নিজস্ব সংবাদদাতা: প্রায় ৬০ দিন কাজ ছিলনা কোনও। লকডাউনের নিষেধাজ্ঞায় কর্মহীন পরিবারের জীবন ওষ্ঠাগত হয়ে উঠেছিল আর পাঁচটা জঙ্গলমহলের বাসিন্দাদের মতই। নিষেধাজ্ঞা ওঠার পর তাই নিজের পেশায় নামতে পেরে স্বস্তি ফিরেছিল সুকান্ত হেমব্রমের কিন্তু শেষরক্ষা হলনা। মঙ্গলবার এক মর্মান্তিক পথদুর্ঘটনায় মৃত্যু হল সুকান্তর। ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার গোয়ালতোড় থানার ঢেঙ্গাদহ এলাকায়। মৃতের নাম সুকান্ত হেমব্রমের বয়স মাত্র ৩৬ বছর।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে ওই থানা এলাকারই কেতাড়া গ্রামের বাসিন্দা সুকান্ত পেশায় মোটর ভ্যান চালক। আশেপাশের এলাকার মধ্যে তাঁর একারই যন্ত্র চালিত ভ্যান রিকশা রয়েছে যা স্থানীয় ভাবে ইঞ্জিন ভ্যান বলা হয়ে থাকে। লকডাউনে দীর্ঘ প্রায় ২মাস কাজ হয়নি। সম্প্রতি নিষেধাজ্ঞা ওঠায় একসাথে তাই অনেকগুলি কাজের বরাদ্দ পায় সে। পরিবারের লোকেরা জানিয়েছেন, মঙ্গলবার ভোরে তাই সাত তাড়াতাড়ি বেরিয়ে পড়ে ইঞ্জিন ভ্যান নিয়ে।এদিন সকালের প্রথম কাজ ছিল খড়কাটা গ্রাম থেকে কিছু কাঠের লগ আনা। সেই সব কাঠের লগ বোঝাই করে বেঁধে রওনা দিয়েছিল সুকান্ত।
সাড়ে আটটা নাগাদ ইঞ্জিন ভ্যানে কাঠের লগ বোঝাই করে খড়কাটা থেকে নিজের বাড়ির দিকে যাচ্ছিল। যাওয়ার পথে ঢ্যাঙ্গাদহ ও নিমডাঙ্গা দুই গ্রামের মধ্যবর্তী জঙ্গল লাগোয়া একটি এলাকায় ভ্যানের নিয়ন্ত্রণ ফেলে। তাতেই কাঠ বোঝায় ভ্যান সহ নিজেও উল্টে যায় রাস্তার মাঝে। কাঠের লগ দড়ি ছিঁড়ে তারই ওপর পড়ে যায়। ফলে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু সুকান্তের। এরপর স্থানীয়দের তৎপরতায় খবর দেয়া হয় গোয়ালতোড় থানার পুলিশকে। ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মৃতদেহ উদ্ধার করে মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। ঘটনার আকস্মিকতায় গোটা এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া।