নিজস্ব সংবাদদাতা: উত্তর ২৪ পরগনার আমডাঙার তেঁতুলিয়ার পঞ্চাননতলায় নিহত দুই বিজেপিকে গুলি করে খুনের পেছনে তাঁর স্ত্রীকে শ্লীলতাহানি করার কারন দাবি করলেন বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটের এডিসির দেহরক্ষী কনস্টেবল সন্তোষ পাত্র। শুক্রবার রাতে দুই ভাইকে নিজের সার্ভিস রিভলবারের গুলিতে ঝাঁঝরা করে দেওয়ার কারন হিসাবে ওই খুনি কনস্টেবল অবশ্য রাতে চিৎকার করে বলেছিল কেন তারা লকডাউনে বাড়ির বাইরে বেরিয়েছে। শনিবার সেই দাবি থেকে সরে এসে পুলিশের সামনে কনস্টেবল দাবি করেছেন, স্ত্রীর শ্লীলতাহানির প্রতিশোধ নিতেই খুন করেছেন তিনি। ওই দুই ভাইয়ের এক ভাই তাঁর স্ত্রীকে তাঁর অনুপস্থিতিতে ধর্ষন করত এবং বিষয়টি না জানানোর জন্য তাঁকে ব্ল্যাকমেইল করে যেত এমনটাই অভিযোগ কনস্টেবলের।
উত্তর ২৪ পরগনার পঞ্চাননতলা গ্রামে শুক্রবার রাতে নিহত দুই ব্যক্তি বিজেপি সমর্থক বলে পরিচিত। তাই এদিন নিহতদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে যান ব্যারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিং ও ব্যারাকপুর বিজেপি জেলা সভাপতি উমাশঙ্কর সিং। নিহতদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলতে যাওয়ার পথে তাঁদের বাধা দেয় আমডাঙা থানার পুলিশ। শুরু হয়ে যায় তর্ক-বিতর্ক। এরই মধ্যে গ্রামবাসীরা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করলে পুলিশ পিছু হটে।। সাংসদ অর্জুনের দাবি, বিজেপি কর্মী হওয়ার ‘অপরাধে’ই ওই দু’জনকে খুন হতে হয়েছে। এর নেপথ্যে তৃণমূল কংগ্রেস রয়েছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন। সিং নিহতের পরিবারের সঙ্গে দেখা করে পাশে থাকার কথা বলেন। তিনি নিহত ও আহতেদর পরিবারকে আর্থিক সহায়তা করারও আশ্বাস দিয়েছেন। তৃণমূল অবশ্য বিষয়টিকে অরাজনৈতিক বলেই দাবি করেছেন।
শনিবার সন্তোষকে গ্রেপ্তার করে বারাসত জেলা পুলিশ। পুলিশের কাছে অভিযুক্ত জানিয়েছেন সার্ভিস রিভলভার দিয়ে তিনি এই খুন করেছেন। স্ত্রীর শ্লীলতাহানির প্রতিশোধ নিতেই এই খুন বলে দাবি করেছেন অভিযুক্ত। খুনি রিভলভারটি পুলিশ বাজেয়াপ্ত করেছে। শুক্রবার রাতে বিধাননগরের অ্যাডিশনাল ডিসির দেহরক্ষী সন্তোষ পাত্রের গুলিতে খুন হন দুই ভাই সুমন্ত মণ্ডল ও অনন্ত মণ্ডল। এবিষয়ে বারাসতে সাংবাদিক বৈঠক করেন জেলা পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানান অভিযুক্তের স্বীকারোক্তি থেকে পরিষ্কার যে দুই ভাই খুন এবং অপর একজন আহত হলেও খুনীর প্রধান রাগ ছিল সুমন্ত মণ্ডলের ওপরে। তাঁর স্ত্রীকে সুমন্ত শারীরিক নিগ্রহ করেছিলেন দাবি ধৃত অভিযুক্তের। তবে পুলিশ তাঁর দাবি খতিয়ে দেখছে।
যদিও স্ত্রীকে ধর্ষনের অভিযোগ আগে কোনও দিন জানায়নি সন্তোষ। একটি সূত্রে জানা গেছে দুই ভাইয়ের সঙ্গে যথেষ্ট হৃদ্যতা ছিল সন্তোষের। তার বাড়িতে যাতায়াত ছিল দুই ভাইয়ের। সন্তোষ বাড়িতে না থাকার সুবাদেই এক ভাই তাঁর স্ত্রীকে ধর্ষন করে। সেই ধর্ষনের ঘটনা না বলার জন্য ব্ল্যাকমেইল করে ধর্ষন চালিয়েই যেত। লকডাউনের সময় সন্তোষ বাড়িতে থাকছিল। সেই সময় কিছু মানুষ তাকে দেখে হাসাহাসি করে। এরই কারন অনুসন্ধান করতে গিয়েই সে স্ত্রীর কাছে জেরা করে আসল রহস্য উন্মোচন করে। যদিও ঘটনাটি ধর্ষনেরই নাকি বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের তা পুলিশ তদন্ত করছে।