নিজস্ব সংবাদদাতা: উত্তেজনার পারদ ক্রমশ চড়ছে রেল এবং রাজ্য প্রশাসনের মধ্যে। রেলের অকর্মন্যতার জন্যই খড়গপুর কোভিড সংক্রমনের মুখে পড়েছে এমন আভিযোগ করেছিলেন খোদ খড়গপুর শহরের বিধায়ক তথা পুর প্রধান প্রদীপ সরকার। প্রদীপের মনোভাব কার্যত খড়গপুর প্রশাসনেরই মনোভাব বলেই মনে করা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার নতুন করে আরও এক রেল সুরক্ষা বাহিনী বা আর.পি.এফ জওয়ান আক্রান্ত হওয়ার ঘটনায় ফের সংঘাতের চাপ অনুভূত হল দু’পক্ষের মধ্যে। আর সেই সংঘাত ক্রমশ বাড়তে যাচ্ছে এমন ইঙ্গিত মিলছে ।
বৃহস্পতিবার নজির বিহীন ভাবেই আক্রান্ত জওয়ানকে নিজেদের কোভিড হাসপাতালে রাখতে অস্বীকার করে রাজ্য। স্বাস্থ্য দপ্তরের পক্ষে বলা হয়, রাজ্যে সংক্রমনের হার যে ভাবে বাড়ছে তাতে কোভিড হাসপাতালে শয্যা সংকট হতে চলেছে। রেলের যেহেতু নিজস্ব পরিকাঠামো আছে তাই রেলের আক্রান্তদের রেল নিজের জায়গাতে রাখুক। এরপরই রেল আক্রান্ত ওই জওয়ানকে খড়গপুরের জোনাল হাসপাতালে নিয়ে আসে রেল কর্তৃপক্ষ। অথচ আগের আক্রান্ত ৬ জওয়ানকে রাজ্য নিজের হাসপাতালেই রেখেছিল। ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে রেলের স্বাস্থ্য কর্তারা। তাঁরা জানান, রেলের হাসপাতাল থাকলেও তা করানো চিকিৎসার পরিকাঠামো হীন। রাজ্যের মনোভাবকে অমানাবিক বলেই মনে করেন তাঁরা।
এদিকে যেহেতু ওই জওয়ানকে খড়গপুর হাসপাতালে রাখা হয়েছে তাই হাসপাতালকে ঘিরে আশেপাশের রাস্তায় ব্যারিকেড তৈরি করে রাজ্য পুলিশ। হাসপাতালে ঢোকার বিভিন্ন পথে গার্ডরেল দিয়ে অবরোধ করে দেওয়া হয়। পুলিশের যুক্তি, সংক্রমন যাতে ছড়িয়ে পড়ে তাই মানু্ষের যাতায়ত নিয়ন্ত্রন করতেই এই কাজ করা। কিন্ত ঘটনার খবর পেয়েই ক্ষোভে ফেটে পড়েন রেল প্রশাসনের কর্তারা। রেলের আবাসন ও আধিকারিকদের বাংলো ঘিরে ইচ্ছাকৃত ভাবে পুলিশ বাধার প্রাচীর তুলছে বলে আভিযোগ করে মহকুমা প্রশাসনের কাছে তীব্র আপত্তি জানায় রেল প্রশাসন। এরপরই সেই ব্যারিকেড সরিয়ে নেয় পুলিশ।
এদিকে পশ্চিম মেদিনীপুর নতুন করে রেড জোনের আওতায় আসার পেছনে রেলের আর.পি.এফ কান্ডই দায়ী মনে করে রেলকেই দুষছে প্রশাসন থেকে খড়গপুরের সাধারন মানুষও। তাঁদের মতে দিল্লি ও রাজস্থানে অস্ত্র আনতে যাওয়া ২৮জনের আরপিএফ দলটিকে লকডাউনের মধ্যে না আনলে এই ঘটনা ঘটতনা। আর আসার পরেই তাঁদের কোয়ারেন্টাইনে করেনি রেল। করলে সংক্রমন ছড়াত না। এদিকে রাজ্যের স্বাস্থ্য সচিব বিবেক কুমার বৃহস্পতিবার কেন্দ্রের স্বাস্থ্য সচিব প্রীতি সুদনকে যে চিঠি পাঠিয়েছেন তাতে নিশ্চিত ভাবেই রেলের আক্রান্ত সংখ্যাকেও ধরেই রাজ্যের সংখ্যা দেখানো হয়েছে।
কারন পশ্চিম মেদিনীপুর এলাকার বাসিন্দা এমন ঘোষিত করোনা আক্রান্ত মাত্র ৫ জন। আর বিবেকের চিঠিতে ১২জন উল্লেখ করা হয়েছে।
অন্যদিকে রেলের আক্রান্ত আরপিএফ জওয়ানকে রাজ্যের হাসপাতালে না নেওয়াকে দুর্ভাগ্যজনক আখ্যা দিয়ে এক রেল কর্তা জানিয়েছেন, ” এর আগে রাজ্য আমাদের জানায়নি যে তারা রেলের করোনা আক্রান্তকে নেবেনা যে কারনেই আমরা পরিকাঠামো তৈরি করিনি। যা হল তা শুধুই দুর্ভাগ্যজনক নয় অনৈতিকও বটে।” বিষয়টি নিয়ে জল আরও ঘোলা হতে পারে কারন সাংসদ দিলীপ ঘোষ বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রকে চিঠি লিখতে পারেন এমনই ইঙ্গিত মিলেছে বিজেপির কথায়।