Homeএখন খবরতেলেঙ্গানায় উদ্ধার ৬ বাঙালি সহ ৯ পরিযায়ী শ্রমিক পরিবারের দেহ, লকডাউনে না...

তেলেঙ্গানায় উদ্ধার ৬ বাঙালি সহ ৯ পরিযায়ী শ্রমিক পরিবারের দেহ, লকডাউনে না খেতে পেয়ে আত্মহত্যা নাকি খুন

নিজস্ব সংবাদদাতা: এক সংগে ৯ টি মৃতদেহ একই কুয়োর মধ্যে।তেলেঙ্গানার একটি পরিত্যক্ত কুয়ো থেকে উদ্ধার হল একটি বাঙালি পরিবারের ছজন সদস্য-সহ ৯ জন পরিযায়ী শ্রমিকের মৃতদেহ। প্রায় ২মাস কাজ বন্ধ থাকায় তীব্র অনটনের মধ্যে ছিল ওরা। তারই মধ্যে কোনও রকমে মেয়ের জন্মদিন পালন করে এক সাথে খাওয়া দাওয়া এবং সম্ভবত সেটাই শেষ খাওয়া এরপর আর কেউই দেখেনি তাঁদের। তারপর বৃহস্পতিবার একে একে উদ্ধার দেহগুলি। তেলেঙ্গানার ওয়ারাঙ্গল গ্রামীণ জেলায় গোরেকুন্তা গ্রামের ঘটনায় ধন্দে পুলিশ । তাঁরা আত্মহত্যা করেছেন না কেউ তাঁদের খুন করেছে তা এখনও বুঝতে উঠতে পারেনি পুলিশ। মৃতদেহগুলিতে কোনও আঘাতের ছাপ না থাকায় বিষয়টি নিয়ে রহস্য তৈরি হয়েছে।

তেলেঙ্গানা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বৃহস্পতিবার প্রথমে গোরেকুন্ত গ্রামের ওই পরিত্যক্ত কুয়োটি থেকে চারটি মৃতদেহ উদ্ধার হয়। ফের পরেরদিন আরও পাঁচজনের মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে জানা যায়, মৃতদের মধ্যে ছজন একই পরিবারের। তাঁরা হলেন পরিবারের কর্তা মাকসুদ আলম, স্ত্রী নিশা আলম, দুই ছেলে সোহেল ও শাবাদ, এক মেয়ে এবং তিন বছরের নাতি। এছাড়া বাকি তিনজন হলেন বিহারের বাসিন্দা শ্রীরাম ও শ্যাম আর ত্রিপুরার বাসিন্দা শাকিল আহমেদ।

বছর ২০ আগে পশ্চিমবঙ্গ থেকে তেলেঙ্গানায় এসে চটের ব্যাগ তৈরির কারখানা কাজ নিয়েছিলেন মাকসুদ। শাকিল, শ্রীরাম ও শ্যাম তাঁর সঙ্গেই ওই কারখানায় কাজ করতেন। তবে লকডাউনের জেরে কারখানা বন্ধ থাকায় দুমাস ধরে কর্মহীন হয়ে পড়েছিলেন। সম্প্রতি মাকসুদের মেয়ের জন্মদিন উপলক্ষে তাঁরা একসঙ্গে রাতের খাওয়ার খেয়েছিলেন। তারপর থেকেই আর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না কারোর। ওয়ারাঙ্গলের পুলিশ সুপার ভি রবিন্দার জানান, বৃহস্পতিবার প্রথমে চারজনের মৃতদেহ উদ্ধার হয়। তারপর শুক্রবার আরও পাঁচজনের মৃতদেহ উদ্ধার হয়। মৃতদেহগুলিতে কোনও আঘাতের চিহ্ন ছিল না। বর্তমানে রহস্যজনক মৃত্যুর একটি মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। মৃতদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা চলছে। পাশাপাশি পরিচিতদের জেরা করে মৃতরা কোনও সমস্যার মধ্যে ছিল কি না তা জানার চেষ্টা চলছে।

পুলিশের একটা অংশের প্রাথমিক অনুমান ওই খাওয়ার মধ্যেই কড়া ঘুমের ওষুধ বা মাদক জাতীয় কিছু মিশিয়ে খাইয়ে দেওয়ার পর একে একে গভীর কুয়োর মধ্যে ফেলে দিয়ে নিজেও কুয়োর মধ্যে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন নিজেদেরকে শেষ করে দেওয়ার এক অথবা একাধিক পরিকল্পনাকারী অথবা গন আত্মহত্যার পরিকল্পনা নিয়েছিলেন সবাই মিলে। শেষবারের মত খাওয়ার খেয়ে একে একে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন কুয়োয়। নাকি সবাইকে অচেতন করে কুয়োয় ফেলে চম্পট দিয়েছে দুষ্কৃতীরা? ময়নাতদন্তের রিপোর্ট সংগ্ৰহ করছে পুলিশ। কাজ শুরু করেছে ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা।

RELATED ARTICLES

Most Popular