✒️কলমে: পার্থজিৎ ভক্ত
এক্সকিউজ মি,স্যানিটারী প্যাড কোনদিকটায় পাব?
বাবা হঠাৎ চলে যেতে নতুন শপিং মলটায় কাজ নিয়েছে সুজাতা। সপ্তাহে ছদিনে তিনটে মর্নিং আর তিনটে বি। সাতটা-দু’টোর শিফটে অসুবিধা নেই কিন্তু বি শিফটে ন-টায় মেন গেট বন্ধ হলেও সব গোছগাছ করে বেরোতে সাড়ে ন-টা। ফাঁকা রাস্তা আর ঝুপসি আলো-আঁধারে বিপদ হতে পারে যেকোন দিন কিন্তু মা,ছোট ভাই আর ও নিজে-এই তিনটে মানুষের দায়িত্ব এখন ওর। পাস কোর্সের ডিগ্রি নিয়ে এই চাকরীটা না পেলে কী যে হত ভাবলেই ওর সাইকেলের স্পিড যায় বেড়ে।
লিপস্টিক,পাউডার,নানা রকম ক্রীম,শ্যাম্পু,লোশন এর পাশাপাশি মহিলাদের ব্যবহার্য্য প্রয়োজনীয় পণ্য দেখানো ও তার দাম থেকে শুরু করে লেটেস্ট মার্কেট ট্রেন্ড নিয়ে সারা দিন লেকচারবাজী করলেও নিজে সেসব ব্যবহারের ইচ্ছে প্রকাশ করাও পাপ-এ ব্যাপারে ওরা সবাই কম বেশি সচেতন। দু-সেট ঝকঝকে পোশাকে কোম্পানীর লোগো লাগানো থাকলেও তা কাচা বা ইস্ত্রি করার খরচ নিজেদের,সঙ্গে সামান্য প্রসাধনের খরচও আছে।
উবু হয়ে মেঝেতে বসে জিনিস গোছাচ্ছিল সুজাতা। ট্রলি ঠেলতে ঠেলতে ওর পেছনে এসে দাঁড়িয়েছে অনির্বান,গলা শুনেই বোঝে। অনির্বান এবং স্যানিটারী প্যাড! ভাবা যায় না। এগারো-বারো এবং কলেজের দু-বছর ধরলে মোট চার বছরের প্রেমে ব্রেক আপ করতে চার মিনিটও ভাবেনি এতই স্মার্ট ছিল ও। কিন্তু একদিন পার্কে বসে গল্পের মাঝে সুজাতা বোঝে ওর যোনিপথ ভিজে যাচ্ছে মাসিকের রক্তে। আশেপাশের দোকান থেকে একটা প্যাড এনে দিতে বলায় অনির্বান যেভাবে আঁতকে উঠেছিল তা ভেবে আজকের অনির্বানকে একদম মেলাতে পারে না সুজাতা।
— ঠিক এর উল্টোদিকের র্যাকেই সাজানো আছে। সমস্ত কোম্পানীরই পাবেন,কোন পার্টিকুলার প্রোডাক্ট খুঁজে না পেলে বলবেন, দেখে দেব।
— থ্যাঙ্কস্।
চোখ ভেঙে বন্যা এলেও পাল্টা ওয়েলকাম জানাতে পারে না সুজাতা,ভুলে যায় এখানে জয়েন করার পর ওর প্রথম পাঠ।