নিজস্ব সংবাদদাতা: করোনা আর লকডাউনের মার থেকে যদিও বেঁচে ফেরা যায় প্রকৃতির হাত থেকে বাঁচা যাবে কিনা এই চিন্তায় রাতের ঘুম উড়ে গিয়েছে খড়গপুর মহকুমার একাধিক থানা এলাকার। গত কয়েকদিন ধরেই বৃষ্টিতো ছিলই তাঁর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে মঙ্গলবারের ব্যাপক শিলাবৃষ্টি ও ঝড় সঙ্গে হুড়মুড়িয়ে নামা বৃষ্টি কোমর ভেঙে দিয়েছে নারায়নগড়, সবং, দাঁতন, কেশিয়াড়ী সহ খড়গপুর মহকুমার একাধিক ব্লকের। হাজার হাজার টাকা ধার দেনা করে বউয়ের গহনা, ঘটি বাটি বন্ধক দেওয়া সাধের বোরো ধানের পাকা ছড়া দুমড়ে মুচড়ে দিয়েছে শিলাবৃষ্টি। আর যে টুকু অবশিষ্ট ছিল তা বুধবার সকালে ভাসতে দেখা গেছে জল থৈ থৈ মাঠে।
নারায়নগড় থানা এলাকার তৃণমূল নেতা বিমল ভূঁইয়া জানিয়েছেন, ” সপ্তাহ খানেক আগের বৃষ্টিতে ধানের কিছুটা ক্ষতি হয়েই ছিল কিন্তু মঙ্গলবারের শিলাবৃষ্টি ও ঝড় কার্যত শেষ করে দিয়ে গেছে ফসলের। লকডাউনের ক্ষতি তো ছিলই তার সঙ্গে এই ক্ষতির ধাক্কা কৃষক কাটিয়ে উঠতে পারবে কিনা সন্দেহ। জানি করোনা মোকাবিলায় সরকারের প্রচুর টাকা খরচ হচ্ছে তবুও আমরা সরকারের কাছে আবেদন জানাবো কৃষকদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য।”
নারায়নগড়ের কোনারপুর এলাকার পঞ্চায়েত সদস্য চন্দন দাস জানিয়েছেন, ‘বোরো ধান পাকা অবস্থায় মাঠেই ছিল। এবার ধান হয়েছিল ভালই। কিন্তু লকডাউন চলায় মাঠে ধান কাটার মেশিন বা মজুর নামানো যায়নি। ২০তারিখের পর যখন লকডাউন শিথিল হয়ে মানুষ পাকা ধান ঘরে তোলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন তখনই এই দুর্যোগ। বৃষ্টি আর ঝড়ে বিঘার পর বিঘা জমি শেষ হয়ে গেছে।
কেশিয়াড়ী থানা এলাকার গিলাগেড়িয়া, বড়ামারা, গোপালপুর, দাঁতন থানার বড়া, আঙ্গুয়া, খড়গপুরে বাড় গোকুলপুর, পলশা, পিংলার ধনেশ্বরপুর সর্বত্রই একই অবস্থা। ব্যপক ক্ষতির সম্মুখিন সবং, দাঁতন, মোহনপুরের পানচাষির দল। শয়ে শয়ে পানের বরজ ভেঙে পড়েছে নয় জলের তলায়। অন্যদিকে খড়গপুরের সবজি ভান্ডার বলে পরিচিত বড়কলা, গোকুলপুর, বরগাই, নানকার ইত্যাদি জায়গায় ভয়াবহ ক্ষতি হয়েছে সবজির।
বুধবারই খড়গপুর মহকুমার বিস্তীর্ণ অঞ্চল চষে বেড়িয়েছেন পশ্চিমমেদিনীপুর জেলার কৃষি কর্মাধ্যক্ষ রমাপ্রসাদ গিরি। নারায়নগড়, দাঁতন, কেশিয়াড়ী সহ বেশ কয়েকটি ব্লকে ক্ষয়ক্ষতির অবস্থা পরিদর্শন করেন তিনি। দ্য খড়গপুর পোষ্ট কে গিরি জানিয়েছেন, ”অবর্ননীয় ক্ষতি, এই সময়ে এত বড় ক্ষতি এর আগে দেখিনি। সারা জেলার কৃষি ও সবজি ভান্ডার মারাত্মক বিপর্যস্ত। আমরা ক্ষয়ক্ষতির পরিমান নির্ধারন করছি।”