ভবানী গিরি: লকডাউন যদিও বা বাঁচালো, মেরে দিয়ে গেল আমফান। করোনা সংক্রমণ রুখতে প্রায় ৫৮ দিনের বেশি সময় ধরে চলছে লক ডাউন। দীর্ঘদিন লক ডাউন এর ফলে সাধারণ গরিব খেটে খাওয়া মানুষের জীবন দুর্বিসহ হয়ে উঠেছে। ঠিক এই সময় কৃষিজীবী মানুষের উপর ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’ হয়ে দাঁড়াল ঘূর্ণিঝড় আমফান। লকডাউনের জন্য কৃষি শ্রমিক আর ধানকাটা মেশিনের অভাবে মাঠে পড়েছিল বিঘার পর বিঘা পাকা ধান। সেই সময়ও টানা বৃষ্টি, নিম্নচাপ বেশ কিছু ক্ষতি করেছিল ধান, সবজি, তরমুজের। লকডাউনের তৃতীয় দফায় নিয়ম কিছুটা শিথিল করায় মাঠে নেমেছিল কৃষি শ্রমিক ও মেশিন গাড়ি। বৃষ্টি হয় সেই সময়েও। ফলে ক্ষয়ক্ষতিও হয় তখনও। তবুও ধকল কাটিয়ে কিছু ধান কেটে ঘরে তোলা হয়েছিল। মাঠে কাটার পর খামারে তোলার পরও রয়ে গেছিল ১০ থেকে ২৫% ধান। বুধবার তাতেই মই দিয়ে গেল আমফান।
আমফানের প্রভাবে বুধবার রাজ্যের অন্য জায়গার মতই গোপীবল্লভপুরেও সারাদিন টানা বৃষ্টির জন্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে গোপীবল্লভপুর ১ এবং ২ নম্বর ব্লকের বিঘার পর বিঘা বরো ধান। এমনিতেই লক ডাউন এর জন্য মানুষ গৃহবন্দি থাকায় কৃষিকাজ করার জন্য শ্রমিকের অভাবতো ছিলই সঙ্গে ধান কাটার জন্য মেশিনও পাচ্ছিলেন না ঝাড়গ্রাম জেলার গোপীবল্লভপুরের আলমপুর, পিড়াশিমূল, বাকড়া, ফুলবেড়িয়া এবং মহাপাল এলাকার চাষিরা। তাই মাঠে পড়ে রয়েছে বিঘার পর বিঘা বরো ধান। সেই সময় গত সপ্তাহের শেষের দিকে ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস পেয়ে নিজের চেষ্টায় ধান কাটছিলেন। মাঠে পড়েছিল কাটা ধান। কিন্তু শেষ চেষ্টা করেও রক্ষা করতে পারলেন না এলাকার চাষিরা।
বুধবার সারাদিনের বৃষ্টির ফলে মাঠে জমা হয়েছে হাঁটু সমান জল।আর জলের তলায় থাকা ধান বৃহস্পতিবার একটু ডাঙ্গা জায়গায় তুলতে চেষ্টা করছেন দেখা গেল একাধিক চাষিদের।পিড়াশিমূল গ্রামের অলিন বাঘ এবং সুশীল মন্ডল এর মতো ধান চাষিরা জানালেন, টাকার বিনিময়ে জমি নিয়ে ধান চাষ করেছিলাম, কিন্তু ঝড় বৃষ্টির ফলে যা অবস্থা তাতে সার দোকান থেকে শুরু করে জমির মালিক এবং সেচের জন্য পাম্প মালিকের টাকা যোগান দেওয়া এবছর মুশকিল হয়ে পড়বে।