Homeএখন খবরজোরালো বাতাস ছাড়াই উড়ে গেল পুরীর মন্দিরের ধ্বজা, আমফান আতঙ্কে হিম হয়ে...

জোরালো বাতাস ছাড়াই উড়ে গেল পুরীর মন্দিরের ধ্বজা, আমফান আতঙ্কে হিম হয়ে আছেন ভক্তের দল

নিজস্ব সংবাদদাতা: পুরীর জগন্নাথ মন্দির থেকে যে কোনও অবস্থাতেই ধ্বজা বা পতাকা উড়ে যাওয়া কিংবা খুলে পড়া মারাত্মক অশনি সংকেত বলেই মনে করেন ভক্তকুল। মনে করা হয় এ যেন কোনও মহা অমঙ্গলের অশনিসংকেত। হয়ত বা মহাপ্রলয় বা দুর্ভিক্ষের চূড়ান্ত সঙ্কেত বার্তা। তাই কোনও অবস্থাতেই ওই ধ্বজার স্খলন চাননা মন্দিরের সেবায়েত পণ্ডা, ভক্তের দল। ওদিকে সমুদ্র ফুঁসছে, আবহাওয়াবিদরা বলছেন আমফান নামক ঘূর্ণিঝড় মহা শক্তিশালী হয়ে ধেয়ে আসছে। সেই ঝড়ে যাতে মঙ্গল পতাকা বা ধ্বজার কোনও ক্ষতি না হয় সেই কারনে দীর্ঘ লম্বা ধ্বজা সরিয়ে ছোট ধ্বজা লাগানো হয়েছিল কিন্ত সেই ধ্বজাটি সোমবার হঠাৎই উড়ে যায়।ঘটনা জানাজানি হতেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে ভক্তদের মাঝে।সোমবার দুপুরের পর আচমকাই মন্দিরের পন্ডারা লক্ষ্য করেন, মন্দিরের মাথায় ধ্বজা নেই । এরপর হইচই পড়ে যায় মন্দির প্রাঙ্গণে। বজ্রাহত হয়ে পড়েন সবাই, তবে কী অমঙ্গল আসছে? বড় কোনও বিপদের সংকেত? ইতিমধ্যেই আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, অতি প্রবল গতিতে ধেয়ে আসছে সুপার সাইক্লোন ‘আমফান’। হাতে আর মাত্র কয়েক ঘণ্টা। আতঙ্কের প্রহর গুণছে ওড়িশা-সহ গোটা বাংলা। দুর্যোগ মোকাবেলায় সাজো সাজো রব কলকাতা থেকে ভুবনেশ্বর। আর তার মধ্যেই উড়ে গেল পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের নীলচক্রের উপরে উড়তে থাকা ‘পতিতপবন বানা’। তড়িঘড়ি কিছুক্ষণের মধ্যেই ফের লাগান হয় ধ্বজা । কারণ ধ্বজা না থাকলে মন্দিরে জগন্নাথ দেবের সেবা হয় না- এমনই রীতি।

এদিনের ঘটনা জানাজানি হতেই ভক্তদের মধ্যে চরম আতঙ্কের সৃষ্টি হয় । অনেকেই দাবি করেন, মন্দিরে ভক্তদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করার জেরেই এত বড় দুর্ঘটনা। আবার কেউ কেউ বলেন, এ এক অশনি সংকেত । কারণ, সোমবার দুপুরে পর পুরীতে নাকি খুব জোরে হাওয়া বইছিল না । তাই হঠাৎ ধ্বজা কী করে উড়ে গেল , তা নিয়ে কোন ব্যাখ্যা খুঁজে পাচ্ছেন না অনেকেই। আমফান আসার ঠিক আগে পুরীর মন্দিরের এই ঘটনায় বড় কোন দুর্যোগ আসছে বলে আশঙ্কা পান্ডা এবং সেবায়েতদের ।

প্রসঙ্গত, এর আগে পুরীর মন্দিরের মাথায় ধ্বজা পুড়ে যাওয়ার ঘটনা ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছিল । এমনিতেই ঘূর্ণিঝড়ের হাত থেকে বাঁচতে আগাম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয় পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে । জগন্নাথ দেবের মন্দিরের চূড়ায় ১৫ ফুট লম্বা ধ্বজা সরানো হয়। পরিবর্তে রাখা হয় ৪ ফুট লম্বার ধ্বজা । ফনী নামক ঘূর্ণিঝড়ের সময় সেই ছোট ধ্বজা উড়ে গিয়েছিল । ঘটনাচক্রে বাংলায় অল্প আকারে সমস্যা হলেও ফেনীর দাপটের বড় মাশুল দিতে হয়েছিল ওড়িশাকে।লন্ডভন্ড হয়ে গেছিল কটক, ভুবনেশ্বর, পুরী। সোমবারের ঘটনা তাই আতঙ্ক ছড়িয়েছে জোর।

স্মরনাতীত কাল থেকেই পুরীর মন্দিরের মাথায় প্রতিদিনই ধ্বজা পরিবর্তন করা হয়। বলা হয় ধ্বজা পরিবার্তন না করলে আগামী ১৮ বছরের জন্য নাকি পুরী মন্দির বন্ধ হয়ে যেতে পারে । আর পুরীর মন্দিরের পতাকা হাওয়ার দিকেই ওড়ে । যদিও আশ্চর্য এই বিষয়ের এখনও কোনও বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি । প্রতিদিন মন্দিরের একজন পণ্ডা মন্দির চূড়ায় গিয়ে এই লাগিয়ে আসেন । এই ৪৫ তলা উঁচুতে পতাকা লাগানোর জন্য কোনও নিরাপত্তা প্রয়োজন হয় না পণ্ডাদের। কাঁধে করে সেই বিশাল ধ্বজা বহন করে ওপরে চূড়ায় ওঠার পর আগের পতাকা খুলে ফের নতুন ধ্বজা বা পতাকা বেঁধে আসার এই দৃশ্য স্বচক্ষে দেখতে ভক্তরা ভিড় জমান। নানা কাহিনী রয়েছে ঐতিহাসিক এই ধ্বজাকে ঘিরে । সেই ধ্বজা উড়ে গেলে আতঙ্ক ছড়াবে এতে অবাক হওয়ার কী আছে?

RELATED ARTICLES

Most Popular