নিজস্ব সংবাদদাতা: ধকল কাটিয়ে উঠছিল পূর্ব মেদিনীপুর। অর্ধ শতাধিক আক্রান্তের অধিকাংশই সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরেছেন। অবস্থা যখন বেশ কিছুটা নিয়ন্ত্রনে তখনই জোরালো ধাক্কার মুখে জেলা। জেলার করোনা চক্রের যাবতীয় রেকর্ড ভেঙে একই দিনে এক সঙ্গে ৭ জনের কোভিড পজিটিভ চিহ্নিত হয়েছে আর তার মধ্যে ৫ জনই পরিযায়ী শ্রমিক। শনিবারই মুম্বাই ও দিল্লি ফেরৎ দুই পরিযায়ী আক্রান্ত হওয়ায় আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন পূর্ব মেদিনীপুরের এক আধিকারিক। আশঙ্কা ছিল যে জেলায় অবস্থিত একমাত্র লেভেল থ্রি ও লেভেল ফোর কোভিড হাসপাতাল যা কিনা পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম জেলার জন্যও বরাদ্দ তাতে না শয্যা অকুলান হয়ে যায়।
কারন ঝাঁকে ঝাঁকে পরিযায়ী শ্রমিক ঘরে ফিরছেন। রবিবার সেই আশঙ্কা সত্যি প্রমানিত হল কারন মাত্র ২৪ ঘন্টার ব্যবধানে ৭ জন পরিযায়ীর শরীরে করোনা ভাইরাসের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর।
এই ৭ জনের মধ্যে ৬ জনকে ভর্তি করা হয়েছে পাঁশকুড়ার বড় মা হাসপাতালে। অপর করোনা আক্রান্ত মেচেদার ৪২ বছরের মহিলা চিকিৎসাধীন কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে।ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় করোনা সংক্ৰমিত হয়েছেন মহিলা। জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর জানিয়েছে, তমলুকের শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকের গোবিন্দপুরের ৫২ বছরের করোনা আক্রান্ত ব্যক্তি ফিরেছিলেন দিল্লি থেকে। করোনা আক্রান্ত পাঁশকুড়ার ইশাপুরের ২৩ বছরের যুবক।
অন্যদিকে হলদিয়া পুরসভার ডিঘাসিপুরের ৪৯ বছরের ব্যক্তি, হলদিয়ার দেউলপতার ৩৬ বছরের যুবক, পটাশপুর ২ ব্লকের সেলামপুরের ৩৩ বছরের যুবক মহারাষ্ট্র থেকে বাড়ি ফিরেছিলেন। এঁদের প্রত্যেকেরই নমুনা সংগ্ৰহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছিল। রবিবার রিপোর্ট আসে পজিটিভ। এছাড়া করোনার অস্তিত্ব মিলেছে এগরার কসবাগলার ১১ বছরের এক বালকের শরীরে।ওই বালকও পরিযায়ী শ্রমিক পরিবারের বলে জানা গেছে। আক্রান্ত ৭ জনেরই পরিবারের লোকেদের চন্ডিপুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পূর্ব মেদিনীপুরের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিতাইচন্দ্র মন্ডল।
জেলায় ঠিক কতজন পরিযায়ী শ্রমিক আছেন এ সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই জেলার কাছে অন্তত এই মুহূর্তে। তবে একটি বেসরকারি হিসাবে বলা হচ্ছে ৫০ হাজারের ওপরে। খেজুরি রামনগর কাঁথি ব্লকের যেমন একটি বড় অংশ আরব বিশ্বে কাজ করে তেমনি নন্দীগ্রাম, পাঁশকুড়া, এগরা, পটাশপুর, শহীদ মাতঙ্গিনী, হলদিয়া ছোটে দিল্লি, মুম্বাই, ব্যাঙ্গালুরু, তামিলনাড়ুতে। এই শ্রমিকদের একটা বড় অংশই এখন ফিরছেন। এর পাঁচ শতাংশও যদি আক্রান্ত হয়ে পড়েন তাহলেও বিপর্যয়ের মধ্যে পড়ে যাবে জেলা।