন মা। জানতেন আজও নিরাশ হয়েই ফিরতে হবে। গত ৫৪দিন করোনায় আক্রান্ত শিশুটি তার মধ্যে ৩২ দিনই কোমায় ৫মাসের শিশু। ডাক্তাররা মুখে কিছু বলেননি কিন্তু হাবেভাবে বুঝিয়ে দিয়েছেন আশা নেই। তবুও মায়ের মন, যতদিন সে বেঁচে আছে একবার করে আসেন আর নিরাশ হয়ে ফিরে যান চরমতম শোকের দিনটি কবে আসবে ভাবতে ভাবতে। মনে মনে নিজেকে প্রস্তুত করেন। কিন্তু অঘটনটা ঘটে গেল ৩২দিনেই। শিশুটির গায়ে হাত ছুঁইয়ে ছিলেন মা। না, গা কোথায়, গোটাটাই তো ফাইভার বর্মে ঢাকা । শুধু হাত দুটো বেরিয়ে। সেই হাতেই হাত রেখেছিলেন মা। নাড়াচাড়া করছিলেন আঙুল গুলো। হঠাৎই মনে হল তাঁর তর্জনীটা শিশুর হাতে বন্দি! মায়ের আঙুলটা চেপে ধরে আছে শিশু। বিস্ময়ে হতবাক হয়ে আনন্দে কেঁদে উঠলেন মা। ছুটে এসেছিলেন চিকিৎসা কর্মী, নার্স, চিকিৎসক। ভেবেছিলেন সেই অন্তিমক্ষন এসে গেছে কিন্ত এ কী! চিকিৎক দেখলেন কোমা থেকে ফিরে এসেছে শিশু। ব্রাজিলের একটি হাসপাতালের এই অবিশ্বাস্য ঘটনার খবর দিয়েছে মার্কিন মুলুকের সংবাদমাধ্যম গুলি।
গত ২ মাসে গোটা বিশ্ব যে কঠিন সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন তা নোভেল করোনা ভাইরাস বা কোভিড -১৯। এই মারণ ভাইরাসের প্রকোপে বিশ্বজুড়ে এখনও পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে প্রায় কয়েক লক্ষ মানুষের। তবে এতটা দুঃখের মধ্যেও এই খুশির ছড়িয়ে পড়েছে সারা বিশ্বে। এক মার্কিনি টেলিভিশন চ্যানেলের দেওয়া তথ্য অনু্যায়ী, জানা গিয়েছে শিশুটির নাম ডোম। ব্রাজিলেরই একটি হাসপাতালে দীর্ঘ ৩২ দিন কোমায় থেকে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে অবশেষে ৫৪ দিন পর সুস্থ হয়ে মায়ের কোলে ফিরলো ছোট্ট ডোম।
ছেলের অসুস্থতার প্রসঙ্গে তার বাবা ওয়াগনার আন্দ্রেদে সিএনএনকে জানান, “প্রথমে একটি হাসপাতালে ভর্তির পর ডোমের শ্বাস নিতে কিছুটা অসুবিধা হচ্ছিল। তাই ডাক্তাররা মনে করেছিলেন এটি একপ্রকার ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ। এরপর তারা সে অনুযায়ী কিছু ওষুধ ডোমকে দেন। কিন্তু তাদের ওষুধে কোনো ফল না দেওয়ায় ডোমের অবস্থা ক্রমশ খারাপ হতে শুরু করে।”
বাবা ওয়াগনার আন্দ্রেদে আরও বলেন, “ডোমের শারীরিক অবস্থা ক্রমশ খারাপ হতে থাকায় আমি এবং আমার স্ত্রী তাকে দ্বিতীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিই। সেখানেও তাকে পরীক্ষা করা হয় এবং রিপোর্টে তার করোনভাইরাস পজেটিভ আসে।’’
শিশুটির মা ভিভিয়ানে মন্টেরো জানান,”করনা পজিটিভ আসার পর মোট ৫৪ দিন ডোম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিল। তার মধ্যে ৩২ দিন সে ছিল কোমায়। দীর্ঘ ৩২ দিন তাকে আইসিইউ তে ভেন্টিলেটর দিয়ে রাখা হয়েছিল।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইডলাইন অনুসারে নোভেল করনা ভাইরাস বয়স্ক ও ছোটো শিশুদের ক্ষেত্রে খুবই ভয়ঙ্কর রূপ নিতে দেখা যাচ্ছে। সেখানে দাঁড়িয়ে দীর্ঘ ৫৪ দিনের অসিম লড়াইয়ের পর ৫ মাসের ছোট্ট ডোমের মায়ের কোলে ফিরে আসায় স্বাভাবিকভাবেই খুশির জোয়ারে ভাসছে গোটা বিশ্ব।