নিজস্ব সংবাদদাতা: ঘূর্ণাবর্তটি সক্রিয় ছিলই , সোমবার থেকেই আকাশের মুখ ভার। সোমবার বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি হয়েছিল কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জায়গায়। মঙ্গলবারও সেই ছবি বদলাল না। এ দিন সকাল থেকেই মেঘ-রোদের খেলা চলছিল কিন্তু বেলা বাড়তেই বদলে গেল চিত্রটা। এদিন দেড়টা নাগাদ শুরু হওয়া ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি ও সংগে হাওয়ার দাপট খড়গপুর ও মেদিনীপুর শহরের তাপমাত্রা কমিয়ে দিল অনেকটাই। মজার ব্যাপার এই যে খড়গপুর শহরের সর্বত্রই বৃষ্টি হলেও শহরের দুই প্রান্তে বৃষ্টি হয়েছে ভিন্ন ভিন্ন সময়ে আধঘন্টা অন্তর।
একই সঙ্গে এদিন বজ্র-বিদ্যুৎ-সহ কয়েক পশলা বৃষ্টিও নামে দক্ষিণবঙ্গ ও উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলায়। সঙ্গে ছিল দমকা হাওয়াও। বুধবারও পরিস্থিতি একইরকম থাকবে বলে জানিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর। আবহাওয়া দপ্তর আরও বলছে মোটামুটি এই পরিস্থিতি বহাল থাকবে সপ্তাহ ভরই ।
আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে জানা গেছে বাংলাদেশ লাগোয়া এলাকায় তৈরি হয়েছে ঘূর্ণাবর্ত। আর তার জেরেই আবহাওয়ায় এই বদল। গ্রীষ্মের শুরু থেকে তাপমাত্রার পারদ ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপর উঠতে শুরু করেছিল। কিন্তু ঘূর্ণাবর্ত তাতে লাগাম পরিয়েছে। সোমবার থেকে বৃষ্টিতে খানিকটা নেমেছে তাপমাত্রা। গত ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ দিনের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আর ঐ ঘূর্ণাবর্তের জেরে মঙ্গলবার সারা দিনই দক্ষিণবঙ্গে বিক্ষিপ্ত বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে বলে আগেই জানিয়েছিল আলিপুর আবহাওয়া দফতর। এ দিন সকালে উত্তর দিনাজপুর ও সুন্দরবন এলাকায় বজ্র-বিদ্যুৎ-সহ কয়েক পশলা বৃষ্টি হয়। সঙ্গে ছিল ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়াও। আর সেই একই পরিস্থিতি দেখা দিল খড়গপুর ও মেদিনীপুর সহ সংলগ্ন এলাকায় একটু বেলার দিকে। খড়গপুরের দক্ষিন অংশে অর্থাৎ আইআইটি, প্রেমবাজার , তালবাগিচা, ডিভিসি, ঝাপেটাপুর, ছোট ট্যাংরায় ঝড় ও বৃষ্টি হয়েছে বেলা ২টা নাগাদ। আধঘন্টা স্থায়ী হয়ে সেই বৃষ্টির বেগ যখন স্থিমিত তখন বৃষ্টি শুরু হয় উত্তর প্রান্তের পুরোনো বাজার, ইন্দা, ট্রাফিক এলাকাতে।
এদিন কলকাতার সাথেই বৃষ্টি হয়েছে হুগলি, পূর্ব বর্ধমান, নদিয়া, মুর্শিদাবাদ, উত্তর ২৪ পরগনা ও দক্ষিণ ২৪ পরগনাতেও। মেদিনীপুর শহরেও বেলা আড়াইটা নাগাদ বৃষ্টি শুরু হয় যা প্রায় ১৫ মিনিট স্থায়ী হয়। তবে একবেলাতেই বৃষ্টি থেমে যাবে এমন ভাবার কোনও কারন নেই। আকাশে যথেষ্ট পরিমান জলভরা মেঘ রয়েছে তাই মাঝে মধ্যে আলো দেখা দিলেও দক্ষিণবঙ্গের ৬ থেকে ৭টি জেলায় এ দিন দফায় দফায় বৃষ্টি হবে বলে জানিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর।
আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, বিহার লাগোয়া উত্তরপ্রদেশের উপর একটি ঘূর্ণাবর্ত রয়েছে। এর ফলে বিপুল পরিমাণে জলীয় বাষ্প স্থলভাগে ঢুকছে। তার হাত ধরেই বিভিন্ন জায়গায় বজ্রগর্ভ মেঘ সঞ্চারিত হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে কোথাও কোথাও ভারী বৃষ্টিও হতে পারে।