নিজস্ব সংবাদদাতা: দিঘার সৈকত থেকে অন্তত ৫০ কিলোমিটার আগেই বাঁক নিয়ে আমফান চলে গেছে সাগরদ্বীপের দিকে সেই অর্থে পশ্চিম মেদিনীপুরের সদর দপ্তর থেকে আমফানের দূরত্ব ছিল প্রায় ২০০ কিলোমিটার কিন্তু তাতেও ফাঁড়া কাটেনি পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার। আমফানের ডানার ঝাপটাতেই ২টি তরতাজা প্রান যেমন গিয়েছে তেমনই ধ্বংস হয়েছে ২১হাজারের বেশি বাড়ি। আমফানের প্রভাবে শুধু মেদিনীপুর বাদ দিয়ে জেলার ৭টি পৌরসভা খড়গপুর, ঘাটাল, খড়ার, রামজীবনপুর, চন্দ্রকোনায় ঘরবাড়ি ভেঙেছে। জেলার ২১টি ব্লকই কমবেশি প্রভাবিত হয়েছে।
জেলার ২৬০০বর্গ কিলোমিটার জুড়ে মোট ২১হাজার ১৭টি বাড়ির ক্ষতি হয়েছে যার মধ্যে ৮৫২টি বাড়ি পুরোপুরি মাটিতে মিশে গেছে। ২২৬৩টি বাড়ি বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে এবং ১৭ হাজার ৯০২টি বাড়ি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত বলে জেলা প্রশাসনের হিসাব। বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে সন্ধ্যা অবধি জেলার পুলিশ ও প্রশাসনিক কর্তাদের মধ্যে ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় সেখানে হাজির ছিলেন নির্বাচিত কয়েকজন জনপ্রতিনিধিও।
সেখানেই জানানো হয় জেলায় আমফানের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ১লক্ষ ৪৩ হাজার ৫৮৯জন। যার মধ্যে ৭১ হাজার ১৩৬ জনকে ১৪১৮টি ত্রান শিবিরে তুলে আনতে হয়েছে। ৪৫হাজার ৭৬৩ জনকে উদ্ধার করে তাঁদের সুবিধা মত নিরাপদ স্থানে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। এখানেই আলোচনায় বলা হয়েছে দুপুর ১২টা থেকে শুরু হওয়া দুর্যোগ যা কিনা রাত ৯টা অবধি স্থায়ী হয়েছিল তাতেই সর্বাধিক ক্ষতি হয়েছে। এছাড়াও রাতে এবং ভোরের দিকে ভেঙে পড়েছে বৃষ্টিতে ভিজে যাওয়া বেশ কিছু দুর্বল কাঠামোর বাড়ি।
জেলায় ১৩৬৯টি জায়গা থেকে রান্না করা খাবার পরিবেশন করা হচ্ছে। রাজ্যের বিপর্যয় মোকাবিলার ১টি দল ও ১৯৯জন স্বেচ্ছাসেবক মোতায়েন আছে দুর্গতদের সাহায্য করার জন্য। প্রায় ৩৫ হাজার নারী,পুরুষ, বৃদ্ধ বৃদ্ধা ও শিশুদের প্রয়োজন অনুসারে জামা কাপড় দেওয়া হয়েছে এবং ১৮হাজার মত তার্পোলিন সিট বিলি করা হয়েছে। জেলায় ২টি দুর্ভাগ্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় মোহনপুর ব্লকের বাগদা গ্রামে ১৭বছরের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী নবকুমার পাত্র এবং পিংলা ব্লকের রাউৎচকে রবীন পূর্তি নামে এক ২৭বছরের যুবকের মৃত্যু হয়েছে।
রাউৎচকে বৃহস্পতিবারই গিয়েছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র। মৃতের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। মূখ্যমন্ত্রীর ঘোষনা মত উভয় পরিবারই আড়াই লক্ষ টাকা করে সরকারি সহায়তা পাবেন।