নিজস্ব সংবাদদাতা: ৪৮ ঘন্টা আগেই কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের যুগ্ম সচিব লব অগ্রবাল বলেছিলেন প্লাজমা থেরাপি এখনও প্রমানিত নয়, পরীক্ষার স্তরে আছে। বলা হয়েছিল করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর এমন কয়েকজন সুস্থ হয়ে উঠেছেন যাঁদের প্লাজমা থেরাপি করা হয়েছিল কিন্ত তাঁরা যে শুধুই প্লাজমা থেরাপির ফলেই ভালো হয়েছেন এমন প্রমান মেলেনি। অগ্রবাল বরং সতর্ক করে বলেছিলেন যে, এই থেরাপি প্রয়োগে ভুল হলে বিপদ হতে পারে। সেই সতর্কতার দুদিনের মাথায় মহারাষ্ট্রে প্রথম প্লাজমা থেরাপি প্রয়োগ করা ব্যক্তির মৃত্যু হল ।
২৯ এপ্রিল রাতেই মারা যান এই ৫৩ বছর বয়সী করোনা আক্রান্ত ওই ব্যক্তি। মহারাষ্ট্রের লীলাবতী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি।বিশ্বজোড়া করোনা আতঙ্কে সংক্রমিতদের সুস্থ করতে আশার আলো দেখিয়েছিল প্লাজমা থেরাপি। গোটা দেশে যখন করোনা প্রতিষেধকের টিকা নিয়ে চিকিৎসকদের কপালে চিন্তার ভাঁজ দীর্ঘ হচ্ছিল তখনই দিল্লির এক করোনা আক্রান্ত সুস্থ হয়ে ওঠেন প্লাজমা থেরাপির সাহায্যে। কিন্তু সেই পথ অনুসরণ করে মহারাষ্ট্রে করোনা আক্রান্ত এক ব্যক্তির উপর প্লাজমা থেরাপি প্রয়োগ করতে গেলে মারা যান তিনি।
হাসপাতালের তরফ থেকে জানান হয়, পরীক্ষনীয় পদ্ধতি হিসেবে ব্যক্তির শরীরে প্লাজমা থেরাপি ব্যবহার করা হয়। তবে প্রতিটি হাসপাতালেই যে করোনা আক্রান্তদের সুস্থ করতে এই থেরাপি ব্যবহার করা হয় তা নয়। কেবল মাত্র যে রাজ্যগুলিতে কেন্দ্রের তরফ থেকে অনুমতি মিলেছে সেখানেই এই থেরাপি ব্যবহার করা যাবে। সঠিকভাবে না চালালে অবশ্য থেরাপির খারাপ প্রভাব সম্পর্কে সতর্ক করে দিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার।
কয়েকদিন আগেই একটি সাংবাদিক বৈঠকে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল জানান, করোনায় সংক্রমিতদের উপর এই প্লাজমা থেরাপির ব্যবহার সত্যিই উৎসাহ জোগায়।
প্লাজমা থেরাপি ব্যবহার করে প্রথমে সুস্থ হয়ে ওঠেন কেরলের এক ব্যক্তি। সেই পথ অনুসরণ করে পরে দিল্লি ও তারপর বাংলায় করোনা আক্রান্ত সুস্থ হয়ে ওঠেন।
উল্লেখ্য এখনও অবধি মহারাষ্ট্র খুবই ভয়ানক অবস্থায় রয়েছে। শুক্রবার সকালে পাওয়া হিসেবে মহারাষ্ট্রে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১০,৪৯৮। মৃত্যু হয়েছে ৪৫৯ জনের। শুধুই মুম্বাইয়ে আক্রান্ত ৭০৬১, মৃত ২৯০। মুম্বাইয়ের পরেই রয়েছে পুনে যেখানে ১২৪৮ জন আক্রান্ত ও মৃত ৮৮। আর রাজ্যের তৃতীয় সর্বাধিক আক্রান্ত থানে জেলা , যেখানে ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে আর আক্রান্ত হয়েছেন ৯৪৩ জন। সব মিলিয়ে এখনও অবধি রাজ্যে করোনা মুক্ত হয়েছেন ১৭৭৩।
সারা বিশ্ব হন্যে হয়ে খুঁজছে করোনা মুক্তির উপায়। হয় নিরাময়ের ওষুধ অথবা প্রতিষেধক। কিন্তু এখনও অবধি উত্তর, না। এমতাবস্থায় প্লাজমা থেরাপিকে ঘিরে ক্ষীর হলেও আশার আলো দেখা যাচ্ছিল কিন্তু মহারাষ্ট্রের ওই ব্যক্তির মৃত্যু ফের প্রশ্নও তুলে দিল মারন ব্যাধি রুখতে মানুষের ক্ষমতা নিয়ে ।