নিজস্ব সংবাদদাতা: ১৮ বছরের এক করোনা আক্রান্ত যিনি ঝাড়গ্রাম জেলা থেকে ১০ তারিখ পূর্ব মেদিনীপুরের বড়মা কোভিড হাসপাতালে ভর্তি তাঁকে ফোন করতেই ফোন ধরলেন ২৩বছরের যুবক! হাসপাতালের নাম ধরে তিনিই কিনা জানতে চাইলে বললেন, “আজ্ঞে না, আমি তার দাদা, ভাই মনে হয় ঘরে কোয়ারেন্টাইনে আছে।”
বললাম, সেকি করে হয়? করোনায় আক্রান্ত আপনার ভাই আর সে আছে কোয়ারেন্টাইনে আর আপনার যেখানে কোয়ারেন্টাইনে থাকার কথা, আপনি আছেন হাসপাতালে?
যুবক বলল, “হ্যাঁ তাই শুধু হাসপাতালে নয়, চারদিন ওষুধও খেয়েছি।” সে কি এত সর্বনাশের ব্যাপার। তারপর?
যুবক বলল, “তারপর আর কি? জানতে পেরে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে আর ওষুধ খাইনি”
কিন্তু জানলে কি করে?
যুবক বলল, ” আজ সকালে আমার এক পরিচিত ফোন করে জানান মনে হচ্ছে কোথাও একটা গন্ডগোল আছে। পজিটিভ আমি নই, আমার ভাই। এরপরই আমি ঝাড়গ্রাম সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ফোন করি। যেহেতু ওখানেই আমাদের নমুনা সংগ্ৰহ করা হয়েছিল তাই নম্বর আমার কাছে ছিলই। ফোন করে জানতে চাইলাম, দাদা আমার কোন নমুনা পজিটিভ হল বলবেন ? মানে আমাদের নাকের আর মুখের দু’ রকম নমুনাই সংগ্ৰহ করা হয়েছিল। ল্যাবের লোকটি আমার নাম জিজ্ঞাসা করতে বললাম নিজের নাম। সে ঘেঁটে ঘুঁটে বলল, আপনার তো পজিটিভ নয়, নেগেটিভ। আমি ভাইয়ের নাম বললাম, তখন বলল, আপনার ভাই পজিটিভ। ব্যস, ওষুধ বন্ধ করে দিলাম।”
এই হাসপাতালে কিছু বললেন না? যুবক বললেন,” বলেছি। কিন্তু ওরা বলছেন, আমরা কি করব? তোমাকে তোমার জেলার হাসপাতাল যেমনটা পাঠিয়েছে।”
কিন্তু তুমি এই করোনা হাসপাতালে এলে কি করে?
যুবক জানালো, আমি গত দু’বছর ধরে সম্বলপুরে সোনার কাজ করছি। লকডাউনের আগে আমার ভাই বেড়াতে গিয়ে আটকে যায়। সঙ্গে আমারও কাজ বন্ধ হয়ে যায়। দু’জনে মিলে হেঁটে বাড়ি ফিরি ৭তারিখ। ওই দিনই আমাদের ঝাড়গ্রাম সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে গিয়ে নমুনা দিতে হয়। ১০তারিখ সকালে আমাকে ফোন করে বলা হয় আমার পজিটিভ এসেছে। দুপুরে পুলিশ এসে আমারই নাম ধরে ডেকে বলে আমাকে মেদিনীপুরে যেতে হবে। গাড়িতে আমাকে আর আমার সঙ্গে ঝাড়গ্রামের এক মুদি দোকানের কর্মীকে এখানে নিয়ে আসা হয়।তারপর থেকে আছি। চারদিন পরে জানতে পারলাম আমি নই, ভাই পজেটিভ।”
ভাই তাহলে বাড়িতে কোয়ারেন্টাইন?
যুবক বলল, “তাই থাকতে বলেছিল পুলিশ।কিন্তু ওর তো জানা নেগেটিভ। বাচ্চা ছেলে ঘরে কি আর থাকে?”