নিজস্ব সংবাদদাতা: যথেষ্ট ক্ষয়ক্ষতি স্বত্ত্বেও বরাত জোরে বেঁচে গেল খড়গপুর,মেদিনীপুর সহ পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম এবং আংশিক হলেও পূর্ব মেদিনীপুর জেলা কারন দিঘা থেকে ৫০ কিলোমিটার দুরেই আমফান বাঁক নিয়েছে সাগরদ্বীপ অভিমুখে। খড়গপুর বা মেদিনীপুর কি পরিমান বেঁচে গেছে তার প্রমান রেখে গেছে কলকাতা। কলকাতা থেকে ৫৫ কিলোমিটার দুরে যখন আমফান অবস্থান করছিল তখনই কলকাতায় হাজার হাজার গাছ আর বিদ্যুৎস্তম্ভ পড়ে লন্ডভন্ড অবস্থা, মৃত্যুর খবর এসেছে হাওড়া ও দক্ষিন ২৪পরগনার মিনাখা থেকে।
দিঘাতে ল্যান্ডফল না হওয়ায় খড়গপুর ও মেদিনীপুরে সেই অর্থে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি না হলেও প্রচুর ঘরবাড়ি ভেঙেছে পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম জেলায়। সবং, পিংলা,নারায়নগড়, খড়গপুর গ্রামীন, কেশিয়াড়ীতে প্রচুর ঘরবাড়ি ও গাছপালা ভেঙে পড়ার খবর মিলেছে। দাঁতনের দুটি ব্লক ও মোহনপুরে ঝড়ের তান্ডব ছিল লক্ষ্য করার মতই। দাঁতনের সোনাকনিয়া সীমান্তে পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য বানানো অস্থায়ী আবাস হিসাবে যে টেন্ট বানানো হয়েছিল তা ঝড়ে উড়ে গিয়েছে। গতকালই অবশ্য শ্রমিকদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল নিকটবর্তী লজ গুলিতে।
অন্যদিকে মোহনপুর ব্লকে ওপরে গাছ পড়ে গুরুতর আহত হয়েছে এক কিশোর। মোহনপুরের বিডিও রাজীব দত্ত চৌধুরী জানিয়েছেন, বেলা ২ টা নাগাদ বাড়ির বাইরে জল আনার জন্য টিউকলে গেছিল বাগদা গ্রামের নবকুমার পাত্র নামে এক কিশোর। সেই সময়ে ঝড়ে একটি খেজুরগাছ পড়ে যায় তার ওপর। তাকে পার্শ্ববর্তী জেলা পূর্ব মেদিনীপুরের এগরা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম দুই জেলাতেই ব্যাপক গাছ ও বিদ্যুতের খুঁটি পড়েছে।
তবে রাজধানী কলকাতায় আমফানের ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। ঘন্টায় ১১০-১২০ কিলোমিটার বেগে ঝড় বইছে সেখানে। আইলা যখন সুন্দরবনে ঘন্টায় ১২৫-১৩০ কিলোমিটার গতিবেগে আছড়ে পড়েছিল তখন কলকাতায় তার গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৯০ কিলোমিটার। সেই সময়ই কলকাতায় প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল-কার্যত লন্ডভন্ড হয়ে গিয়েছিল কলকাতা। কিন্ত বুধবার আমফানের প্রভাবে গত কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে বড় দুর্যোগের সম্মুখীন কলকাতা। বিশেষ করে পূর্ব ও দক্ষিণ কলকাতায় ক্ষতির পরিমান সব থেকে বেশি।
কয়েক হাজার গাছ আর বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে পড়েছে। বেহালার একটি পুরনো বাড়ির কার্নিশ ভেঙে পড়েছে। অনেক জায়গাতেই গাছপালা উপরে রাস্তায় পড়ে আছে। হাওড়াতে লক্ষী কুমারী নামে ১৩বছরের এক কিশোরীর গলায় টিনে কেটে মৃত্যু হয়েছে অন্যদিকে দক্ষিন ২৪ পরগনার মিনাখায় নুরজাহান বেগম নামে ৫৭ বছরের মহিলার মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। ঝড়ের তান্ডবের জন্য জরুরি পরিষেবা ছাড়া রাজ্যের সর্বত্রই বিদ্যুৎ পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়েছে মূখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে।