Homeএখন খবরমাঝরাতে বজ্রপাতে পুড়ে ছাই, জামাই ষষ্টিই প্রানে বাঁচিয়ে দিল পরিবারকে

মাঝরাতে বজ্রপাতে পুড়ে ছাই, জামাই ষষ্টিই প্রানে বাঁচিয়ে দিল পরিবারকে

নিজস্ব সংবাদদাতা: দেশজুড়ে চলছে লকডাউন। যার একমাত্র উদ্দেশ্যই হল সোশ্যাল ডিস্টেন্স রক্ষা করা। পারস্পরিক মেলামেশা, কাছাকাছি যাওয়া ইত্যাদি এড়াতে পারলে ভাঙা যাবে করোনা শৃঙ্খল এমনটাই বলছেন বিশেষজ্ঞরা। আর একে অন্যের বাড়ি, আত্মীয় স্বজনের বাড়ি যাওয়া তো একেবারেই নিষিদ্ধ। উভয়পক্ষের কাছেই বিপজ্জনক। কিন্তু তারমধ্যেও লুকিয়ে চুরিয়ে যে কুটুমিয়ানা চলছে তা কে জানত? তার ওপর জামাইষষ্টি বলে কথা।

সেই জামাইষষ্টি রক্ষা করতে গিয়েই প্রানে বেঁচে গেল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার গুড়গুড়িপাল থানার চারজনের একটি পরিবার। বুধবার রাতের সেই ভয়াবহ ঘটনায় নাহলে পুড়ে ছাই হয়ে যেত গুড়গুড়িপাল থানার শালিকা গ্রামের কানু দোলাই আর তার পরিবার। ঘটনা ঘটেছে বুধবার। এদিন সন্ধ্যা থেকেই সারা দক্ষিনবঙ্গ জুড়েই শুরু হয়েছিল প্রবল ঝড় বৃষ্টি। সেই ঝড়বৃষ্টিতে কেঁপেছে পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রামও। বাদ যায়নি দুই জেলার মধ্যে থাকা শালিকা গ্রামটিও। তবে অন্য জায়গায় তুলনায় শালিকা গ্রাম ও তার আশেপাশের গ্রামে যা বেশি হয়েছিল তা হল প্রবল বজ্রপাত।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন ঘনঘন বজ্রপাতে এদিন কেঁপে উঠছিল এলাকা। প্রতিটি বাজ যেন পড়ছিল ওই এলাকায়। কানু দোলাইয়ের এক প্রতিবেশী জানিয়েছেন, “রাত এগারোটা নাগাদ একটি প্রবল আওয়াজে কানে যেন তালা ধরে যায় আর তার কয়েক সেকেন্ড আগেই প্রবল ঝলসে ওঠা আলোয় ঘন অন্ধকারের মধ্যেও গোটা ঘর আলোকিত হয়ে ওঠে। সাঙ্ঘাতিক কিছু একটা হয়েছে বুঝতে পারি। কিন্তু হতচকিত ভাব আর ভয়টা কাটিয়ে উঠতে সময় লাগে। বাজ পড়ার পরিমানটা কমলেও তখন ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি পড়ছে। কোনোমতে বাইরে বেরিয়ে দেখি। ধোঁয়া উঠছে কানুর ঘর থেকে আর গোটা ঘরটাই জ্বলে গেছে।”

পরে গ্রামের লোকজন উপস্থিত হয়ে আগুন নিভানোর ব্যবস্থা করেন।বৃষ্টিভেজা বাড়ি হলেও গ্রামবাসীরা রক্ষা করতে পারেনি। বাড়ির সমস্ত জিনিসপত্র পুড়ে গিয়েছে কিছুক্ষণের মধ্যে। সকালেই প্রতিবেশীদের কাছ থেকে খবর পেয়ে ছুটে আসেন কানু দোলই। পেশায় বিড়ি শ্রমিক কানুু বলেন, বাজ পড়ে বাড়ি পুড়ে গিয়েছে। তাঁর সঙ্গে বাড়িতে থাকা ভোটার কার্ড, আধার কার্ড, ব্যাঙ্কের পাশ বই, সাত হাজার টাকা সহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে। তবে সব শেষ হয়ে গেলেও কানু বাবু ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিয়েছেন তাঁকে আর তাঁর পরিবারকে বাঁচিয়ে দেওয়ার জন্য।
সকালে স্থানীয় যুবকরা বাড়ির খড়, মাটি, বাঁশ সরিয়ে অন্যান্য জিনিস বের করার চেষ্টা করে।

বিষয়টি জানতে পেরে স্থানীয় মনিদহ গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান অঞ্জন বেরা সহ অনেকেই গিয়ে বিষয়টি দেখেছেন। মেদিনীপুর সদর মহকুমা শাসক দিননারায়ণ ঘোষ জানিয়েছেন, ” বিষয়টি দেখা হচ্ছে, বিভাগীয় দপ্তরকে দিয়ে প্রয়োজনীয় ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।” কানুর এই দুর্ভোগে প্রতিবেশীরা মর্মাহত ঠিকই তবে পাশাপাশি তাঁরা এটাও বলছেন যে কানুর শাশুড়ি ভাগ্য যথেষ্ট ভাল। লকডাউনের বাজারেও জেদাজেদি করেছিল বলেইনা বেঁচে গেল সবাই।

RELATED ARTICLES

Most Popular