নিজস্ব সংবাদদাতা: ১৭ মে দেশজুড়ে লকডাউন প্রত্যাহার হোক অথবা না হোক পশ্চিমবাংলায় আগামী ২১ তারিখ অবধি লকডাউন পরিস্থিতি বজায় রাখা হবে বলে জানিয়ে দিলেন মূখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী। মঙ্গলবার নবান্নে এক দীর্ঘ সাংবাদিক সম্মেলনে মূখ্যমন্ত্ৰী জানিয়ে দিয়েছেন, রাজ্যের অর্থনৈতিক অবস্থা খুবই খারাপ। পুরানো দেনার ভার বইতে হচ্ছে রাজ্যকে আর তার ওপর কেন্দ্র টাকা দিচ্ছেনা। এদিকে করোনা থেকেই যাচ্ছে আর লকডাউনও চালিয়ে যেতে হবে। এমন পরিস্থিতে মাঝে অর্থনীতিকে সচল রাখার জন্য রেড জোনেও বিভিন্ন দোকান খোলার ছাড় দেওয়া হবে যার মধ্যে রেস্তোরাঁ ও খাবার দোকানও থাকবে। যদিও বড় রেস্তোরাঁ খুলবেনা আর কোথাও বসে খাওয়া যাবেনা। খাবার নিয়ে চলে যেতে হবে।
রেড জোনের এই ক্রিয়াকান্ড চালানোর জন্য রেড জোনকে তিন ভাগে ভাগ করার পরামর্শ দেন মুখ্যমন্ত্রী। ‘এ’ জোন মানে যেখানে সদ্য সংক্রমন ঘটেছে বা ঘটেই চলেছে সেই কন্টেনমেন্ট জোনে থাকবে সম্পূর্ণ লকডাউন। ‘বি’ জোন যা সংক্রমন এলাকা থেকে কাছাকাছি অথচ সংক্রমন মুক্ত সেখানে সোনার, ইলেকট্রনিক্সের দোকান ও রেস্তরাঁ ছাড়া অন্যান্য খাবারের দোকান খোলায় ছাড় দেওয়া হবে। ‘সি’ জোনে আরও ছাড় পাওয়া যাওয়া যাবে । কোন ক্ষেত্রে ছাড় মিলবে, তা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে ঠিক করবে পুলিশ। দুই দফায় ছাড় দেওয়া হবে রাজ্যে। প্রথম দফা শুরু আগামিকাল অর্থাৎ বুধবার থেকে। আর দ্বিতীয় দফা ২১ মে থেকে চালু হবে।
ছাড়ের ক্ষেত্রগুলি এরকম ১. সামাজিক দূরত্ব মেনে টলিপাড়ায় কাজ শুরুর পক্ষে মুখ্যমন্ত্রী। শুটিং ছাড়া ডাবিং, এডিটিং, মিক্সিংয়ের কাজ চালু করা যাবে।
২. বিড়়ি শিল্পে ৫০ শতাংশ শ্রমিক নিয়ে কাজ করাতে ছাড় দেওয়া হল। চা শিল্পেও দেওয়া হল ছাড়।
৩. জেলায় গ্রিন জোনে চলবে বাস, ট্যাক্সি। তবে সোশ্যাল ডিসটেন্সিং মেনে চলতে হবে প্রত্যেককে। ২১ মে থেকে কনটেনমেন্ট জোনেও বাস চলাচল সম্ভব কি না, তা খতিয়ে দেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। ৪. ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের ক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা করে এগোনোর কথা বলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ৫. তাঁতের হাট, খাদি, বিশ্ববাংলা হাট খোলার অনুমতি দেওয়া হল।
৬. গ্রামে যে সমস্ত নির্মাণের কাজ অসমাপ্ত রয়েছে, সেগুলি চালু করা যাবে। ৭. প্রয়োজনে ১০০ দিনের কাজে শ্রমিকের সংখ্যা বাড়ানো হবে।
রাজ্যের কঠিন অর্থনৈতিক পরিস্থিতির মধ্যেও রাজ্য সরকারি কর্মচারী ও শিক্ষকদের বেতন চালু রেখেছে জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী জানান যতদিন পারবেন শিক্ষকদের বেতন দিয়ে যাবে রাজ্য। ঘটনা এটাই যে তীব্র রাজস্ব ঘাটতির জন্য শঙ্কিত সরকার কারন আদায়কৃত রাজস্বই ছিল সরকারি কর্মচারী ও শিক্ষকদের বেতনের উৎস।সেই রাজস্ব বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সঙ্কটে রাজ্য। মূখ্যমন্ত্রী আরও বলেন জয় বাংলা স্কিমের আওতায় জুন ও জুলাই মাসের পেনশনও দিয়ে দেওয়া হবে।