Homeএখন খবরমেদিনীপুরে রক্ষী বিহীন ট্রেন থেকে চাল লুঠ বুভুক্ষু মানু্ষের , সামাল দিল...

মেদিনীপুরে রক্ষী বিহীন ট্রেন থেকে চাল লুঠ বুভুক্ষু মানু্ষের , সামাল দিল পুলিশ

নিজস্ব সংবাদদাতা: দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর লকডাউনের দিন। ত্রানের চালে পেট ভরে আর। সামনেই সারি সারি চালের বস্তা, ভাতের গন্ধ ম ম করে স্মৃতিতে। ওদিকে রেলের ৬ জওয়ান করোনা আক্রান্ত হওয়ায় মেদিনীপুর ষ্টেশনের কর্মরত সমস্ত রেল রক্ষী বাহিনী বা আরপিএফ কোয়ারেন্টাইনে। চোখের সামনেই চালের বস্তা প্রহরী হীন! লকডাউনে মানু্ষের খিদে সামাল দিতে এফসিআই এর চাল সরবরাহ ৷ প্রহরী বিহীন মেদিনীপুর ষ্টেশনে চালের রেক খোলা হতেই প্রকাশ্যে লুঠ শুরু করলেন স্থানীয় কিছু বাসিন্দা ৷ গোটা বিষয়টি চোখের সামনে দেখে রেল কর্মীরা দ্বারস্থ হলেন কোতোয়ালি থানার। পুলিশ এসে সামাল দিল বটে কিন্তু ততক্ষনে অনেকটাই চাল উধাও।

জানা গেছে দেশ জুড়ে লকডাউনের কারনে মানু্ষের ভাঁড়ারে খাদ্যের জোগান দিতেই রাজ্যগুলিতে বাড়তি চাল ডাল ইত্যাদি খাদ্যশষ্য সরবরাহ করছে ভারতীয় খাদ্য নিগম বা এফ.সি.আই। শনিবার এফসিআই এর চাল ভর্তি ট্রেন হাজির হয় মেদিনীপুর স্টেশনে ৷ স্টেশন সংলগ্ন একটি গুদামে তা তোলার কথা। পরে সেখান থেকে তা যাবে এফসিআই গুদামে যেখান থেকে রাজ্যের খাদ্য নিয়ন্ত্রক মারফৎ রেশন দোকান হয়ে তা যাবে জনতার কাছে। রবিবার সকাল থেকে সেই চাল নামানোর কাজ শুরু হয়েছিল ৷ তখনই ভীড় শুরু হয়ে যায় ষ্টেশন সংলগ্ন বস্তিবাসীদের৷ যার বেশিরভাগই ছিলেন মহিলা ৷ তারা বস্তা ,ঝুড়ি নিয়ে এসে ষ্টেশনের পাশে থাকা চাল ভর্তি ট্রেন থেকে চাল লুঠ শুরু করে ৷ ট্রেনের পাশে পড়ে থাকা চাল ঝাঁটিয়ে নেওয়া ছাড়াও আনলোড করার বস্তা থেকেও চাল খুলে নিচ্ছিল বলেন অভিযোগ ৷ আরপিএফ নেই দেখতে পেয়ে ভীড় শুরু হয়ে যায় বস্তিবাসীদের৷

এই ধরনের ঝাঁপিয়ে পড়া আগে দেখেনি বলেই জানান ষ্টেশনের দায়িত্বে থাকা সাইড ইনচার্জ বদ্রী নারায়ন৷ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনের বাইরে চলে যাচ্ছে দেখে তিনি কোতোয়ালি থানার পুলিশকে জানিয়ে কাজ বন্ধ করেন৷  থানার পুলিশ এলাকায় ঢুকতেই দৌড় শুরু করে দেয় ওই মহিলারা ৷ দুরে ঝোপে না হলে পাশাপাশি স্থানে লুকিয়ে পুলিশ যাওয়ার অপেক্ষা করতে থাকে ৷ অনেকে চাল ভর্তি ঝুড়ি ফেলেই লুকিয়ে পড়ে ৷ তবে কেউই একেবারে সরে যায় নি ৷ পরিস্থিতি দেখে দীর্ঘক্ষন কাজ বন্ধ রাখেন দায়ীত্বে থাকা আধিকারিকরা ৷   উল্লেখ্য, রেল ষ্টেশন সংলগ্ন ওই বসতিবাসীদের বেশিরভাগই লোকেরবাড়িতে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন ৷ লকডাউনে তাদের কাজও বন্ধ ৷ অভাবে কোনঠাসা হয়ে মরিয়া ওই বসতির বাসিন্দারা রেলরক্ষীহীন চাল দেখতে পেয়ে লুঠ শুরু করে, পুলিশ দেখতে পেয়েও তাই তারা একেবারে সরে যায় নি ৷পুলিশের সরার অপেক্ষায় ছিল অনেকেই ৷ পরিস্থিতি বুঝে সোমবার কোতোয়ালি থানার পুলিশ বাহিনীর উপস্থিতিতেই  ফের চাল নামানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

বস্তিবাসী জনতার অভিযোগ, তাঁদের কাজকর্ম একেবারেই বন্ধ। ত্রান আসে ছিটে ফোঁটা। রেশন জোটেনা সবার আর যা জোটে তা দিয়ে সপ্তাহভর চলেনা। দিনের পর দিন না খেতে পেয়ে দুর্দশার অন্ত নেই। তাই বাধ্য হয়েই তারা চাল সংগ্রহ করতে এসেছিলেন । তবে লুট নয়, গাড়ি থেকে নামানোর সময় পড়ে যাওয়া চালই তারা কুড়িয়ে নিচ্ছিলেন।

RELATED ARTICLES

Most Popular